পদ্মা সেতুর মূলযজ্ঞ শুরু

বিডি মেট্রোনিউজ ।। দেড় দশক আগে পদ্মায় সেতু নির্মাণের যে স্বপ্নের সূচনা হয়েছিল, এবার তাকে চূড়ান্ত আকৃতি দেওয়ার কাজ শুরু হল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার জাজিরায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নদীশাসন এবং পরে মাওয়ায় সেতুর মূল কাজের উদ্বোধন করেন।

মাওয়ার অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীর এক কিলোমিটার ভেতরে শুরু হয় সাত নম্বর পিলারের মূল পাইলিংয়ের কাজ। এরকম মোট ৪২টি পিলারের ওপর ভর দিয়েই প্রমত্তা নদীর দুই তীরকে যুক্ত করবে পদ্মা সেতু।
প্রধানমন্ত্রী আশা করছেন, ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু আগামী তিন বছরের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া যাবে। সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেনও চলবে।

জাজিরায় নদীশাসন কাজের উদ্বোধনের পর এক সুধী সমাবেশে নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি চেয়েছিলাম, আমরা পারি, আমরা তা দেখাব।… আজ আমরা সেই দিনটিতে এসে পৌঁছেছি।” এই সেতু নির্মাণ নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের ‘মিথ্যা অভিযোগ’ এবং নানা বাধা বিপত্তির কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি জাতি কারও কাছে মাথা নত করেনি, করবেও না।

প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের এই সেতু দিয়ে ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হবে দক্ষিণ জনপদের ২১ জেলা। এ সেতু হলে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২ শতাংশ বাড়বে, প্রতিবছর শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য বিমোচন হবে বলে আশা করছে সরকার।

জাজিরার অনুষ্ঠান শেষে নদীপথে অন্য পাড়ের মাওয়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। পথে নদীর মধ্যে সাত নম্বর পিলারের পাইলিং কাজের জায়গাটিও দেখেন তিনি। মাওয়ায় সরকারের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের পাশে নিয়ে বোতাম চেপে পদ্মা মুলর সেতু নির্মান কাজের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি সবার কাছে দোয়া চান, যেন ‘সময়মত’ নির্মাণ কাজ শেষ করা যায়।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, প্রকল্পের প্রায় ২৭ শতাংশ কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। এই সেতু নির্মাণের পাশাপাশি মাওয়া থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত চার লেইনের সড়ক হবে। রাজধানীর বিজয়নগর থেকে ঢাকা-মাওয়া সড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে হবে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার।

বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মশিউর রহমান ও ইকবাল সোবহান চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু জাজিরা ও মাওয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

আরও ছিলেন সেনা প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, পুলিশের আইজি শহীদুল হক, চিফ হুইপ আসম ফিরোজ, স্থানীয় সাংসদ সুকুমার রঞ্জন ঘোষ ও সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, দীপু মনি, সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts