মো. শহীদ উল্লা খন্দকার
সমাজে আমরা একতাবদ্ধ হয়ে বাস করি কিন্তু সব বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাভাবনা, উপলব্ধি একরকম নয়। সমাজের কিছু বিষয় আছে, যা নিয়ে আমাদের সম্মিলিত ভাবনা ও প্রচেস্টা জরুরী। সমাজে কিছু অসহায় চরিত্র আছে, যাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের কোন বিকল্প নেই। অটিজম নিয়ে বলতে গিয়েই আমার এই উপলব্ধি। যিনি আমাদের এ ভাবনায় যেতে উদ্বুদ্ধ করেছেন, প্রেরণা জুগিয়েছেন, তিনি হচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রীকন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। সত্যি বলতে কী, অটিজম নিয়ে তার কর্মকান্ড আমাদেরকে মোহিত করেছে, আবেগাপ্লুত করেছে।
এক সময় ভাবা হতো অটিস্টিক শিশুরা সমাজের বোঝা। পরিবারের কাছেও তারা ছিল অবহেলিত। অটিস্টিক শিশুদের সুষ্ঠু স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য ছিল না যথাযথ পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা এবং ব্যবস্থাপনা। সাধারণত অটিস্টিক শিশু বা ব্যক্তির কথা-বার্তা বা যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈকল্য ও অসঙ্গতি দেখা যায়। দেরিতে কথা বলা, জবান বা বোল বা বাক্ প্রভৃতিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। খেলাধুলায় অনীহা কিংবা নিজেকে গুটিয়ে রাখার চেষ্টা থাকে। আচরণিক ক্ষেত্রেও এদের মধ্যে অঙ্গের যেমন- হাত, আঙুল, মাথা প্রভৃতির অস্বাভাবিকত্ব দেখা যায়। এসব দিকে মনোযোগ দিলেই অনুধাবন সম্ভব অটিজমের একেকজন শিশু কতটা অসহায়। অভিভাবকগণ তাদের নিয়ে কতটা যাতনাময় দিন পার করছেন, তা আমাদের অনুভবে আনা দরকার। সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এর কর্মকান্ড ও উদ্যোগ আমাদের চেতনায় এই বোধটিকেই জাগ্রত করে তুলেছে।
আজ অনায়াসেই আমরা বুঝে নিতে পারি, মূলত অটিজম একটি জটিল বিকাশজনিত বৈকল্য। এর ফলে ব্যক্তির সামাজিক মিথস্ক্রিয়া, ভাষা, আবেগীয় পেশী বা সেন্সরি সঞ্চালনে সমস্যা পরিলক্ষিত হয়।
আর এদের নিয়ে কাজ করতে যেয়েই সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে এখন প্রখ্যাত “অটিজম বিশেষজ্ঞ” হিসাবে বিশ্ব জানে। তিনি আজ মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার “বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্য”। তার এই প্রয়াস বিশাল গৌরবের কাজ বলেই আমরা মনে করি। আর এ কারণে আমরা বিশ্ববাসীর কাছে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে গর্ব করতে পারি। অথচ এ কাজটি মোটেই সহজকাজ নয়, খুবই কঠিন একটি কাজ। তিনি সেই কঠিন কাজটিই করে চলেছেন।
আমাদের অনেকেরই জানা নেই, দক্ষিণ এশীয় অটিজম নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার অন্যতম কারিগর সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের উদ্যোগেই ২০১১ সালে ঢাকায় প্রথমবারের মতো অটিজম বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অটিজম বিষয়ে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদানের জন্য পুতুলকে ২০১৪ সালের জন্য “এক্সিলেন্স এওয়ার্ড” পর্যন্ত দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
“বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস” উপলক্ষে ২০১৬তে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে “অটিজম মোকাবেলা: এসডিজি’র আলোকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কৌশল” শীর্ষক সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক ছিলেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জাতিসংঘে যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজক ছিল বাংলাদেশ, ভারত, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র মিশন এবং অটিজম স্পিকস ।
জাতিসংঘে উচ্চ পর্যায়ের এই আলোচনায় মহাসচিব বান কি-মুনের স্ত্রীসহ প্রায় সকল বক্তাই বাংলাদেশের কর্মকৌশলের প্রশংসা করেন। এ সময় সকলেই কৃতজ্ঞচিত্তে অটিজম বিষয়ে বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্যানেলের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নাম উচ্চারণ করেন। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। বাংলাদেশে অটিজম শিশুদের সার্বিক কল্যাণে যে সব কার্যক্রম গৃহিত হয়েছে তারও আলোকপাত করেন কেউ কেউ। এ অনুষ্ঠানের প্যানেলিস্ট হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল তার কর্ম-অভিজ্ঞতার আলোকে চমৎকার একটি উপস্থাপনায় বাংলাদেশ কীভাবে অটিজম সমস্যার আলোকে কাজ করছে তা সকলকে অবহিত করেন।
এ বিশ্বসভায় পুতুল বলেন, এ কাজে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। ধীরে ধীরে তা কেটে যাচ্ছে। অটিজম শিশুরাও যে আমাদের সমাজের অংশ এবং তাদেরও সকল পর্যায়ে সমঅধিকার রয়েছে-এসব ব্যাপারে যতবেশী মানুষকে সজাগ করা সম্ভব হচ্ছে ততই সমস্যাটির সমাধান সহজতর হচ্ছে। তিনি এ সময় বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে জানান, ২০১১ সালে সর্বপ্রথম বাংলাদেশে অটিজম সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়। ২০১৩ সালে আরেকটি সম্মেলন হয়েছে ঢাকায়। এরপর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অটিজম বিষয়ে একটি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তার সমন্বয়ে আমরা বিভিন্ন কাজে হাত দিয়েছি।
বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের ১৩টি মন্ত্রণালয় একযোগে অটিজম সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। অটিজম শিশুরা এখন নিজেদেরকে আর সমাজের অবহেলিত সদস্য হিসেবে বিবেচনা করছে না। সকলেই তাদের সাথে স্বাভাবিক আচরণ করছেন। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহায়তায় ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন’ এবং ‘নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট’ আইন করা হয়েছে। এই ট্রাস্ট বা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষা দেওয়ার কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন তিনি।
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এর এসব বক্তব্যেই বোঝা যাচ্ছে, তিনি অটিজম এর আন্দোলনকে কোন পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। যা আমাদের বিস্মিত করে। অটিজমের শিকার হওয়াদের পাশে দাঁড়ানোর এই কর্মস্পৃহাকে স্যালুট জানাতেই হয়।
বাংলাদেশে অটিজমের ওপর এসব উদ্যোগের ফলে এ পর্যন্ত যে অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে, তাও প্রশংসনীয়। বাংলাদেশে এ বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদনে ছয় স্তরে কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যেখানে কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মীদের থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যবসা-শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সেন্টার ফর নিউরোডিভালাপমেন্ট এন্ড অটিজম ইন চিল্ড্রেন সেন্টার’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজী’ বিভাগ এবং অটিস্টিকদের জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট চালু করা হয়েছে। কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক, প্রশিক্ষক, চিকিৎসক, সেবাদানকারী ও মা-বাবার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অটিস্টিকদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্রকর্ম প্রদর্শনীসহ তাদের সৃষ্টিশীল মনের বিকাশের লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
প্রতিবন্ধী শিশুদের বিদ্যালয়ে ভর্তি ও তাদের সুবিধামত অবকাঠামোগত পরিবেশ তৈরির বিষয়টি নিয়েও তিনি ভেবেছেন। এ জন্য বাড়ানো হয়েছে উপবৃত্তি সুবিধাভোগীর সংখ্যা। অন্যদিকে প্রতিবন্ধীদের বিনামূল্যে ফিজিওথেরাপি ও অন্যান্য চিকিৎসা দিতে দেশের ৬৪ জেলায় ১০৩টি সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র (ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার) স্থাপন করা হয়।
আমরা আরও আশান্বিত হই, যখন দেখি অটিজম আক্রান্তদের কর্মসংস্থানেরও চিন্তাভাবনা চলছে। এদের অনেকে চাকরি করছেন এবং স্বাবলম্বী হওয়ার চেস্টা করছেন। অর্থাৎ অটিজমে আক্রান্তরা এখন আর অভিশপ্ত নয়, সমাজের বোঝা নয়। তারা ক্রমেই সচল হয়ে উঠছে। আর তা সম্ভব হচ্ছে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এর মতো সেবিরা আছেন বলেই। তাদের দেখাদেখি আরও অনেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে এমন সেবায় নিজেকে জড়াচ্ছেন। অটিজমে ভূক্তভোগী পরিবারগুলোও সন্তান নিয়ে আগের মতো দিশাহারা হচ্ছেন না।
অটিজম নিয়ে জাতিসংঘের সর্বশেষ গবেষণা জরিপে বলা হয়, প্রতি ৬৮ জনের একজন অটিজম সম্পর্কিত রোগে আক্রান্ত অর্থাৎ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১% অটিজম জীবন নিয়ে বড় হচ্ছে। এর সিংহভাগই শিশু। অটিজম আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সুজান রীটের ভাষ্যমতে, বিশ্বে ৭ কোটি মানুষ অটিজমে ভূগছে। এর সাথে প্রতিদিনই যোগ হচ্ছে আরো অনেকে। তবে খুশীর সংবাদ হচ্ছে, দিন যত যাচ্ছে অটিজম শিশুদের ব্যাপারে সামাজিক-সচেতনতাও জোরদার হচ্ছে।
বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার তনয়া সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অটিজম মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দক্ষ-অভিজ্ঞ প্রশিক্ষিতদের তত্ত্বাবধান, বিশেষ শিক্ষা কর্মসূচির ব্যবস্থা, প্রত্যেক শিশুর বিশেষ চাহিদা পূরণ, বিকলাঙ্গ শিশুদের আর্থিকভাবে বিশেষ ব্যবস্থার আওতায় আনা এবং মানসিক ও শারীরিক উভয় ধরনের অটিস্টিক শিশুদের উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অটিজম শিশু এবং প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে গৃহীত মা-মেয়ের নানা কার্যক্রম জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে পেয়েছে স্বীকৃতি এবং অর্জন করেছে প্রশংসা।
চিকিৎসকদের মতে, অটিজম কোনো মানসিক রোগ নয়, মস্তিষ্কের একটি বিকাশগত সমস্যা। পরিবেশ দূষণ, রাসায়নিক মেশানো খাদ্যগ্রহণ এসবও অটিজমের জন্য দায়ী। বিশেষজ্ঞরা আরো জানান, অটিজম চিকিৎসায় ওষুধের চেয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ভূমিকাই মুখ্য। তবে প্রতিটি অটিস্টিক শিশুই আলাদা হওয়ায় তাদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারটি একজনের চেয়ে আরেকজনেরটা আলাদা। যত আগে অটিজমের বিষয়টা উপলব্ধি করে চিকিৎসা শুরু করা যায় ততই ভালো। সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে প্রতিটি অটিস্টিক শিশুই উন্নতি করে।
ঢাকার মিরপুরে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে “অটিজম রিসোর্স সেন্টার” ও একটি “অবৈতনিক বিদ্যালয়” স্থাপন করে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিনামূল্যে বিভিন্ন সেবা দেয়া হচ্ছে। ঢাকা সেনানিবাসে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য “প্রয়াস” নামে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি সেনানিবাসে এর শাখা প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অটিজম মোকাবেলায় আরো বেশকিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে ঢাকায় অটিস্টিক শিশুদের শিক্ষা দেয়ার বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ঢাকার বাইরেও রয়েছে কিছু প্রতিষ্ঠান। এসব খবর আমাদের ভীষণ আশান্বিত করে। আরো বেশি অনুপ্রাণীত হই যখন দেখি প্রধানমন্ত্রীকন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এর মতো মানুষেরা এসে পরম মমতায় এদের দিকে হাত বাড়িয়ে দেন। সস্নেহে মাথায় হাত রাখেন। এদের জন্য জীবনবাজি রেখে পরিশ্রম করেন।
অটিজমে আক্রান্তদের নিয়ে বলতে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য আমার মনে আজও গেঁথে আছে। তিনি বলেন, “এদের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা আছে। সেটাই বিকশিত করে দেয়ার সুযোগ করে দিতে হবে, যেন মেধা বিকাশের মাধ্যমে তারাও সমাজকে কিছু উপহার দিতে পারে।” অটিজমে আক্রান্ত হিসেবে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন, চার্লস ডারউইন, আইজ্যাক নিউটনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অটিস্টিক শিশুরা যেন অবহেলায় হারিয়ে না যায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। তারাও মানুষ। তারাও আমাদের সমাজের অংশ, তাদের জন্যও আমাদের কাজ করতে হবে। একটা দেশকে উন্নত করতে হলে সবাইকে নিয়ে করতে হবে, কাউকে অবহেলা করে না।”
যিনি মানুষ নিয়ে এতটা ভাবেন তাঁর কন্যাতো তেমনই হবেন। আমরা আমাদের নেতৃদের কাছে এমনটাই আশা করি। উন্নয়নশীল দেশে অটিস্টিকদের জন্য কাজ করা খুব সহজ নয়। এর জন্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে অনেক। এসব দেশে অটিজম মোকাবিলায় গোঁড়ামি, কুসংস্কার ও সীমিত সেবা, সেবাদানকারীদের মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণের অভাব এবং অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করেই এগিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীকন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তার একাগ্রতা আমাদের মুগ্ধ করেছে। মূলত বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল জাতির জনকের চিন্তা ও আদর্শ ধারণ করে মানবতার কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সকল অটিজম শিশুর জীবন যাত্রায় প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠে বিকশিত জীবনের দিকে এগিয়ে নেয়ার যে প্রত্যয় ও প্রচেষ্টা নিয়েছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল তা প্রশংসার দাবিদার।
একটি রাষ্ট্র তখনই কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যখন প্রত্যেক নাগরিকের জন্য যথাযথ সুযোগ-সুবিধা বজায় থাকে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত। উন্নয়নের এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে দেশের সবার অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে আমাদের অটিজম শিশু এবং প্রতিবন্ধীরা সঠিক পরিবেশে বেড়ে উঠবে। এক সময় তারা দেশের উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অটিস্টিক শিশুদের জন্য যে অবদান রেখে যাচ্ছেন, তাতে মানবতার জয় নিশ্চিত।
লেখক : মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়,
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার