বিডি মেট্রোনিউজ ॥ জামায়াতে ইসলামীর আমির যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর রক্তচাপ বেড়ে গেছে। আপিল বিভাগ মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রাখার পর রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার ডাকা হয়। ডাক্তারের চেক আপে উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে। কিছু ওষুধ দিয়ে নিজামীকে পূর্ণ রেস্টে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে কারা সূত্রে জানা গেছে।
আপিল বিভাগ মৃত্যুদন্ড বহাল রাখায় মাওলানা নিজামীর সামনে সর্বশেষ আইনগত পথ রয়েছে রিভিউ পিটিশন দায়ের করা। তাঁর আইনজীবীরা জানান, এ পর্যন্ত যতগুলো রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে তাতে কোন ফল হয়নি। নিজামীর ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই তারা মনে করছেন। এ কারণে রিভিউ পিটিশন করতে খুব একটা আগ্রহী নন তারা। তারপরও রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হবে সময় ক্ষেপনের কৌশল হিসেবে। আপিল বিভাগের রায়ের কপি হাতে পাওয়ার দশ দিনের মধ্যে রিভিউ পিটিশন করা যাবে।
রিভিউ পিটিশন নিষ্পত্তিতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। তাতে রায় বহাল থাকলে নিজামীর সামনে একমাত্র পথ থাকবে দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করা। জামায়াত নেতা নিজামী ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদ-াদেশ বাধ্যর্কজনিত কারণে হ্রাস করার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন। এই আবেদনের মাধ্যমে তিনি কার্যত্ব অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন।
রিভিউ পিটিশন নিষ্পত্তির পর তিনি আবারও রাষ্ট্রপতির কাছে মৃত্যুদন্ড কমানোর আবেদন করার কথা ভাবছেন বলে নিজামীর আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে। মৃত্যুদন্ড হ্রাস করে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আমৃত্যু কারাদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়ার এখতিয়ার রয়েছে। তবে ফৌজদারি আইনে দন্ডিতদের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা থাকলেও যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য কিনা প্রশ্নসাপেক্ষ। আগামী মার্চে মহান স্বাধীনতার মাসে নিজামীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দন্ড কার্যকর করার ব্যাপারে সরকার সুস্পষ্ট কঠোর অবস্থানে রয়েছে। যুদ্ধাপরাধে একের পর যুদ্ধাপরাধে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিচার ও রায় কার্যকর করায় জামায়াতের নেতা-কর্মীরা মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রচন্ড রকম দুর্বল হয়ে পড়েছেন।
নিজামীর মৃত্যুদন্ড আপিল বিভাগ বহাল রাখার পর জামায়াতে ইসলামী ঢাকাসহ দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছিল। জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের ঢাকাসহ দেশের কোথাও মাঠে নামতে দেখা যায়নি।
যুদ্ধাপরাধে জামায়াত নেতাদের বিচার ও ট্রাইব্যুনালের রায়, মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার ব্যাপারে বিএনপির কাছ থেকে কোনরকম সহানুভূতিশীল বক্তব্য, বিবৃতি না আসার ঘটনা জামায়াতকে হতাশ করেছে। সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচন দুইয়ের দূরত্ব প্রসারিত হয়েছে। বিএনপি মহল সন্দেহ করছে, জামায়াত সরকারের সাথে গোপন সমঝোতায় এসেছে।
অপরদিকে জামায়াত মনে করে ভারতের আস্থা অর্জনে বিএনপি পরিকল্পিতভাবেই জামায়াতকে দূরে সরিয়ে রাখছে।