ঈদুল ফিতর ২০১৬ বিশেষ সংখ্যা [] ঈদুল ফিতর ২০১৬ বিশেষ সংখ্যা [] ঈদুল ফিতর ২০১৬ বিশেষ সংখ্যা [] ঈদুল ফিতর ২০১৬ বিশেষ সংখ্যা [] ঈদুল ফিতর ২০১৬ বিশেষ সংখ্যা [] ঈদুল ফিতর ২০১৬ বিশেষ সংখ্যা [] ঈদুল ফিতর ২০১৬ বিশেষ সংখ্যা [] ঈদুল ফিতর ২০১৬ বিশেষ সংখ্যা [] ঈদুল ফিতর ২০১৬ বিশেষ সংখ্যা []
অনুপ্রভা
গোলাম কিবরিয়া পিনু
অনুপ্রভা তোমার কি দহনক্ষমতা
এখনও আছে? গাছে তোমার কী পুষ্প?
আগুন লাগানো অগ্নিপাত্র
ধরেছিলে কাছে! পাছে পুড়ি—ভয় ছিল!
ছাই-ভস্ম হয়ে খাক হব
হইনি তখনো! এখনো জ্বলছি তোমার উনুনে!
এখনো বিদ্যুৎবাহী তুমি? বাজপড়েও—
কিবা বজ্রপাতে—রাতে পুড়ে ছাই হওনি?
ইলেকট্রিক-শক নিয়েও আমি আছি
দূরে-ভগ্নস্তূপে। কূপে পড়ে নিবু নই।
বিদ্যুল্লতায় আবারও
সামনের শীতে। নিতে চায় দ্যাখো
বিদ্যুতের পরিবাহী প্রাণ।
বুনো বাসনা এবং
সালাম সাকলাইন
আজ খর-তাপে পোড়া রাতে
তোমার মুখের আদলে
পুর্ণিমা চাঁদ উঠে আকাশে
বুনো ঘাসের ছোট একটা নীল ফুল
অপরূপা হয়ে উঠে তোমার পরশে
পোড়া রাতের চাঁদের আলো মেখে
ইলিশ এবং নারীর গন্ধ
অভীন্ন লালসা ছড়ায়
দূরের বাঁশি শুনে রাতের রাধারানী
উড়নি ফেলে কী এক মোহে ছুটে চলে
আজ সব কিছু একাকার
বুনো বাসনার উদগ্র আবেগে।
ব্লাক ফ্রাইডে : ডেডলাইন গুলশান
শেখ নজরুল
এই শোকের কোনো ভাষা নেই, নীরবে এসেছি সমব্যথী হতে
এই শোক ছড়িয়ে গেছে সারাবাংলায়
এই শোক দাঁড়িয়ে আছে ঘরের দরজায়!
এই শোক মিশে আছে শার্টে, প্যান্টে, গেঞ্জিতে
এই শোক স্থির-শাড়িতে, কামিজে, চুলের বেণীতে
এই শোক ছড়িয়ে গেছে রাতের ঘুমন্ত চোখে
ভোরের স্নান, দুপুরের বৃষ্টি-ভরে আছে এই শোকে!
দোয়েল শোর্কাত, শাপলা স্তম্ভিত, বাতাস ব্যথিত
ভাষাহীন কষ্টের গন্ধে ভরে আছে, কাঁঠালের বন
লাল-সবুজ প্রিয় পতাকায় বাজে-দুঃখের কঙ্কন
রয়েল বেঙ্গল টাইগার বসে আছে, আনত চোখে
মায়াবি হরিণের চোখ ভিজে যায়, এই শোকে!
এই শোক ছড়িয়ে গেছে ভোরের আজানে
এই শোক হেলে পড়েছে মিনারের গায়
এই শোক উপুড় হয়ে আছে, জায়নামাজের টানে
এই শোক কপাল ছুঁয়েছে বিনম্র সেজদায়!
এই শোক ছড়িয়ে গেছে-পুবে-পশ্চিমে, উত্তর দক্ষিণে
এই শোক নীরবে দাঁড়িয়ে আছে, আমাদের গৃহকোণে
নদীরা শোকার্ত, বৃক্ষ বিষণ্ন, পাখিরা ঘুমহীন
আকাশ জুড়ে মুহুর্মুহু বেজে ওঠে, মেঘের ভায়োলিন
আমার সোনার বাংলা বাজে কম্পিত কণ্ঠের সুরে
এই শোকের স্রোত বঙ্গোপসাগর থেকে বয়ে গেছে বহুদূরে!
এই শোকের কোনো ভাষা নেই, নীরবে এসেছি সমব্যথী হতে
এই শোক যখন ছড়িয়ে গেছে-প্রিয় মানচিত্রের প্রতি ইঞ্চিতে!
অপার সম্ভাবনায় স্বদেশ অামার
কায়সার আহমেদ দুলাল
অপার সম্ভাবনায় স্বদেশ অামার
স্বাধীনতার সূর্য গেছে ঢেকে
মেঘের অাড়ালে স্বার্থপরতার খপ্পরে;
অমানিশার ঘোর অন্ধকারে
দূর্নীতির অক্টোপাসে গ্রাসিত স্বদেশ
স্বাধীন জমিন হয়েছে জবর দখল।
বাঙালি হেটেছে অনেক পথ
বায়ান্ন থেকে একাত্তর
অবিরাম তার চলা;
পথ হারা পাখির দিশেহারা অাঁখি
মানবতা ভূলুন্ঠিত বারবার।
ইতিহাস বিকৃতির চমৎকর অায়োজন
রাজনৈতিক জিঘাংসায় ক্ষত বিক্ষত পথ
সুবিধাবাদীদের অদ্ভূত অট্টহাসি;
স্বাধীনতার চেতনাবোধ হয়েছে শ্লথ মন্থর
রাজনৈতিক দূর্বৃত্তায়নে প্রসারিত নখর
অনেক গভীরে গ্রথিত দূর্নীতির শিকড়।
রাজনৈতিক মঞ্চে দেশাত্ববোধের উলংগ প্রকাশ
নেতৃত্বের নৈতিকতা মুখোশে ঢাকা
দূর্নীতির রাহুগ্রাসে ঔষ্ঠাগত জাতি;
দেয়ালে ঠেকেছে পীঠ বারবার
পরিবর্তনের শ্লোগান তৃণ মূল জনতার।
এভাবে অার নয়, হতে হবে জয়
এসেছে জোয়ার, কেটে গেছে মেঘ
অকুতভয় নেতার অবিরাম চলায়;
মুক্তির নি:শ্বাস দিশেহারা জাতির
নতুন অভিযানে, নতুন প্রত্যাশায়।
অনাচার অবিচার অাবর্জনার অাস্তরন
ইতিহাসের অাগুন দিয়েছে পুড়িয়ে
উদ্ভাসিত অালোয়ে সত্যের অাগমন;
এগিয়ে চলেছে স্বদেশ–
নতুন চেতনায়, অপার সম্ভাবনায়।
স্বপ্নাচ্ছন্ন ঠোঁটজলাশয়
চঞ্চলা চঞ্চু
আকাশি পর্বতের চূড়ায়, মনের তীক্ষ্ণ ধারে দাগ কেটে কেটে -সেলফোনে ঠোঁট রেখে , বৃষ্টি ফোঁটার মতো- চুমুর প্লাবনে, বালির কণায় কণায়, ধরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম- জীবনমুখী শ্যাওলার প্রলেপ কিন্তু না ! তুমি ভয় পেলে ! বললে, “কেউ আড়ি পেতে শুনছে সাতরঙে আচ্ছাদিত সুর !”
তবে কি আমাদের জন্য আমরা , আকাশে বাতাসে ওড়াবো না- অন্তঃপুরের অনাদি সৌরভ?
তুমি টলমল শোক হয়ে, ক্লান্ত শান্ত দীর্ঘশ্বাসের মতো মিলিয়ে গেলে নীরবতার অতলে । টুকরো টুকরো করে দিলে,ফুসফুসের অপার্থিব স্বপ্নঘোর । আবারও নিশ্চিতভাবে জেনে নিলাম,
পেছনে এখনও নিজেরই ছায়া আর সামনে- দাঁত শানানো নেকড়ের সঙ্গে নোংরা নেড়ি কুকুরের
অশোভন নজরদারি । আমাদের দুঃখ রাঙানো
একান্ত আড়াল- এভাবে অমান্য হতে থাকলে, একদিন প্রকাশ্যেই হৃদয়ে নিবিড় হবে হৃদয় , শুকনো ঠোঁটগুলো আদবকায়দা মাড়িয়ে, স্পর্ধিত সাঁতারের সঙ্গীত হবে; অনায়াসে ঠিক নেমে পড়বে – স্বপ্বাচ্ছন্ন ঠোঁটজলাশয়ের অগ্নিগর্ভে ।
রূপোর সিঁকি চাঁদ
শাহ মতিন টিপু
রূপোর সিঁকি ঝিঁকিমিকি এক যে ছিল চাঁদ
হাতে হাতে চলা ফেরা তার ছিল অবাধ।
অরূপ রূপের চাঁদকে সবাই করতো চুমোচুমি
কল্পলোকে ঘুরতে যেতো চাঁদের মরুভূমি।
জোছনা জলে কাটতো সাঁতার স্বপ্নপাখা মেলে
চাঁদের দেশটা আসতো ঘুরে একটু সুযোগ পেলে।
সে চাঁদটি থাকে এখন যোজন যোজন দূর
মনের কাঁচে নেই ছায়া তার তেমন সুমধুর।
ঝিকিমিকি জোছনা ঢেলে আজো সে চাঁদ ডাকে
জলতরঙ্গে রূপের ঝলক ছড়ায় নদীর বাঁকে।
বিরাণ রাতের নিরবতায় জেগে থেকে একা
কষ্ট নিয়ে ঘরে ফেরে হায় কি ভাগ্যলেখা!
ইঁটপাথর কংক্রিটে মানুষ পড়ছে বাঁধা যতো
হারিয়ে যাচ্ছে চাঁদও ততো রূপোর সিকির মতো।
আত্মকথন
কাজী রিয়াজুল ইসলাম
জানা নেই আছে কি বসন্তের কোনো পৃথক সঙ্গীত,
এসময় হৃদয়ের জমিন কি উর্বর হয়,
শক্ত কি হয় ঘুণে খাওয়া ভালোবাসার ভিত
কিংবা রঙিন জলে ভরে যায় মনের শূন্য জলাশয়?
সেই কবে থেকে তোমাকে প্রায়শঃ দিয়ে যাই ফুল,
তবে কখনো কোনো বসন্তে ভিন্ন নয়নে দেখে
ভুলেও তোমার খোঁপায় বসেনি আমার বাসনার অলিকুল,
নাচিনি হৃদয়ের রঙ্গালয়ে মুখে কৃত্রিম হাসির আবীর মেখে।
বসন্তে বৃক্ষ-লতা সাজবে পুষ্প-পল্লবে এতো প্রকৃতির ব্রত,
কিন্তু তাই বলে মানবমনের সৌরজগতে সহসাই জাগে
ভালোবাসার রঙিন পৃথিবী, ভুলে যাবো সব দুঃখের ক্ষত-
শাশ্বতিক জীবনের যুক্তি-দর্শনে কেমন যেন বেমানান লাগে।
আমাদের বসন্ত প্রবাহমান প্রতিক্ষণ- নেই কোনো দাঁড়ি-কমা,
তোমার মাঝে খুঁজে পাই ঋতুরাজ চিরবসন্ত প্রিয়তমা প্রিয়তমা।
সুলতান সুলেমান
শাহরিয়ার সোহেল
ফেটে পড়ছে হ্রদ-হৃদয় তোমার
তৃষ্ণার্ত মরুভূমি সাইমুম হাহাকার
অটোমান সাম্রাজ্যের দশম ধারা
সাহসিকতা, মহানুভবতা,ন্যায়-পরায়ণতা
বদন্যতা ও শক্তিমানতায় ঐশ্বর্যের সম্ভার
পনেরো’শ বিশ থেকে পনেরো’শ ষেষট্টি
ছেঁচল্লিশ বছরের বীরত্বেগাঁথা রাজত্বকাল
হাঙ্গেরি, আফ্রিকার অংশ
দানিউব থেকে বুদাপেস্ট
টাইগ্রিস থেকে বাগদাদ
ক্রিমিয়া থেকে নীলনদ
বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র
মহান কবি ও নৃপতি অধিক
শ্বেতসাগর, কৃষ্ণসাগর, রুমেনিয়া
আনাতোলিয়া, কারামানিয়া, রুম ভূ-খণ্ড
জুলকাদ্রিয়া, দিয়ার বেকির, কুর্দিস্তান
আজেরবাইজান, পারস্য, দামাস্কাস
আলেপ্পো, কায়রো, মক্কা, মদিনা
জেরুজালেম, সারা আরব, ইয়ামান
ও অন্যান্য বহু দেশের বিজয়ী নৃপতি
ধরা পড়ে গেলে তুমি সোনালি চুল
আর সবুজাভ-নীল চোখের অধিকারী
দাসী হুররামের গভীর ভালবাসায়
দাসী থেকে মহাসাম্রাজ্যের মহারাণী
ভুলে গেলে সব চোখের চাহণীতে
অপূর্ণ হয়ে গেল-সব কিছু অতি তুচ্ছ
পূর্ণ হলো হুররামের গভীর ভালবাসায়
মরে যেতে চাও হুররামের গ্রীবায় রেখে মাথা
অধিক শান্তিময় শীতল মরণ
স্বর্গ সমান সে শান্তি অবিরত
মহাসাম্রাজ্যের মহাকবি নৃপতি
গভীর কবিত্বময় ভালবাসায়
তুমি যে অম্লান সুলতান সুলেমান…