টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রোহিঙ্গা নারীসহ নিহত ৩

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবি ও পুলিশের সাথে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রোহিঙ্গা এক নারীসহ তিন জন নিহত হয়েছেন। রবিবার ভোরে বন্দুকযুদ্ধের এসব ঘটনা ঘটে। বন্দুকযুদ্ধে এই প্রথম কোন নারী ইয়াবা কারবারি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটলো।

নিহতরা হলেন, মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মংডু রাম্বীবিল এলাকার বদরুল ইসলামের স্ত্রী রুমানা আক্তার (২০),হ্নীলা ইউনিয়নের আলী আকবরপাড়ার মিয়া হোসনের ছেলে মাহামুদুর রহমান (২৮) ও হোয়াইক্ষ্যং নয়াপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আফছার (২৫)।

নিহত রুমানা আক্তার (২০) মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মংডু রাম্বীবিল এলাকার বদরুল ইসলামের স্ত্রী। তিনি বর্তমানে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক নং-সি/৬ এর ৪০ নম্বর রুমে বাস করতেন। এ ঠিকানা তার ভ্যানিটি ব্যাগে পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে বিজিবি।

টেকনাফ ২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার জানান, রবিবার ভোররাতে টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া ওমরখাল নাফনদ এলাকায় নিয়মিত টহলে যায় বিজিবির সদস্যরা। এসময় কিছু লোক মিয়ানমার থেকে ওমরখাল পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশে করছে দেখে তাদের থামার জন্য সংকেত দেয়া হয়। বিজিবির সংকেত অমান্য করে তারা উল্টো বিজিবির টহলদলের উপর অতর্কিতভাবে গুলি বর্ষণ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। এতে বিজিবি টহলদলের এক সদস্য আহত হন। এ সময় আত্মরক্ষার্থে বিজিবি টহলদল কৌশলগত অবস্থান নিয়ে পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। উভয় পক্ষে প্রায় ১০-১৫ মিনিট গুলি বিনিময় চলে।

তিনি আরো জানান, একপর্যায়ে অস্ত্রধারী চোরাকারবারীরা গুলি করতে করতে খালের কিনারা দিয়ে পালিয়ে যায়। গুলির শব্দ থামার পর ভোরের আলোতে টহলদলের সদস্যরা এলাকা তল্লাশি করে এক নারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নৌকার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে। পরে স্থানীয়রা তাকে রোহিঙ্গা নারী বলে সনাক্ত করে। এসময় ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও ৩ টি লোহার ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়। পরে ভ্যানিটি ব্যাগে তার পরিচয় পত্রটি পাওয়া যায়। তিনি টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক নং-সি/৬ এর ৪০ নম্বর রুমে বাস করতেন।

মরদেহটি টেকনাফ থানার মাধ্যমে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বিজিবির ওই কর্মকর্তা।

অপরদিকে টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইয়াবা কারবারি মাহামুদুর রহমান ও মোহাম্মদ আফছার নামে দুই যুবক নিহত হন। রবিবার ভোররাতে উপজেলার মৌলভীবাজার এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের এ ঘটনা ঘটে।বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের এক এসআইসহ তিন সদস্য আহত হন বলে দাবি করেছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, এস আই দীপক বিশ্বাস, এএসআই আমির ও কনস্টেবল শরিফুল। ঘটনা স্থল হতে ৬টিএলজি, ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও ১৮টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয় বলেও উল্লেখ করেন ওসি।

ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে টেকনাফ উপজেলার মৌলভীবাজার এলাকায় গেলে ইয়াবাকারবারিরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুঁড়ে। আত্মরক্ষায় পুলিশও প্রায় ৫০ রাউন্ড গুলি চালায়। বেশ কিছুক্ষণ গুলি চালানোর পর ইয়াবা কারবারিরা পিছু হঠলে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ দুইটি দেহ পাওয়া যায়। ভোররাতে তাদের টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক কক্সবাজার রেফার করেন। পরে সেখানে নেওয়া হলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

মরদেহ দুইটি কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় পৃথক মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি।

এর আগে শনিবার ভোররাতেও বন্দুকযুদ্ধে হোসেন নামে আরেক ইয়াবা কারবারি ও ডাকাত নিহত হন।

Print Friendly

Related Posts