তিন মাস পর বড়পুকুরিয়ার কয়লা উত্তোলন শুরু

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ প্রায় তিন মাস পর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির নতুন স্তর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে খনির ১৩১৪ নম্বর স্তর থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। গতকাল বিকাল পর্যন্ত ৬২৯ টন কয়লা উত্তোলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমান। দুয়েকদিন পর দৈনিক ১২০০ থেকে ১৫০০ টন কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে জ্বালানি সংকটে বন্ধ হয়ে যাওয়া দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এক সপ্তাহের মধ্যে চালু করার চেষ্টা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। প্রয়োজনীয় কয়লা খনির ইয়ার্ডে মজুদ হলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বিপিডিবির সদস্য (উৎপাদন) প্রকৌশলী সাইদ আহমেদ।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ১২১০ নম্বর স্তরে মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় গত জুনের শুরু থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। গত মাস থেকে নতুন কূপ থেকে কয়লা উত্তোলন শুরুর কথা ছিল। কিন্তু শ্রমিক আন্দোলন এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রাখা ১ লাখ ৪৬ হাজার টন কয়লা খনির ইয়ার্ড থেকে গায়েব হওয়ার জেরে সৃষ্ট প্রশাসনিক অস্থিরতায় তা এক মাস পিছিয়ে যায়। ফলে কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে যায় দেশের একমাত্র তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। এতে বিদ্যুতের সংকটে পড়ে বৃহত্তর দিনাজপুর-রংপুর অঞ্চলের আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকরা।

উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে দ্রুত কয়লা উত্তোলন ও বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর জন্য খনিতে নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চাপ দেয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ। তিন মাস পর গত শুক্রবার রাতে ১৩১৪ নম্বর কোল ফেস থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়।

প্রসঙ্গত, দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে বর্তমানে তিনটি ইউনিট রয়েছে। ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ তিনটি ইউনিট একযোগে চালু করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দৈনিক সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হয়। সম্প্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মজুদ রাখা ১ লাখ ৪৬ হাজার টন কয়লা খনির ইয়ার্ড থেকে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানি সচিবসহ চার কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে জ্বালানি বিভাগ। বরখাস্ত হওয়া চার কর্মকর্তাসহ মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে কয়লা চুরি ও দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করে খনি কর্তৃপক্ষ। মামলাটি বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অধীনে তদন্ত চলছে।

Print Friendly

Related Posts