ধামরাইয়ে সমাধি থেকে ৩ নারীর খুলি উধাও!

ধামরাই প্রতিনিধি : ঢাকার ধামরাইয়ে সমাধি থেকে এক পরিবারের তিন নারীর মাথার খুলি চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পরিবারটির দাবি, রাতের আঁধারে স্থানীয় একটি চক্র মাটি খুঁড়ে তিনটি মাথার খুলি তুলে নিয়ে গেছে।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) ভোরের দিকে সমাধিস্থ হওয়া ৩ নারীর পরিবার বিষয়টি জানতে পারেন।

ঘটনাটি ঘটেছে ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের বাড়িগাঁও এলাকায়। ওই পরিবারের লোকজন জানায়, সেখানে বাড়িগাঁও এলাকার নারায়ণ চন্দ্র সরকারের পরিবারের ৩ নারীর সমাধি দেওয়া হয়েছিল। এরমধ্যে নারায়ণ চন্দ্রর মা একাদশী রানী ১৯৮৮ সালে মারা যান। আর নারায়ণ চন্দ্রর স্ত্রী ২০১৪ সালে ও বড় মেয়ে মায়া রানী সরকার ২০১৫ সালে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে ফসলের ক্ষেতের মাঝখানে একটি ঝোপের মতো জায়গায় তিন নারীর সমাধি রয়েছে। ওই সমাধিগুলোতেই গভীর গর্ত করা হয়েছে। তবে কবে বা কখন এগুলো তুলে নেওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি। পরিবারের ধারণা, গত ১২ এপ্রিল স্থানীয় একটি উৎসবে যোগ দিয়ে মাদকাসক্তরা এটি ঘটিয়ে থাকতে পারে।

নারায়ণ চন্দ্র সরকার বলেন, আমার চাষের জমির এক কোনায় আমার মা, স্ত্রী ও মেয়ের সমাধি রয়েছে। রোববার পাশের জমিতে কাজ করতে যাওয়া কয়েকজন সমাধির মাটি খোঁড়ার তথ্য জানায়। সোমবার সকালে আমার ছেলে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ সেখানে গিয়ে মাথা তুলে নেওয়ার বিষয়টি দেখতে পায়।

নিজের পরিবারের ৩ নারীর মাথার খুলি উধাও কাণ্ডে ভেঙে পড়েছেন ৮৯ বছর বয়সী এই ব্যক্তি। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ওরা সমাধিতে গর্ত করেনি, আমার বুকে গর্ত করেছে। আমি নিয়মিত সেখানে যেতাম। এখন তাদের মাথাটাই সেখানে রইলো না।

এ বৃদ্ধের সন্দেহ স্থানীয় কয়েকজনই ওই মাথার খুলি তোলার সঙ্গে জড়িত। এরমধ্যে বাড়িগাঁও রাধা-গোবিন্দ দুর্গা মন্দিরের ক্যাশিয়ার রঞ্জিত মণ্ডলকেও সন্দেহ করা হচ্ছে। রঞ্জিত মণ্ডল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তারাও এ কাণ্ডে জড়িতদের খুঁজছেন। তার অভিযোগ, স্থানীয়ভাবে বিরোধ তৈরি করতেই এমন অভিযোগ করা হচ্ছে।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মাথার খুলি সরানোর তথ্য নিশ্চিত করে কুল্লা ইউনিয়নের বাড়িগাঁও ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মহর আলী বলেন, আমি সেখানে গিয়েছিলাম। বিষয়টি দেখেছি। দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছি। আর সবার উদ্দেশ্যে বলেছি যেই কাজটি করুক না কেনো, সে যাতে নিজেই মাথাটি আবারও সমাধিতে রেখে আসে।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পাভেল মোল্লা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উপরস্থ কর্মকর্তাও বিষয়টি অবগত রয়েছেন। অভিযোগ পেলে বিষয়টিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Print Friendly

Related Posts