দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
শপথ গ্রহণের পর থেকে তার এই নিয়োগ কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী’র প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বপালনের সময়সীমা ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু সে সময় সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন ছুটি থাকায়, গত ৩১ আগস্ট ছিল তার বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস।
এজন্য গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আট দিনের জন্য বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ড. মো আখলাকুল হোসাইন আহমেদ ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস, এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে জেলা বারের সনদপ্রাপ্ত হন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী ও ২০০৫ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৯ সালের ৩০ জুন হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে যোগ দেন ও ২০১১ সালের ৬ জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর একজন সদস্য হিসেবে ২০১২ সালের ২৫ মার্চ যোগদান করেন এবং ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর এই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ কর্মরত থাকাকালীন ১১টি মামলার রায় দেওয়া হয়। তিনি ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৯১ সালে হংকংয়ে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে সিঙ্গাপুরে আইন সম্মেলনে যোগদান করেন এবং বুয়েন্স আয়ার্স, আর্জেন্টিনায় আন্তর্জাতিক অপরাধবিষয়ক একটি কনফারেন্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
২০১৫ সালের আগস্ট মাসের শেষদিকে নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, তৎকালীন যুগোস্লোভিয়ার বিচারকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন।
“অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্র: একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য” এবং “বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ: একজন যুদ্ধশিশুর গল্প ও অন্যান্য” নামে দুটি গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি।