হাথুরুসিংহের চেয়ারে স্টিভ রোডস

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের চেয়ারে দুবছরের দায়িত্ব নিয়ে আগামী ২০ জুন থেকে বসছেন স্টিভ রোডস। আগামী ২০ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দিন দলের সাথে যোগ দেবেন সদ্য নিযুক্ত স্টিভ রোডস।

এই দুবছরে দুটি বড় আসর- ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০২০ টি-২০ বিশ্বকাপ। গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলা বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিয়ে উত্তপ্ত এই চেয়ারটা আরো উত্তাপ ছড়াবে গগনচুম্বী প্রত্যাশার চাপ। সেই চাপ নিতে প্রস্তুত রোডস।

জানালেন মাশরাফি-সাকিবদের নিয়ে নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা।

গত কয়েকদিন থেকে প্রধান কোচ হিসেবে রোডসের দায়িত্ব নেওয়ার গুঞ্জন চলছিল। গত বৃহস্পতিবার রোডস বাংলাদেশে আসার পর তা আনুষ্ঠানিক রূপ পায়। বাংলাদেশের দায়িত্ব পাওয়ার পরই উচ্ছাসিত ব্রিটিশ কোচ রোডস শুনিয়েছেন বড় স্বপ্নের কথা। ইংলিশ কন্ডিশনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দারুণ করার রেশ ধরে রাখতে চান সামনের বিশ্বকাপে। ইংলিশ কন্ডিশনে আরেকটি দুর্দান্ত টুর্নামেন্টের ছবি এখনি ভাসছে তার চোখে।

দলের দায়িত্ব পেয়ে প্রথমেই জানিয়েছেন নিজের উচ্চাশা, ‘প্রথমত, সবাইকে বলতে চাই বাংলাদেশের ক্রিকেটে যুক্ত হতে পেরে আমি কতটা গর্বিত। এটা দারুণ এক ক্রিকেট জাতি। বাংলাদেশ দল অভাবনীয় সমর্থন পায় এখানে। হতাশ করলে তা আকার নেয় সবাই স্ফুলিঙ্গের মতো। ব্যক্তিগতভাবে এই বড় ভূমিকা সুযোগ পেয়ে নিজেকে অসম্ভব সম্মানীত বোধ করছি।’

কাউন্টি দল উস্টারশায়ারের দায়িত্ব পালন করা এই কোচ খেলোয়াড়ি জীবন অবশ্য বর্ণাঢ্য নয়। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ১১ টেস্ট আর ৯ ওয়ানডে। খেলোয়াড়ি জীবনে নামডাক না থাকলেও কোচ হিসেবে রোডস অভিজ্ঞ। সাকিব আল হাসান উস্টারশায়ারে খেলার সময় সেখানকার ক্রিকেট ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরের আগে কাজ করেছেন নিজ দেশের জাতীয় দলের হয়ে।

চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দায়িত্ব ছাড়ার পর প্রায় ৮ মাস প্রধান কোচ নেই বাংলাদেশের। কিছুটা অগোছালো অবস্থায় থাকা বাংলাদেশ দলকে সাজানোর চ্যালেঞ্জের রোডসের সামনে।

২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত তার সঙ্গে চুক্তি করেছে বিসিবি। এর আগে আছে ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ইংল্যান্ডে হতে যাওয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট ঘিরে ভীষণ আশাবাদী তিনি, ‘বিসিবি প্রধানকেও আমি বলছিলাম যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ খুব ভালো করেছে। প্রমাণ করেছে ইংলিশ কন্ডিশনে তারা ভাল খেলতে জানে। ওই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে যাওয়া সত্যি দারুণ অর্জন। আমরা যদি সে পর্যায়ে আবার যেতে পারি বা তারচেয়ে এগুতে পারি… আমি এখন ভাবতে পারি বাংলাদেশ ফাইনাল গেলে কি দারুণ ব্যাপার হবে। এটা দুর্দান্ত একটা টুর্নামেন্ট হতে পারে।’

এই বন্ধুর পথ চলতে পাশে থাকার ঘোষনা দিয়েছে বিসিবিও। প্রধান কোচ হিসেবে রোডসকে নিয়োগ দিয়েই বোর্ড প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, আগের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মতোই স্বাধীনতা পাবেন রোডস। পাবেন সুযোগ সুবিধাও।

বিসিবি সূত্র নিশ্চিত করেছে, রোডসের বেতন হাথুরুর সমান হচ্ছে না। লঙ্কান কোচ মাসে পেতেন ২৫ হাজার ৮০০ ডলার, টাকায় যেটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার। বছরে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ। রোডস বেতন পাবেন হাথুরুর চেয়ে ২০-৩০ শতাংশ কম। তার মানে বাংলাদেশের নতুন ইংলিশ কোচ মাসে পেতে যাচ্ছেন ১৫-১৭ লাখ, বছরে প্রায় ২ কোটি টাকা।

বাংলাদেশে আসা বিদেশি কোচিং স্টাফদের থাকার ব্যবস্থা দুই রকম। কেউ গুলশান-বনানীতে ফ্ল্যাট নিয়ে থাকেন, কেউ আবার হোটেলে থাকেন। তারা যেখানেই থাকুন, ভাড়াটা বিসিবিই দিয়ে থাকে। রোডসের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হবে না। উস্টারশায়ারের এই কোচ বিশ্বমানের ইনস্যুরেন্স পাবেন, যেটি বিশ্বের বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় কিংবা কোচ পেয়ে থাকেন। চালকসহ ২৪ ঘণ্টা গাড়ি থাকবে তাঁর জন্য। শুধু নিজেই নন, কোচের পরিবারের জন্য থাকবে ভ্রমণভাতা। সঙ্গে যোগ হবে বোনাস। সাধারণত বোনাস তো আছেই, থাকবে সফর, ম্যাচ, পারফরম্যান্স বোনাসও।

কখনো কখনো সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাকর্মীও থাকবে, তবে সেটি নির্ভর করছে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর।

Print Friendly

Related Posts