মুহাম্মদ মূসা, জাবি : মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি রক্ষার্থে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত ভাস্কর্য ‘অমর একুশ’-এর মূল নকশা অনুযায়ী নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্থাপনের দীর্ঘ ২৭ বছর পর মূল নকশার বাস্তবায়ন শেষে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম এর উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনকালে ভিসি বলেন, ‘একুশ আমাদের আবেগের বিষয়। আমরা গর্বের সাথে একুশের চেতনা লালন করি।’ এ সময় তিনি ‘অমর একুশ’-এর ভাস্কর শিল্পী চৌধুরী জাহানারা পারভীনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘শিল্পী তাঁর মায়া, মমতা ও স্নেহ দিয়ে মূল নকশা অনুযায়ী ভাস্কর্যটি সম্পন্ন করেছেন। তাঁর অবদানই তাকে আমাদের মাঝে অমর করে রাখবে।’ উদ্বোধন শেষে এর পাদদেশে তিনি একটি পলাশ ফুল গাছ রোপন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হক ভাস্কর্যটির নির্মাণ ইতিহাস তুলে ধরেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ, প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন, রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক সহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় শিল্পী চৌধুরী জাহানারা পারভীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে শিল্পী ভাস্কর্যটির অবয়ব অপরিবর্তনীয় রাখার আহ্বান জানান।
শিল্পীর বক্তব্য অনুযায়ী ভাস্কর্যটির অভিব্যক্তি হলো- ভাস্কর্যের মধ্যখানে একজন মহিলার প্রতীক একুশের ভাষা আন্দোলনে পুরুষের সাথে নারীদের ত্যাগের স্মৃতি বহন করছে। উপরের দিকে তাকিয়ে থাকা নারী প্রতিকৃতি সন্তান বা ভাই হারানোর শোকে দুঃখিত নারীদের সাহসের অভিব্যক্তি। এছাড়া ভাস্কর্যটির ৬ সিড়ি ৬ দফাসহ আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তি আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের ৬টি সালের স্মারক। ভাস্কর্যটির পাদদেশে পলাশ ফুলের গাছ বাংলার ঋতু বৈচিত্রে পলাশ ফুল ফুটিয়ে একুশের আগমণকে জানান দেয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য ড. কাজী সালেহ আহমেদ এ ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন। সেই সময়ে এটি মূল নকশা অনুযায়ী সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। বিগত সময়গুলোতে ভাস্কর্যটির বিভিন্ন অংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ধ্বংসের মুখে পরলে গতবছর এর সংস্কার ও পূর্ণাঙ্গকরণ কাজ শুরু হয়।