ইফতেখার শাহীন, বরগুনা: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা বাংলাদেশ। এ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে অনেক উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক নিদর্শন। ৬৪ জেলার মধ্যে সর্ব দক্ষিণের জেলা বরগুনা। বাংলাদেশের যতগুলো দর্শনীয় স্থান রয়েছে তাদের মধ্যে স্মরনযোগ্য বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী সবুজ ছায়া ঘেরা এক দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত নিয়ে সোনাকাটা ইকোট্যুরিজম।
বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার টেংরাগিরি নামক স্থানে মনোরম পরিবেশে আচ্ছাদিত এই সৌন্দর্যের প্রতিক। এক মনমুগ্ধকর পরিবেশে দর্শনপ্রিয় মানুষকে হাতছানি দিয়ে যেন কাছে ডাকে সোনাকাটা ইকোট্যুরিজম টেংরাগিরি বনাঞ্চলের অভয়ারণ্য। দূর থেকে দেখলে মনে হয় শিল্পীর নিপুণ হাতে আঁকা ছবি। প্রকৃতি যেন অকৃপণ হয়ে উজাড় করে সৃষ্টি করেছেন এই শোভামন্ডিত সবুজ শ্যামলীমা।
বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সোনাকাটা ইউনিয়নের ৪৩ নং টেংরাগিরি মৌজায় অবস্থিত এই দর্শনীয় সোনাকাটা ইকোট্যুরিজম।বন বিভাগের তালতলী রেঞ্জের অধীনে সকিনা বিট ১৯ একর প্রাকৃতিক বনভূমি এবং ১০০০ একর বন বিভাগের বনায়ন দিয়ে সৃস্টি এই বিশাল বনভূমি।
বন বিভাগের দলিল পত্রে এ স্থানটির নাম টেংরাগিরি হলেও স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি ফাতরার বন নামে পরিচিত। মূলত: এই ফাতরার বন বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে ওঠা একটি চর। এই চরে অনেক হাঁস পড়ত বলে কেউ কেউ আবার হাঁসার চর বলেও জানেন।
প্রথমদিকে এই চর বৃক্ষ শূন্য থাকলেও প্রকৃতির ছোঁয়ায় দিন দিন বিভিন্ন প্রকার সবুজ বৃক্ষে ভরে যায়। বৃক্ষরাজির মধ্যে এখানে রয়েছে কেওড়া, বাইন, সুদরী, গেওয়া, হেতাল, করমচাসহ বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের সমারোহ।
পরবর্তীতে বন বিভাগের তত্তাবধানে এই চর বনাঞ্চলে পরিপূর্ণতা লাভ করে সৃস্টি হয় সোনাকাটা ইকোট্যুরিজম।
বন বিভাগের তথ্যমতে, সোনাকাটা ইকোট্যুরিজম টেংরাগিরি বনাঞ্চলের অভয়ারন্যে ৮টি হরিণ, ২৪টি শুকর, ৩টি কুমির, ৮টি চিতাবাঘ, ২টি অজগর এবং ২টি সজারু বনের নিজস্বতা বজায় রাখার জন্য সরকারের তরফ থেকে দেয়া হয়েছে।
এই মনমূগ্ধকর পরিবেশের সান্নিধ্যে আসতে হলে ভাল কোন যানবাহন নেই বললেই চলে। তাছাড়া রাত কাটাবার মত কোন ব্যবস্থা নেই, নেই কোন নিরাপত্তা।
তালতলী ফরেষ্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিক শোভামন্ডিত এই সম্পদকে সমৃদ্ধশালী ও আকর্ষণীয় করতে হলে দরকার এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিশ্রামাগার, টয়লেট, বাথরুম ও একটি পর্যটন কেন্দ্র এবং দর্শনার্থীদের পূর্ন নিরাপত্তা দিতে হলে জরুরী দরকার একটি ট্যুরিষ্ট পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা। এর পরিপূর্ণ ব্যবস্থা হলে শুধু এদেশ নয় বিদেশ থেকেও অনেক দর্শনার্থী এখানে আসতো। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তো সোনাকাটা ইকোট্যুরিজমের নাম।