জহিরুল হক বুলবুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ মুক্তিযোদ্ধার নামের সঙ্গে মিল থাকায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের জনৈক মো: আউয়াল মিয়া। এই পরিচয়ে সে একটি মামলার বাদীও হয়েছে বলে নবীনগরে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সমাজসেবা ও মুক্তিযোদ্ধা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ মামলায় তিনি মামলাটির বাদী হিসেবে মৃত ওমর আলী ছেলে মো: আউয়াল মিয়া নাম ব্যবহার করেন। অথচ জাতীয় পরিচয় পত্রে তার নাম হলো মো: আব্দুল আউয়াল খন্দকার পিতা মৃত আব্দুল গফুর খন্দকার। শ্রীরামপুর গ্রামের খন্দকার বাড়িটি হচ্ছে তার বাড়ি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা অফিসসহ এলাকায় আলোচনার ঝড় উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার কাগজ ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধার ভাতার জন্য স্থানীয় সমাজ সেবা অফিসে অবেদন করেছিলেন। কাগজপত্রে গরমিল থাকায় তার আবেদনটি বাতিল হয়ে যায়।
আর যিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তিনি ভারতীর তালিকা ১২১ পৃষ্টায় ক্রমিক নং ৩৩০৩৩ ও বাংলাদেশ গেজেট (অতিরিক্ত) ৩৩৮৩ নং গেজেট অনুযারী কাগজপত্র সঠিক থাকায় ২০০৫ সাল হতে এই পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন। তার নাম আবদুল আউয়াল পিতা মৃত উমর আলী গ্রাম শ্রীরামপুর। বর্তমানে তিনি নায়ারনপুরে বসবাস করছেন।
অভিযুক্ত আউয়াল মিয়া ওরফে আব্দুল আউয়াল খন্দকার দাবি করেন, তিনিই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা, তার বিরুদ্ধে যারা কথা বলছে তারা সঠিক মুক্তিযোদ্ধা নয়।
জাতীয় পরিচয় পত্রে একটি নাম মুক্তিযোদ্ধা সনদে আরেকটি নাম কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ‘বাবা সহ আমাদের বাড়ীর সকলের ২টি করে নাম রয়েছে।’
বীরমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যিনি ভাতা পাচ্ছেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মো: আউয়াল মিয়া বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ১০ বছর যাবৎ ভাতা পাচ্ছি। আমি যুদ্ধ করেছি তা সবাই জানেন, আমার কাগজ ব্যবহার করে যিনি ভাতার জন্য অবেদন করেছেন তাকে আমি চিনিনা।
এই ব্যাপারে শ্রীরামপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নসু মিয়া বলেন, মামলার বাদী মো: আউয়াল মিয়া মুক্তিযোদ্ধা নয়, যিনি ভাতা পাচ্ছেন তিনিই প্রকত মুক্তিযোদ্ধা, আমরা একসাথে যুদ্ধ করেছি।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এমদাদুল হক বলেন, মামলার বাদী কাগজপত্রে যাচাই বাচাইয়ে মুক্তিযোদ্ধার প্রমান পাওয়া যায়নি। মো: আউয়াল মিয়া পিতা মৃত উমর আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার কাগজপত্র সঠিক থাকায় সে ২০০৫ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছে।