শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় বরগুনার তরমুজ চাষিরা আতঙ্কে

ইফতেখার শাহীন, বরগুনা: গত চার দিনের শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বরগুনার তরমুজ চাষিরা। হঠাৎ শিলা বৃষ্টির কারণে তরমুজ ক্ষেতে অতিরিক্ত পানি জমে যাওয়ায় তরমুজ ও তরমুজ গাছ পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

আর এতে করে আতঙ্কিত ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার তরমুজ চাষিরা। তাদের স্বপ্ন হয়ত স্বপ্নই থেকে যাবে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে বরগুনা জেলায় ১১ হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৫ হাজার ৮৩৮ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে ।

কৃষকরা জানান, তরমুজ চাষ লাভজনক হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক কৃষকরাই অদম্য আগ্রহ নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে জেলার প্রায় ১৫ হাজার কৃষক পরিবার। তারা স্বপ্ন দেখেছিলেন এ মৌসূমে তরমুজ চাষে এবারে অনেক লাভবান হবেন। তাদেও স্বপ্ন যখন বাস্তবায়নের পথে ঠিক তখনই হঠাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগে সে স্বপ্ন আজ ভেঙ্গে যাওয়ার পথে।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ আর শিলা বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ নীচু এলাকার তরমুজ ক্ষেতে অতিরিক্ত পানি জমেছে। তাই কৃষকরা পানি নিষ্কাশনে ক্ষেতে বেড কেটেছেন। তবুও হতাশার ছাপ কৃষকদের চোখে মুখে।

বরগুনা সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের হেউলিবুনিয়া এলাকার কৃষক মো. মাসুদ বলেন, বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ এনে ব্যয়বহুল এ ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃষ্টির কারনে তা যদি শেষ হয়ে যায়, তাহলে ঋণী হয়ে আমাদের এলাকা ছাড়তে হবে।

আমতলীর চুনাখালী গ্রামের কৃষক আনসার মাতুব্বর বলেন, আমি প্রায় ২ হাজার একর জমিতে তরমুজ দিয়েছি। বৃষ্টির পানিতে ক্ষেত তলিয়ে গেছে। নিষ্কাশন করেও শেষ করতে পারছি না পানি। এ অবস্থায় আরও বৃষ্টি হলে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে। পথে বসতে হবে আমাদের তরমুজ চাষিদের ।

বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে যে পরিমান বৃষ্টি হয়েছে তাতে উল্লেখযোগ্য পরিমান ক্ষতি না হলেও পর্যায়ক্রমে আরও বৃষ্টি হলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে কৃষকরা। তাই, কৃষকদের ফসলের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কৃষি বিভাগ থেকে মাইকিং করে জমে থাকা পানি নিস্কাশন এবং পঁচন রোধের ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts