কিছু সুশীল ও আমাদের ছাত্রলীগ

মো. নাঈম হোসেন  [] ছাত্রলীগ এমন একটি নাম যার পরিচয় ব্যাখ্যা করতে কয়েক পৃষ্ঠা লেগে যাবে। তবে এক বাক্যে ছাত্রলীগের সংক্ষিপ্ত পরিচয় হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া উপমহাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ছাত্র সংগঠন।

এবার আসি সুশীলদের ব্যাপারে। সুশীল শব্দটির আদ্যাক্ষরে “সু” আছে। আমার জানা মতে “সু” দিয়ে শুরু হওয়া যেকোন শব্দই ইতিবাচক হয়। যেমন সুনাম, সুসন্তান, সুনাগরিক, সুশাসন ইত্যাদি। কিন্তু একমাত্র সুশীল শব্দটিই এর ব্যতিক্রম। যার কাজ হচ্ছে শুভ কোন কিছুকে অশুভ ভাবে উপস্থাপন। আর সুশীল শব্দটির এমন বারোটা বাজাচ্ছেন কিছু নামধারী সুশীলরা।

ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি, আপনার পরিবারের দুই টি সন্তানকেই আপনি লালন পালন করতে পারছেন না। এর মধ্যে কেউ হয় জঙ্গী আবার কোনটা ধর্ষক। কিন্তু ছাত্রলীগ এমন একটা মহাপরিবার যেখানে হাজার হাজার পরিবারের লক্ষ লক্ষ সন্তান বসবাস করে। আপনার দুটি সন্তানকে লালন পালন করতে আপনি যখন হিমশিম খাচ্ছেন সেখানে কয়েক লাখ সন্তানকে কিভাবে সামলাবেন সে হিসেব কিন্তু আজ অবধি কেউ বলতে পারেননি। আপনারা এমন কেউ কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন যে এই লাখ লাখ সন্তানকে আপনি একই সময় সঠিক পথে রেখে লালন পালন করতে পারবেন।

আজকের সুশীলরা শুধু কয়েক সেকেন্ডে দু লাইনে ছাত্রলীগের বদনাম গড়গড় করে বলে ফেলেন। আমি আপনাকে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি ছাত্রলীগের প্রত্যেকটা ইউনিটের কার্যক্রম বিশ্লেষন করে ভালো কাজগুলোর ফিরিস্তি দিলে কোন দিন ছাত্রলীগের বদনাম করার সাহস করবেন না। আপনি ছাত্রলীগের কয়েক কোটি কর্মীর মধ্যে অপরাধে জড়িত কর্মীর আনুপাতিক হার প্রকাশ করুন। জানি পারবেন না। কারণ, সেই সংখ্যাটা এমন হবে যেটা লিখতে একটি শূন্য ও একটি দশমিকের প্রয়োজন হবে।

এবার একটু বাস্তবতায় আসি। একদিন বিকেল তিনটায় বই মেলায় যাই। কিছুন ঘোরাফেরার পর দেখি একটি দোকানের সামনে উপচে পরা ভিড়। কাছে গিয়ে জানতে পারি ওখানে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের লেখা বই বিক্রি হচ্ছে। দোকানের এক পাশে গিয়ে সাইফুর রহমান সোহাগকে দেখার চেষ্টা করলাম। দেখলাম ওনার পাশে বসা লাল শার্ট পরা একটি লোক বইয়ের উপর লিখে দিচ্ছেন আর ছাত্রলীগ সভাপতি নিজের স্বাক্ষর দিয়ে কর্মীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন একটা মুচকি হাসি দিয়ে। ওখান থেকে চলে গেলাম। কাজ সেরে রাত সাড়ে আটটায় আবার আসলাম। দেখলাম একই চিত্র। জানতে পারলাম কয়েক হাজার বই বিক্রি হয়েছে। তখন একটা গানিতিক হিসাব মেলালাম যে, একটি বইয়ের সাথে একটি মুচকি হাসি দিলে কয়েক হাজার বইয়ের সাথে কয়েক হাজার হাসি দিতে হয়েছে।

হাসাটা তো পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ কাজ। কিন্তু আপনাকে যদি দাঁড়িয়ে থেকে দিনে কয়েক হাজার হাসি দিতে বলি আপনি পারবেন তো? এরপর চোখে পড়ল সেই লাল শার্ট পরা লোকটার দিকে। পরিচয় জানার চেষ্টা করলাম। জানতে পারলাম উনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ। পরিশ্রমী ছাত্রনেতা। ভাবতে লাগলাম এই যে টানা ছয় ঘন্টা পরীক্ষার খাতায় লিখলেন এর ফলাফল কি? উত্তর একটাই কর্মীদের ভালোবাসা। এরকম অসংখ্য আসাদ-সাইফুর রহমান সোহাগের সাথে দিনরাত কষ্ট করেন শুধু কর্মীদের ভালোবাসেন বলেই।

সুশীলদের কাছে অনুরোধ ছাত্রলীগের দশটা মন্দ কাজের সাথে একটা ভালো কাজেরও উদাহরন দিন। দয়া করে সুশীল শব্দতার ইজ্জত রা করুন।

 

লেখক: শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts