বন্যায় বান্দরবানে গণগ্রন্থাগার ডুবে ২৮ হাজার বই বিনষ্ট

চাইমং মারমা: বান্দরবানের গত ২-৮ আগস্টের টানা ও ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় প্লাবিত হয়েছে হাজার হাজার বাড়িঘর।সেই সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি গণগ্রন্থাগার ডুবে ২৮ হাজার বই বিনষ্ট হয়েছে। বই ছাড়াও কম্পিউটার, নথিপত্রসহ অসংখ্য জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ।এই কয়েকদিনের বন্যায় বান্দরবানে সরকারি গণগ্রন্থাগারের সব বই নষ্ট হয়ে গেছে।

বান্দরবান সরকারি গণগ্রন্থাগার গিয়ে দেখা যায়, গ্রন্থাগারের বারান্দায় বড় বড় বইয়ের স্তুপ পড়ে আছে। বইগুলোতে লেগে আছে কাদামাটি আর বন্যার পানি। ভবনের ভেতরে এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে অসংখ্য বই। দেয়ালজুড়েও কাদামাটি জমে আছে।

গ্রন্থাগারের আশেপাশের স্থানীয়রা জানান, গ্রন্থাগারের ছাদ পর্যন্ত পানিতে ডুবে ছিলো।পানির ঢল এত দ্রুত ঢুকে পড়বে কেউই বুঝতে পারেননি। অনেকেই বলছেন, জীবনে এত বড় বন্যা দেখেননি।বিল্ডিংয়ের দুইতলা ছুঁই ছুঁই পানি উঠেছে।বন্যায় গ্রন্থাগারের সব বই নষ্ট হয়ে গেছে।

বান্দরবানের স্থায়ী বাসিন্দা নেলসন ত্রিপুরা জানান, বন্যায় বইগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে খুব কষ্ট হয়েছে। এ কষ্ট প্রকাশ করা খুবই কঠিন। গণগ্রন্থাগারটি দ্রুত পাঠকদের জন্য উপযোগী করে তুলতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কমনা করেন তিনি।

গণগ্রন্থাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাশৈথুই চাকমা বলেন, গ্রন্থাগারে ২৮ হাজার বই ছিলো। অন্যান্য নথিপত্র মিলিয়ে ৩০ হাজারের অধিক বইপত্র ছিলো। আমরা রাতের মধ্যেই চেষ্টা করেছি বইগুলো নিরাপদ জায়গায় রাখতে। কিন্তু ঢল এত দ্রুত এমনভাবে ঢুকে পড়বে, বুঝতে পারিনি। বন্যায় সব বই বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রন্তাগারে ১৯৮৮ সাল থেকে পত্রিকা বাঁধাই করে সংরক্ষণ করা ছিলো এবং স্বাধীনতার ইতিহাস, গবেষণা, গণিত, রবীন্দ্র রচনাবলী, নজরুল রচনাবলী, উপন্যাসসহ ৩০ হাজারেরও বেশি বই, বিভিন্ন ধরনের অফিস নথি, মুক্তিযুদ্ধের দলিল, স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিল ছিলো।

বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনি জানান, জেলায় হাতেগোনা কয়েকটি স্কুল ছাড়া সব স্কুল কম বেশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত সঠিক ক্ষতি নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি। দুই এক দিনের মধ্যে এই তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts