ধুর, রোনাল্ডো! >তিন গোল দেব, বললেন হুগো

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ইউরোর ফাইনালে রোববার মাঠে নামছে ফ্রান্স-পর্তুগাল। গ্রিজম্যান-মায়ায় ফ্রান্স এখন এতটাই আচ্ছন্ন যে, ওয়েলসের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে পর্তুগিজ নায়কের দুর্ধর্ষ প্রত্যাবর্তন মৃদু কম্পনও তুলতে পারছে না। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে এঁরা কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই আনছেন না! বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে তাঁর প্রতি ‘সম্মান’-এর যা নমুনা পাওয়া গেল, তাকে দু’টো শব্দে মিটিয়ে ফেলা যায়— ‘‘ধুর, রোনাল্ডো!’’

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ধ্বংস করলে নিজেদের পৃথিবীর অধীশ্বর মনে হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু তা বলে ‘‘ধুর রোনাল্ডো!’’ অধুনা ফুটবল-বিশ্বের সম্রাট না হলেও যুবরাজ তো বটেই তিনি। একত্রিশ বছর বয়স হলেও গোলের সামনে যাঁর স্পটজাম্প বা নাক্‌ল বল ফ্রি-কিক গোলকিপারের হৃদযন্ত্র সাময়িক স্তব্ধ করে দেয়, তাঁকে এমন খোলাখুলি যুদ্ধের আহ্বান?

প্রশ্নটা তুলতে ওঁরা এ বার রোনাল্ডোর পুরস্কারকে চ্যালেঞ্জ করে বসলেন! হুগো বললেন, “তিন গোল দেব। ধরে নিন পর্তুগালকে আমরা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। ফাইনালটা নেহাত খেলতে হবে বলে খেলব।” বন্ধুর কথা শুনে ভ্যালেন্তাইন এ বার জুড়ে দেন, “রোনাল্ডোকে বলছি, তুমি পুরস্কার দেখাও। প্রমাণ করো ভাগ্য-টাগ্য কিছুই নয়, তুমিই একাই যা করার করছো। এত বড় প্লেয়ার তো তুমি, দেশকে বড় মঞ্চ পর্যন্ত নিয়ে এসেছো। এ বার ফ্রান্সকে হারিয়ে দেখাও!” তত ক্ষণে আশপাশ থেকে কয়েক জন এগিয়ে এসেছেন। হাতে একটা অদ্ভুত মুদ্রা করছেন ওঁরা। এটা নাকি ধ্বংসের চিহ্ন। সঙ্গে স্লোগান— ‘ধ্বংস হবে রোনাল্ডো!’

পুরো দোষও তো দেওয়া যায় না। ফরাসি কাগজ ‘লে কিপ’ শনিবার গ্রিজম্যান-পোগবাদের জার্মান-বধের ছবি ছেপে লিখেছে: ‘চ্যাম্পিয়নের মতো’। ওই ‘মতো’টা রেখেই খুব সূক্ষ্ম ভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, রবিবার কারা স্তাদ দ্য ফ্রঁস কাঁপাতে যাচ্ছে। ফুটবলাররাও আবেগে উন্মাদপ্রায়। পঁয়ত্রিশ বছরের ‘বুড়ো’ ডিফেন্ডার প্যাট্রিস এভ্রা বলে ফেলেছেন, “সতীর্থরা দেখছি আমায় কাঁদিয়েই ছাড়বে। আমি আজ পর্যন্ত কোনও বড় ট্রফি ফ্রান্সের হয়ে জিতিনি। কিন্তু এ বার মনে হচ্ছে হয়ে যাবে।”

অধিনায়ক হুগো লরিসের মন বলছে, ফাইনালে তাঁদের হারানো খুব কঠিন হবে। গ্রিজম্যান গোটা দেশকে একটু ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করেছেন। আসলে বলেছেন, উত্সব জমিয়ে রাখতে! “এটা আমাদের সবার জয়। ১০ জুলাইয়ের জন্য এখন অপেক্ষা করছি আমরা,” বলেছেন গ্রিজম্যান। ভাবলে কেমন লাগে! চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের মতো মঞ্চে পেনাল্টি মিস করেছিলেন গ্রিজম্যান। ম্যানুয়েল ন্যয়ারকে উল্টো দিকে ছিটকে দেওয়া এক পেনাল্টিতেই আজ তিনি আজ মহানায়ক। আর কোচ দিদিয়ের দেশঁ? তাঁর কাছেও এটা স্বপ্নের মুহূর্ত, গর্বের রাত। বলেছেন, “প্লেয়াররা নিজেরাই নিজেদের ইতিহাসে পৌঁছে দিল। ফ্রান্সের মাঠে এমন জয়… এই অনুভূতি ভাষায় বোঝানো যাবে না!”

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts