ইফতেখার শাহীন, বরগুনা : নামে গোল গাছ হলেও পাতা গোলাকার নয় লম্বা। সবুজ বর্ণের পাতা অনেকটা নারকেল গাছের পাতার মতো। বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার বেহালা গ্রামে এই গোল গাছের রস দিয়েই তৈরি হচ্ছে খাঁটি ও সু-স্বাদু গোলের গুড়।
অতীতে ঘরের ছাউনিসহ নানা কাজে গোলপাতার ব্যবহার জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে, ঠিক তেমনি গোল পাতার রস থেকে তৈরি গুড়ও ধরে রেখেছে তার ঐতিহ্য। এই গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তালতলীর বেহালা গ্রামের গোল চাষিরা।
সময়ের বিবর্তনে গোল পাতার ব্যবহার কমে আসলেও গোলের গুড়ের চাহিদা আর জনপ্রিয়তার যেনো কমতি নেই। নোনা জলের এই গাছেই মজুত থাকে সুমিষ্ট গাঢ় রস। সকাল থেকেই সংগ্রহ চলে গোলের রস। এই রস জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু গুড়। বেহালা গ্রামটিতে গোল গাছের সংখ্যা ১৫ হাজার। এরপর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গেন্ডামারা গ্রামসহ অন্যান্য কয়েকটা গ্রাম মিলিয়ে রয়েছে হাজার পাঁচেক গোল গাছ। পৌষ থেকে ফাল্গুন এই তিন মাস গোলের রস আহরণ করে গুড় তৈরি করেন বেহালা গ্রামের গোল চাষীরা।
বেহালা গ্রামের বাসিন্দা পরিমল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, পৌষ মাস এলেই গোল গাছের ফল থেকে যে কান্ড বের হয় সেটির মাথা ধারালো দা দিয়ে কাটা হয়, আর কাঁটা অংশ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় নিসৃত রস প্লাষ্টিক বা মাটির পাত্রে সংগ্রহ করা হয়। তিন থেকে চার ঘণ্টা জাল দিলে এই রস গুড়ে পরিণত হয়। এই গুড় বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৮০ থেকে ২’শ টাকায়। গোলের গুড় খাঁটি ও সুস্বাদু হওয়ায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, গোলের গুড় অত্যন্ত সুস্বাদু এবং দেশে এর ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে গোল চাষীদের পরামর্শ দেয়াসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হয়।