ইফতেখার শাহীন, বরগুনা : উপকূলীয় বরগুনা জেলা দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হওয়া স্বত্বেও এখানে নেই কোন সুইমিং পুল। যার ফলে এ এলাকার শিশু, কিশোররা সাঁতার শিখতে পারছেনা বলে অনেকেই সাঁতার জানেনা। এ কারণে নদীবেষ্টিত এ এলাকায় শিশু কিশোরদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয়। প্রতি বছর বেশ কিছু শিশু, কিশোর সাতাঁর না জানার কারণে পুকুরে, নদীতে, খালে, বিলে পড়ে অকালেই প্রাণ হারায়।
নিজ উদ্যোগে ও বিনা পারিশ্রমিকে বরগুনা শহরের এলজিইডি ভবনের একটি পুকুরে প্রায় ২৫ জন শিশু ও কিশোরকে সাঁতার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বরগুনা জেলা কারাগারের জেল সুপার আমজাদ হোসেন ডন।
তিনি জাতীয় পর্যায়ে ১৯৮৩ সালে সাঁতারে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৮৪ সালে জাতীয় পর্যায়ে রৌপ্য পদক পান। জাতীয় সাইক্লিং এ ২০০৫ সালে স্বর্ণ পদক পান। তিনি ২০২২ সালে জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কার লাভ করেন। তার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ জেল ক্রীড়া ক্ষেত্রে ৭ টি ইভেন্টে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্মান বয়ে এনেছে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশন, বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বর্তমানে তার তত্বাবধানে সাতাঁর শিখতে আসা শিশু সালমান, নাহিয়ান, মইউক, মনিষা, আদিত্য, অর্ক, মুয়াজ প্রিন্স, পবন, আদি, রাজিন। এরা প্রতিদিন ১ ঘন্টা করে সাঁতার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
মনিসা জানান, আমি আগে সাঁতার জানতাম না, স্যার আমাকে সাঁতার শিখিয়েছেন।
মইউক বলেন, কয়েকদিন হয় সাঁতার শিখতে এসেছি এখন আমি সাঁতার কাটতে পারি, এজন্য আমি খুবই আনন্দিত।
এবিষয়ে, অভিভাবক হাফিজা নুপুর বলেন, বরগুনায় শিশুদের সাঁতার শেখার জন্য কোন সুইমিং পুল নেই। এখানে সাঁতার শেখানো হচ্ছে জেনে আমি আমার সন্তান সালমান (৮) কে নিয়ে এসেছি, ও এখন সাঁতার কাটতে পারে বলে আমি খুব খুশী।
এবিষয়ে বরগুনা জেলা কারাগারের জেল সুপার আমজাদ হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি সাঁতারের প্রতি আগ্রহী ছিলাম। সাঁতার শিখুন, জীবন বাঁচান এই শ্লোগানকে আমি কাজে লাগাতে চাই।
তিনি আরো বলেন, বরগুনায় কোন সুইমিং পুল নেই, সরকারি অথবা বেসরকারি পর্যায়ে, জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে এই জেলা শহরে একটি সুইমিং পুল জরুরি প্রয়োজন।