১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর উপকূলীয় এলাকায় ঘটেছে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছাস। সেই ভয়াল কালো রাতে উপকূলীয় হাতিয়া, রামগতি, চর আব্দুল্লাহ, সন্দীপ, ঢালচর, চর জব্বার, তজুমুদ্দিন, চর কচ্ছপিয়া, চর পাতিলা, কুকরী কুমড়ী, মনপুরা, চরফ্যাশন, দৌলতখাঁন, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছাস তেড়ে আসে।
তখন ছিল রমজান মাস। সরকারী হিসাবে প্রায় ৫ লক্ষ এবং বেসরকারী হিসাবে প্রায় ১০ লক্ষ আদম সন্তান স্রোতের টানে নদী-সমুদ্র গর্ভে-তীরে-ঢালে, ডালে-জলে-ঝোপে, চরে প্রাণ হারায়। একই সঙ্গে প্রাকৃতিক থাবায় কোটি কোটি টাকার পশু, মৎস্য, ফসল, রাস্তা, কালভার্ট, বাড়ী ঘর, স্কুল প্রতিষ্ঠান সম্পদ ধবংস হয়ে যায়। দেশী বিদেশী প্রচার মাধ্যমে এই ধবংসযজ্ঞের বর্ণনা ছিল ‘মানুষের মৃতদেহগুলি কচুরী পানার ঝোপের মত সমুদ্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে।’
প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম এম সানাউল্লাহ্ নূরী’র সত্তরের প্রলয়-ভয়াল গোর্কি লিখায় যেভাবে ফুটে উঠা ধ্বংসের কথা:
“১৯৭০ সালের ঘূণিঝড় ও গোর্কি হলো কার্তিক মাসের ২৮ তারিখে অর্থাৎ বারোই নভেম্বর। ঢাকায় একদিন আগে ঠান্ডা দমকা হাওয়া আর বৃষ্টির আলামত দেখেই বুঝে ছিলাম, আমাদের রামগতি, হাতিয়া এবং উপকূল অঞ্চলে কি ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে এসেছে। আমি তখন দৈনিক বাংলায় (সাবেক দৈনিক পাকিস্তান ) সিনিয়র সহকারী সম্পাদক হিসাবে কাজ করছিলাম। তখনকার প্রাদেশিক কৃষি দফতরে উচ্চপদস্থ অফিসার জনাব আবদুর রব চৌধুরী সিএসপি এবং রামগতির বর্তমান এমপি কে পরদিন টেলিফোন করলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমাকে বললেনঃ চলুন আমরা দুজনে একসঙ্গে গিয়ে রামগতির অবস্থা দেখে আসি ।
সকাল ৮ টায় দিকে ঢাকা থেকে রাওয়ানা হয়ে সোজাসুজি আমরা রামগতি বাজারের নিকটবর্তী চর এলাকায় পৌছালাম। সেখানে স্তুপীকৃত লাশ এবং মৃত গবাদি পশুর যে হাল দেখলাম তা ভাষায় অবর্ণনীয়। রামগতি বাজারের একজন শৌখিণ ফটোগ্রাফার আমাকে ফুলের মতো ফুটফুটে চারটি শিশুর ছবি দিয়েছিলেন। সেটি আমি ছেপেছি দৈনিক বাংলায়। আবদুর রব চৌধুরী ঢাকার সাথে যোগাযোগ করে দুর্গত অঞ্চলের জন্য রিলিফ কমিশনারের জন্য দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আমি আমার পত্রিকার বিশেষ সংবাদদাতার দায়িত্ব নিয়ে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের থেকে একটানা কয়েকদিন ধরে ঢাকায় দৈনিক বাংলার জন্য রিপোর্ট পাঠাচ্ছিলাম। এতে কাগজের প্রচার সংখ্যা ত্রিশ হাজার থেকে একলাখে উঠেছিলো। চট্টগ্রামে সে সময় এক টাকা দামের কাগজ পাঁচ-ছ টাকা বিক্রি হচ্ছিলো।
আমরা চর বাদাম, চর সীতা এবং চর জব্বরে ধান ক্ষেতগুলোকে নাকে মুখে লোনা পানি লেপ্টানো হাজার হাজার লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখেছি। সাগরে ভাসতে দেখেছি অসংখ্য লাশ। রামগতি, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, ভোলা এবং পটুয়াখালী পরিণত হয়েছিলো ধ্বংসস্তুপে। একটি গাছের ৩০ ফুট উঁচু মাথায় অসহায় দুর্গত কুকুরকে দেখেছি হাহাকার করতে। কোথাও পানি উঠেছে ৪০ ফুট ওপরে। গোটা উপকূল অঞ্চলে প্রায় অর্ধকোটি লোক মৃত্যু বরণ করেছে। ১২৮৩ সনের গোর্কির চেয়ে বহুগুণে করুণ এবং ভয়াবহ ছিলো ’৭০ সালের গোর্কি। এর ধ্বংসলীলা তো আমরা নিজের চোখেই দেখেছি। সারা দুনিয়ায় সংবাদপত্রের প্রধান সংবাদ হয়েছিলো এই প্রলয় ভয়াল দুযোর্গের খবর।”
৭০-এর বন্যায় রামগতি উপজেলার চর আব্দুল্লাহ ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মৎসজীবি অধ্যুষিত সারা ইউনিয়ন প্রায় নারী-শিশু শূন্য হয়ে পড়ে। তারা আর এ মানুষ খেকো নদীর পাড়ে থাকতে চান না। ভীতসন্ত্রস্ত, আবার কখন হানা দেয়। চর আব্দুল্লাহর বাসিন্দা ইয়াসিন ভূঁঞা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের সহকারী সচিব গর্ভনর হাউজে চাকরিরত। তার বাবা-দাদীসহ বাড়ির প্রায় সবাই ভেসে গেছেন পানির তোড়ে। হাজী আলী হোসেনের ষোড়শী মেয়ে ঢেউয়ের টানে কিভাবে হাত থেকে ছিটকে চলে গেল ইত্যাদি হাজারো বীভৎস বাস্তবতা। চর কোলাকোপা এলাকায় সিএসপি আবদুর রব চৌধুরীর ২২ জন আত্মীয়-স্বজন জলোচ্ছাসের কালো রাতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে, তারা আর দিনের আলো দেখলো না। এ ধরনের হাজারো করুন নির্মম কাহিনী গাথাঁ ১৯৭০-এর ১২ নভেম্বর।
১২ই নভেম্বরের ধবংস এবং মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তিতে বিজয়ের উদ্যমতায় ধবংস স্তুুপের পাশাপাশি শুরু হলো ত্রাণ, পুণর্বাসন, উন্নয়ন তথা ‘মুক্তির’ বাংলাদেশ বিনির্মানে ‘সৃষ্টি’র পালা। প্রেরণা ছিল ‘ধবংস থেকে সৃষ্টি’। শ্লোগান ছিল- ‘ভিখারীর হাত হোক- কর্মীর হাতিয়ার’। সংগঠন ছিল দ্বিস্তর বিশিষ্ট কুমিল্লা মডেলের সেল্ফ জেনারেটিং সমবায় সমিতি। সেখানে উৎপাদন করা হয়েছে আলু, চিনাবাদাম, সোয়াবিন, ভূট্টা, যব, গম, ফুলকপি-বাঁধাকপি, লেটুস, লাইন চাষে ইরি। প্রয়োগ করা হয়েছে উচ্চ ফলনশীল বীজ। চাষের পশু গরু, মহিষ নিশ্চিহ্ণ হয়েছিল, তাই ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত চাষ পদ্বতির ট্রাক্টর, লো লিফট পাম্প, থ্রেসার, নিরানী ইত্যাদি। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের মানচিত্রে রামগতি-লক্ষ্মীপুর আজ কোটি-কোটি টাকা আয়কারী ‘সোয়াবিন জেলা লক্ষ্মীপুর’ নামে পরিচিত।
জলোচ্ছাসে বেঁচে থাকা অসহায়, মুক্তিযুদ্ধে তিগ্রস্থ, নদী ভাঙ্গা, বেড়ী বাঁধের বাইরে থাকা সর্বোচ্চ তিগ্রস্থ চর আবদুল্ল্যাবাসীদেরকে নিয়ে চর আলেকজান্ডার এলাকায় পাইলট আকারে ২০০ পরিবার নিয়ে দেশে প্রথম গুচ্ছগ্রাম ‘বিশ্বগ্রাম’ স্থাপিত হয়। বিশ্বগ্রামের প্রথম ধারনা প্রয়াত হাজী আলী হোসেনই দিয়েছিলেন। জীবনের ও ধ্বংসের অভিজ্ঞতার বিনিময়ে। তখন ‘গুচ্ছগ্রাম’ নামের জন্ম হয়নি। ‘কলোনি’ নামে শুরু হয়েছিল। কথাবার্তা, পরিকল্পনা হয়েছিল এ সব বিষয়ে। কোথায় এত লোকের জমি হবে, ঘরভিটা উঁচুর জন্য মাটি কাটা, পুকুর খনন ইত্যাদি কিভাবে হবে? কে দিবে, কে করবে- জমি কোথায় পাবে ইত্যাদি শত প্রশ্ন। এর পরও আন্দোলন থেমে যায়নি। সরকারের তৎকালীন ভুমি সংস্কার কমিশনের সাথে যোগাযোগ ও দেন-দরবার করে একই থানায় চর বাদাম ইউনিয়নে পোড়াগাছা গ্রামে সরকারিভাবে প্রথম ‘গুচ্ছগ্রাম’ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তিতে মুক্তিযুদ্ধ শেষে ’৭২ সালে রামগতির পোড়াগাছায় সরকারীভাবে বিশ্বগ্রাম অভিজ্ঞতায় ‘গুচ্ছগ্রাম’ প্রতিষ্ঠা হয়।
নোয়াখালীর ভাটির টেক চরকে ১২ নভেম্বর ও নদী ভাঙ্গাদের পুর্ণবাসনের জন্য ২৬ মার্চ ১৯৭১ এ স্বাধীনতা ঘোষণা শুনে ঐ দিনে সৃষ্টির স্মারক হিসেবে তাৎণিক ভাবে ‘স্বাধীন গ্রাম’ ঘোষনা করলেন মুক্তিপাগল সাবেক এক আমলা। যা পরবর্তিতে ঠিকানা-আদর্শ গ্রাম- আশ্রায়ন নামে সারাদেশে স্থাপিত হয়েছে ও স্থাপন চলছে। । দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে প্রথম যেখানে বাঁধ তৈরীর জন্য স্বহস্তে কোদাল দিয়ে মাটি কাটার উদ্ভোধন করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৩ কি ১৪ জানুয়ারি ১৯৭২।
এই ভাঙ্গাগড়ার বন্যা-জলোচ্ছাস এলাকাকে বর্তমান হাসিনা সরকার আজ ৪৫ বছর পরে মেঘনা নদীর ভাঙ্গন থেকে উপকূলীয় রামগতি উপজেলা রক্ষায় প্রায় দুইশত কোটি টাকা বরাদ্দ করে সেনাবাহিনীকে দিয়ে ব্লক বাঁধ নির্মানের কাজ বাস্তবায়ন করছে। যা অত্র এলাকার মানুষদের ৭০ এর মৃতদের প্রাণের বিনিময়ে পরবর্তী যে ভাবে বঙ্গবন্ধু বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন ঠিক সেরকম ভাবেই এখন আবার স্থানীয়দের নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
এ অঞ্চলে নদী ভাঙ্গা মানুষদের মন ভাঙ্গা অবশ্যই নয় বরং তাদেরও আছে গর্ব করার অনেক কিছু। তাদের কৃষ্টি কালচার বিশ্বজোড়া। বিশেষ করে বৃহত্তর নোয়াখালী বাসী তাদের স্বাধীনতার ঐতিহ্য ও মুক্তির চেতনা ধরে রাখতে আরো এগিয়ে যাওয়ার আন্দোলনে নেমেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে নিজভুমি বাংলাদেশে প্রত্যাবতর্নের অব্যব্হতি পর ১৪ জানুয়ারী ’৭২ এ প্রথম চর-গ্রামে সভামঞ্চের স্মৃতি বিজড়িত নোয়াখালীর রামগতির ‘শেখের কিল্লা’ স্থানটি আজো কালের সাক্ষী হয়ে আছে। যে স্থানটিতে রামগতি সমবায়ের ও মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে স্থাপিত গুচ্ছগ্রাম, দেশগড়ার ডাক ও পুর্নবাসন কল্পে এই পোড়াগাছায় বঙ্গবন্ধু নিজে কোদাল ঝুড়ি নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক বাধাঁর কাজ উদ্বোধন করেন। যা আজ এক আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পরিনত হয়েছে।
সেদিনের বঙ্গবন্ধুর চরগ্রাঁম উপকূলে প্রথম পদচিহ্নিত স্থানে নোয়খালী বিভাগ স্থাপন আজ তাই ঐতিহাসিক ভাবেই গ্রহনযোগ্য। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস-চিত্র না ধরে রাখলে, নদীমাতৃক দেশের বিশাল উথাল-পাতাল পানি-ভূমি, নদী সৈকত, মহিষ (দই), হরিণ, ইলিশ, সোয়াবিন, শেখের কিল্লা, মুক্তিযুদ্ধকালীন বেলুনিয়া সীমান্ত করিডোর, ভাটিরটেকের স্বাধীনগ্রাম, প্রথম গুচ্ছগ্রাম-বিশ্বগ্রামকে দেশবাসী তথা পর্যটকরা বিজয়ের শক্তি স্তম্ভের কথা জানবে কি করে? বরং ইতিহাস বিকৃতিকারীরা সুযোগ নিবে, জাতির পিতার ইতিহাসকে উল্টো ভাবে বুঝাতে।
ঘুরে দাড়াবার ‘অপরিহার্য’তার সুত্র ধরে চরাঞ্চলীয় নদী ভাঙ্গন প্রাকৃতিক দূর্যোগ কবলিত উপকূলীয় বিশেষ করে রামগতির মাটি থেকে উৎসারিত বেসরকারী সংস্থা ‘র্ডপ’ কর্তৃক অনুশীলনকৃত ‘মাতৃত্বকালীন ভাতা’ এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসন, জীবীকায়ন সঞ্চয়সহ ‘স্বপ্ন প্যাকেজ’ কার্যক্রম সারা দেশে শুধু দৃষ্টান্তই নয়, বরং সরকার মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করছে। পাশাপাশি, দূর্যোগ আক্রান্ত এলাকা নদী ভাঙ্গন উপকূলীয় অসহায়দের পূর্ণবাসন কল্পে নির্মিত আশ্রয় কেন্দ্রেরমত বহুতল বিশিষ্ট নিরাপদ বসতিসহ আয়মূলক কর্মসূচী গ্রহণ সরকারের পরিকল্পনা কমিশন থেকেও ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
৭০’র বন্যায় দশ লাখ মানব সন্তানের সলিল সমাধি সহায়ক সম্বলিত ভাগীদার ’৭১ এর রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ নর-নারীর আত্মার শান্তির পথ রচনায় রাজনীতিক বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর দূর দৃষ্টি সম্পন্ন দৃঢ় নেতৃত্বের সুফল আজকের বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বেসরকারীভাবে গড়ে উঠা ত্রাণ পুনর্বাসন নিয়ে শুরু করা সমবায়-স্বনির্ভরতার জন্য র্ডপ, বর্তমান এনজিও নামে খ্যাত গনস্বাস্থ্য কেন্দ্র, হেলপ (?) ব্রাক, সিসিডিবি, কারিতাস, আরডিআরএস, গণ উন্নয়ন প্রচেষ্টাসহ গুটি কয়েক বেসরকারী কল্যাণ মূখী উদ্যোগ আজ বিশাল মহীরূপে শুধু দেশে নয় বিদেশেও দৃষ্টান্তমূলক অংশীদারী উন্নয়ন প্রক্রিয়ার গতিশীলতায় প্রভাবশালী দাবীদার। যার স্রোতে হাজার উর্দ্ধে বেসরকারী দেশীয় এনজিও আজ সগর্বে গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সারা দেশে অব্যহত গতিতে সরকারের সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি নেদারল্যান্ডস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফরে ব-দ্বীপ-ডেল্টা প্লানের আওতায় ৭০’র সেই বিব্ধস্ত উপকূলীয় এলাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক কার্যক্রমকে দীর্ঘ ২০ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলেই দুর্যোগ, দুর্বিপাকে আত্মত্যাগে বলিয়ান ১২ নভেম্বর বার-বার আর ধবংসের বার্তা নিয়ে আসবে না বরং সৃষ্টির উম্মাদনা নিয়ে আসবে। আর সেই উম্মাদনার শক্তিতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ প্রতিবার-প্রতি বছর। এদিনে প্রয়োজন সরকার-অসরকার ধন-মনের বৈষম্য কমিয়ে গরীবের অংশীদারী বিনির্মান করে সাম্যতা ও ন্যায্যতা সৃষ্টি করা। তাহলেই ৭০’র বন্যায় মৃতরা ও একাত্তরের জান দেয়া বীরেরা আত্মার শান্তি পাবে।
রয়েল ডিষ্ট্রিক আজ আবার গর্জে উঠেছে। তাই সরকারের কাছে যৌক্তিক দাবী ৭০’র নভেম্বর বিভিষিকাময় রাতে যেমন লাখ লাখ মানব সন্তান ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল তেমনি ২০১৫ নভেম্বরে সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য গনমিছিল ও মানববন্ধন মাধ্যমে নোয়াখালী বিভাগ বির্নিমানে নোয়াখাইল্লারা আজ বদ্ধপরিকর। নিজেদের কৃষিকালচারে গৌরবে সমৃদ্বিতে নোয়াখালী বলীয়ান হাত চায়। আল্লাহ সহায় হউক।
লেখক: গুসি আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ও প্রতিষ্ঠাতা, ডরপ।
ইমেইল: nouman@dorpbd.org