এলিনা চপলের (৩০) বাবা মারা যান সাত দিন আগে। বাবাকে শেষ বিদায় জানাতে ছোট্ট পাঁচ মাসের শিশু আরফান ইসলামকে নিয়ে যান রাজবাড়ী। কিন্তু এ যাত্রা ছিল এলিনার শেষ যাত্রা। বাবাকে দেখে ঢাকায় ফেরা হলো না তার। ট্রেনে থাকা ছোট ভাই মিঠু আর তার স্ত্রী ছোট্ট আরফানকে নিয়ে নেমে পড়তে পারলেও এলিনা বের হতে পারননি। বেনাপোল এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে ট্রেনে পুড়ে মারা গেছেন এলিনা।
শুক্রবার রাতে রাজধানীর গোপীবাগে এলিনার মরদেহের পাশে আহাজারি করছিলেন তার স্বজনরা। এলিনার স্বামীর বড় ভাই জাফরুল সাদিক সমকালকে জানান, ছোট ভাই সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন মিরপুরে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। গত সপ্তাহে তার শ্বশুর মারা গেলে স্ত্রী-সন্তানসহ রাজবাড়ীতে যান। দুইদিন পর সাজ্জাদ ঢাকায় ফিরলেও স্ত্রী-সন্তান রাজবাড়ীতে ছিল।
শুক্রবার দুপুরে রাজবাড়ী থেকে বেনোপোল এক্সপ্রেসের এসি ‘চ’ বগিতে করে এলিনা ইয়াসমিন, শিশু আরফান, এলিনার ছোট ভাই মিঠু আর তার স্ত্রী ফিরছিলেন। ট্রেনটি গেন্ডারিয়া স্টেশন পার হলে ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এলিনার কোলে থাকা আরফানকে ছোট ভাই মিঠু ও তার স্ত্রী নিয়ে বের হলেও এলিনা বের হতে পারেনি। ট্রেনের ভেতরে ঠেলাঠেলির মধ্যে পড়ে সেখানে আগুনে পুড়ে মারা যান।
জাফরুল সাদিক জানান, ছোট্ট আরফান এখন তার মামা মিঠুর ফার্মগেটের বাসায় আছে।
তিনি জানান, শিশুটি মায়ের দুধ ছাড়া আর কোনো কিছু খায় না। এখন মাকে না দেখে বাসায় যাওয়ার পর থেকে কান্না করছে। তিনি বলেন, মা এলিনার মরদেহ দেখে চেনার উপায় নেই। পুুলিশ বলছে পরে লাশ শনাক্ত করে দেওয়া হবে।