নৌকার প্রার্থী গাজীপুরে জাহাঙ্গীর খুলনায় খালেক

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থী নির্ধারণে আগ্রহী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার শেষ করেছে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দুই সিটিতে নৌকা প্রতীকের আগ্রহী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু হয়।

রাত পৌনে ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গাজীপুরে নৌকার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও খুলনায় তালুকদার আবদুল খালেককে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে দুই সিটিতে ধানের শীষ প্রতীকের আগ্রহী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। প্রথমেই সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হয় খুলনা সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে আগ্রহী প্রার্থীদের। এরপর সাক্ষাতকার দিয়েছেন গাজীপুরের আগ্রহীরা। সাক্ষাৎকার শেষে গতকাল প্রার্থী চূড়ান্ত করা হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা করা হয়নি। তবে দলীয় সূত্রে জানা যায়, পুরানো প্রার্র্থীদের প্রতিই আস্থা রেখেছে বিএনপি। সেক্ষেত্রে গাজীপুরে বর্তমান মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান ও খুলনায় মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনিই ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাচ্ছেন। তবে, কারারুদ্ধ দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অনুমতি পাওয়ার পরই দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীতদের নাম প্রকাশ করবে।

গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে গত শনিবার বিকাল পর্যন্ত মোট ১৭ জন নৌকার আগ্রহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। শুক্রবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল, মতিউর রহমান, সুমন আহমেদ শান্ত বাবু, কাজী আলিমউদ্দিন, আব্দুর রউফ নয়ন, ওয়াজউদ্দিন মিয়া। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ফরম সংগ্রহ করেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলাম।

খুলনা সিটিতে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক, মহানগর সহসভাপতি কাজী এনায়েত হোসেন, শেখ সৈয়দ আলী, এমডিএ বাবুল রানা, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক এ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান পপলু, সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস এবং প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ সালাউদ্দীন জুয়েল ও শেখ সোহেলের নাম পাঠানো হয় কেন্দ্রে। এদের বাইরে গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আবদুস সালাম মুর্শেদী ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মিজানুর রহমানের খুলনা সিটির মেয়র প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন ছিল।

দুই সিটিতে মেয়র পদে নির্বাচন করতে বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন ১০জন আগ্রহী। এদের মধ্যে গাজীপুরে ৭ জন ও খুলনায় ৩ জন। সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়ার শুরুতেই খুলনা বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৩ জনকে ডাকা হয়। এরপর সন্ধ্যা ৭টা থেকে গাজীপুরের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডাকা হয়। গাজীপুরে ৭ নেতা থাকলেও সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হয়েছিলেন ৬ জন। দেশের বাইরে থাকায় একজন উপস্থিত হতে পারেননি।

বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেন। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতির চেয়ারটি ফাঁকা ছিল।

খুলনা সিটিতে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা হলেন বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে আগ্রহী প্রার্থীরা হলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুর সিটির বর্তমান মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসানউদ্দিন সরকার, শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, মেয়র মান্নানের ছেলে এম মনজুরুল করীম, গাজীপুর জেলা বিএনপি নেতা শওকত হোসেন সরকার, আবদুস সালাম ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শরাফত হোসেন।

Print Friendly

Related Posts