যশোরের খান টিপু সুলতান আর নেই

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ যশোর-৫ আসনের আওয়ামী লীগের প্রাক্তন সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা খান টিপু সুলতান আর নেই। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। টিপু সুলতানের ছেলে সাদাব হুমায়ুন সুলতান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক জানিয়েছেন।

যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন টিপু সুলতান। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি দুই ছেলে, স্ত্রীসহ অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

টিপু সুলতান মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে গত মঙ্গলবার থেকে রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বুধবার থেকে তাকে নিবিড় তত্ত্বাবধানে (আইসিইউ) রাখা হয়। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আজ সকাল ১১টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় টিপু সুলতানের নামাজে জানাজা হবে। এরপর বাদ জোহর জানাজা হবে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে। পরে যশোর সদর ও মনিরামপুরে জানাজার পর খুলনার ডুমুরিয়ার ধামালিয়া গ্রামে তার দাফন সম্পন্ন হবে।

১৯৫০ সালের ১৩ ডিসেম্বর নানা বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ধামালিয়ার জমিদার বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন টিপু সুলতান। তার দাদা বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলার চণ্ডিবরপুর ইউনিয়নের গোয়াল বাতান গ্রামে। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াকালে বাবা মারা গেলে তিনি যশোরের লোন অফিস পাড়ায় মামা বাড়ি চলে যান।

যশোর সম্মিলনী ইনস্টিটিউশনে দশম শ্রেণিতে পড়াকালে ১৯৬৬ সালে ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হন টিপু সুলতান। ১৯৬৮ সালে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৬৯ সালে ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে যশোর অঞ্চলের নেতৃত্বে ছিলেন খান টিপু সুলতান। সেই বছরই জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি।

ওই বছর গণআন্দোলনে আইয়ুব খানের পতন এবং ইয়াহিয়া খানের ক্ষমতা গ্রহণের পর জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা আসে। এর কিছুদিন পর যশোরে মুসলিম লীগ নেতা নূরুল আমিনের আগমনের বিরোধিতার কারণে টিপু সুলতানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সামরিক আদালতে মামলা হয়। বিচারে তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যাপক বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঢাকায় পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের বৈঠক হয়। বৈঠকে টিপু সুলতানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে বঙ্গবন্ধু অনুরোধ করলে সেটি প্রত্যাহার হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে যশোরে এসে আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করেন। পরে দলটির গুরুত্বপূর্ণ নানা দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

Print Friendly

Related Posts