এএইচএম নোমান
মহকুমা থেকে শুরু করে জেলা সমিতি পর্যন্ত আমরা অনেকে এখন বয়সী পর্যায় এসে গেছি। ইতোমধ্যে অনেকে নেই। আবার পাশাপাশি অনেক যুব-মাঝ বয়সীদের আগমনেও অনেক জ্ঞান গরীমায়, অর্থে বিত্তে ও চিত্তের সমাহারে আমাদের সমিতি এখন পূর্ণাঙ্গ-ভরপুর। প্রক্রিয়াগতভাবে যেমন আমাদের সমিতিকে মানব সম্পদ দিয়ে গড়েছি। তেমনি সকলের অংশগ্রহণে ধন-মন-শ্রম দিয়ে ‘লক্ষ্মী ভবন’ও আমরা দাঁড় করিয়েছি। শোকর আল হামদুলিল্লাহ।
এ দিন উপলক্ষে আমি বিল্ডিং কমিটি ও হিসাব কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের আন্তরিকতা ও ‘ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো’র মত তাড়নার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ ও স্বাগত জানাই।
এ মুহূর্তে মনে দাগ কাটা নামের মধ্যে মরহুম শাহ আলম ভাই’র উদ্যোগী চিহ্নিত (জমি কেনা) ত্যাগীতার কথা যেমন মনে পড়ে তেমনি মরহুম শামছুল ইসলাম সাহেবে’র ‘এইরে ভাই কিছু টাকা দে, সমিতির বিল্ডিংটা করতে চাই’। কথাগুলো এখনও কানে বাজে। আর বিল্ডিং এর কাজ চলমান অবস্থায় কার্যত টাকা লাগলেই প্রায় সবাই ফরিদ ভাই’র দিকে তাকিয়ে কথা বলা, মানে যেন টাকার একটা বিহিত হবেই, ভাবটা এমন, তা-ই হলো বা হচ্ছে, ডাইনামিজম একেই বলে। সমিতি চড়াই উৎরাই, মামলা ভোট-চোট মিল মিশ কোনটা থেকেই কিন্তু আমরা বাদ ছিলাম না, তার পরেও আজ আমরা মাথা উঁচিয়ে, নাড়ীর টানে একাত্ম। সফিক মাহমুদ পিন্টু ভাই সর্বদাই ড্রাইভিং সিটে থেকে সব দিক সামলানো সহ এডভোকেটের মতই এগিয়ে দিচ্ছেন। তেমনি ফখরুল হায়দার চৌধুরীও হিউম্যান ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে টেকসইতার দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন। হিসেবী পদক্ষেপে ফজলে রেজা অর্থকড়ি ব্যবস্থাপনায় যে ‘সুমন’ দিয়েছেন তা একজন পরিকল্পনাবিদকেই মানায়। একইভাবে আবুল বাশার শেখ সংগঠক তৎপরতায় ছিলেন সদা জাগ্রত। সুলতানা ইয়াসমীন আপা নারী উপস্থিতির কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন। মাননীয় সাংসদ আউয়াল ভাই আখেরে বুঝিয়ে দিলেন কেবল দালান-কোঠাই সব নয় বরং মনের কোঠাই আসল। পাইন ভাইর উপস্থিতি অনেকদিন থেকেই আমরা মিস করতেছি। জসিম ভাইর শাণিত দৃষ্টি হিসাব-নিকাশ ও অডিটকে অনেকটাই প্রত্যয়ণ করার মত। আগামীতে বিভাগীয় সম্পাদকদের স্বকীয়তায় আরো এগিয়ে দিতে হবে। এইভাবে একে একে উচ্ছল মোহাব্বত ভাই, খন্দকার নাজির, প্রাণ নাথ, আনোয়ার ভাইসহ অনেকের নাম নিয়েও বলা যায় যে সবারই ভিন্নতা ও দৃষ্টিকোণ মাঝেও সকলের একাত্মতার এক রংধনু দৃষ্টান্ত এই সমিতি। তাৎক্ষণিক সকলের নাম আনতে পারি নেই বলে ক্ষমা প্রার্থী।
কাওরান বাজারস্থ লক্ষ্মীপুর জেলা যুব কল্যাণ সমিতির সহকর্মীদের অনেকে নেই। আবার অনেকে সক্রিয়ভাবেই আছেন। যে স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়, চির যুবক শামছুল আমিন ভাই বর্তমান সমিতি ও অবসর যোগ সূত্রতায় আজওÍ হাসি মাখা সেই যৌবনকেই মনে করিয়ে দেয় । জেলার রাজনীতিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক, সাংষ্কৃতিক ধর্মীয় তথা ব্যক্তিত্ব সবাই যেন লক্ষ্মীপুর এই সমিতির যে কোন ইভেন্টে এসে এখানে, দেশ গ্রাম, শহরের ছোট বেলা থেকে বিকাল বেলার জীবন মেলাকে খুঁজে পায় আস্থা ও স্বস্তি। এই বলে যে, ‘সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’। দলমত নির্বিশেষে বিত্তবান, মনবান-বিত্তহীন, তরুণ, বয়স্ক, মাঝারি সকলেই যেন চিত্তপূর্ণে মহীয়ান গরীয়ান একাকার। লক্ষ্মীপুর তথা বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রোনিক মিডিয়াই কিন্তু গোচরে-অগোচরে আমাদের সমিতির কার্যক্রমকে অনুপ্রাণিত করে যাচ্ছে। স্বাগত-স্বাগত জানাই উপস্থিত অনুপস্থিত সকলকে বিনম্র বিনীত প্রেম-প্রীতি, ভালবাসা ও শ্রদ্ধাভরে। এই ভালবাসা ও ভাল লাগা ও একাত্মতা যেন চিরজীব, চিরস্থায়ী ও বহমান থাকে এই কামনায়।
উপদেষ্টা মন্ডলী, জীবন সদস্য, পৃৃষ্ঠ পোষক, সাবেক ও বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সার্বিক পরামর্শে ও কার্যকর সহযোগীতায় আহবায়ক কমিটির সেক্রেটারী হেদায়েত হোসেন ভাইসহ সকলের পূর্ণাঙ্গ আন্তরিকতার ভিত্তি আজকের ১৩ সেপ্টেম্বর এই সাধারণ সভা ২০১৭। সকল সফলতা আজীবন সদস্যদের অকৃপন অবদানকে স্মরণ করিয়ে দেয়, কার্যনির্বাহী কমিটির বিগত বছরগুলির এগিয়ে নেয়ার সিঁড়ি। বর্তমান ধারাবাহিকতা রক্ষাকারী এবং সর্বোপরি সমাজের সর্বস্তরের সুমন-মানসিকতা সম্পন্ন সকলের ঐকান্তিক সমর্থন ছিল আমাদের পাথেয়। তারপরেও কোন ব্যর্থতা ও ত্রুটি বিচ্যুতির জন্য আমি/আমরা একান্তই মার্জনা প্রার্থী।
পরিশেষে, একটা তৃষ্ণার কথা বলে আবেদনের সুরে বলতে চাই যে, আমরা যারা শহরে থাকি, তারা যদি মাটি-মানুষ-মালিকানা, দেশপ্রেম এবং মনপ্রেম দিয়ে দারিদ্র্য দূর করার জন্য মৌলিক অধিকার সম্বলিত ‘মা’ কেন্দ্রিক ‘স্বপ্ন প্যাকেজ’ এসডিজি ‘একের ভেতর সতের’ বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ ও সিদ্ধান্ত না নেই, গরীবের ‘জন্য’ না হয়ে, গরীবের ‘সঙ্গে’ না থাকি, তাহলে কিন্তু ন্যায্যতা ও সাম্যতার বাংলাদেশ গড়তে পারব না। কেননা শান্তি ও গরীবি একসাথে হাঁটতে পারে না। যদি চাই, আমাদের জন্মভূমি লক্ষ্মীপুর সেই স্বপ্ন’র পাদস্থল হিসাবে দেশ ও দুনিয়ায় মডেল হিসাবে দৃশ্যমান হতে পারে। আগামী সেই দিনের অপেক্ষায় ও ভাগীদার থাকার আশায় আবারও সকলের প্রতি রইল সুস্বাগতম ও আহলান চাহলান।
লেখক: এএইচএম নোমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আহবায়ক, লক্ষ্মীপুর জেলা সমিতি সাধারণ সভা ২০১৭ (২৩ সেপ্টেম্বর)।