বিডিমেট্রোনিউজ ॥ আইন করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না কোচিং বাণিজ্য। রাজধানীতেই নামকরা স্কুলের শিক্ষকরা বাসা ভাড়া নিয়ে গড়ে তুলেছেন কোচিং সেন্টার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্লাসে পাঠদানে শিক্ষকদের অবহেলা আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান নেমে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ঝুঁকছে কোচিংয়ের দিকে। এই সমস্যার রাতারাতি সমাধান সম্ভব নয় উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী পরামর্শ দিলেন শিক্ষকদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনার।
রাজধানীর একটি স্কুলের একজন শিক্ষকের একটি বাসায় কথা বলতে চাইলে বন্ধ করে দেয় দরজা। কৌশলে প্রধান ফটক পেরিয়ে প্রবেশ করে দেখা গেল ভেতরে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য।
আইন অনুযায়ী অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ১০ জন শিক্ষার্থীকে নিজ বাসায় পড়ানোর সুযোগ থাকলেও অধিকাংশ স্থানে বাসা ভাড়া করে ৪০ থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে পড়াচ্ছেন শিক্ষকরা। কোচিং বাণিজ্য বন্ধে দেশের উচ্চ আদালতের রয়েছে নির্দেশনা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও জারি করা হয়েছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। তারপরেও আইনের তোয়াক্কা করছেন না অসাধু শিক্ষকরা।
অভিভাবকদের অভিযোগ, সন্তানদের কোচিং করাতে গিয়ে একদিকে যেমন অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয় তেমনি অপচয় হয় সময়ের। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, একজন শিক্ষার্থীর পেছনে বছরে যে ব্যয় হয় তার ৩০ শতাংশ চলে যায় কোচিং সেন্টার বা প্রাইভেট টিউটরদের কাছে। ১৮ শতাংশ খরচ হয় বই খাতা ও শিক্ষা-সরঞ্জামের পেছনে। মানসম্মত পাঠ্যপুস্তক আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবেই শিক্ষার্থীরা কোচিং করতে বাধ্য হয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শিক্ষাবিদ কায়কোবাদ মনে করেন, যতক্ষণ পর্যন্ত স্কুল-কলেজগুলোকে গুণগত মান-সম্পন্ন করতে না পারা যাবে। ততদিন পর্যন্ত কোচিংগুলোর সাথে যুদ্ধ করে কোনো লাভ হবে না। আর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলছেন, জোর করে নয় বরং শিক্ষকদের বুঝিয়ে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করবেন। তবে প্রতি বিষয়ের জন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় মাসিক ৩০০ টাকা, জেলা শহরে ২০০ টাকা, এবং উপজেলা বা স্থানীয় পর্যায়ে ১৫০ টাকা হারে ফি গ্রহণ করা যাবে।