বিডি মেট্রোনিউজ ॥ আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দুটি বিকল্প তারিখ নিয়ে চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। তারিখ দুটি হলো ২৪ মার্চ অথবা ৩১ মার্চ, বৃহস্পতিবার। নির্বাচন কমিশন মার্চের মধ্যে প্রথম ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় বলে ২৪ মার্চই নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা বেশি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, কমিশন নির্বাচনের তারিখ স্থির করাসহ আচরণবিধি চূড়ান্ত করার কাজে হাত দিয়েছে। প্রথম ধাপে প্রায় ছয়শ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে অবশিষ্ট প্রায় ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হবে দুই অথবা তিন দিনে। তিন দিনের অনুষ্ঠানের সম্ভাবনাই বেশি।
১৫ মে, ১৯ মে এবং ২৬ মে নির্বাচনের খসড়া তারিখও ঠিক করে রাখা হয়েছে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিক লক্ষ্য করেই নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
নির্বাচন যাতে কোন ভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ হতে না পারে সেজন্য নির্বাচন কমিশন বেশকিছু কঠোর ব্যবস্থা নেবে। আচরণবিধিতে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, এমপিদের পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
নির্বাচনের তফসিল ২২ ফেব্রুয়ারি মধ্যে ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রার্থীদের প্রচার প্রচারনার জন্য পনের দিন সময় দেয়া হবে। তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রী, এমপি, মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানরা কোন বিধি নিষেধ যাতে লঙ্ঘন না করে সেজন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিশেষভাবে সতর্ক করা হবে।
প্রথাগত লিখিত নির্দেশের বাইরে কমিশন থেকে এইসব কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশনাও দেয়া হবে। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি ও অন্যান্যদের নির্বাচনী এলাকায় সফর কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কোন ইউনিয়ন পরিষদ অধিভূক্ত এলাকায় ব্যক্তিগত কারণে সফরে গেলেও নির্বাচন কমিশনকে আগে থেকেই অবগত করতে হবে। কি কারণে সফরে যাচ্ছেন সুনির্দিষ্টভাবে তার উল্লেখ করে কমিশনকে জানাতে হবে।
তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের ক্লিয়ারেন্স ছাড়া কোন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি কোন নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারবেন না। ব্যক্তিগত বা সরকারি কাজে সফরে গিয়ে তারা নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টিকারী কোন বক্তব্য রাখলে বা আচরণ করলে প্রশাসন থেকে তাঁকে অনুরূপ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হবে। প্রয়োজনে মন্ত্রী, এমপি ও সরকারি সুবিধাভোগী অন্যান্যদের ঢাকায় ফেরত পাঠাতে বলা হবে। কমিশন আচরণবিধির আলোকে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মৌখিকভাবে এসব নির্দেশ, নির্দেশনা দেবে।
সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচনে সরকার দলীয়দের অনেকের আচরণেই কমিশন অসন্তষ্ট। কমিশন কিছু পদক্ষেপ নিলেও তাদের অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখতে পারেনি। যে কারণে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এই অভিজ্ঞতার আলোকে কমিশন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তার পুনরাবৃত্তি রোধে অত্যন্ত কঠোর ভূমিকা নেবে। কোনভাবেই যাতে এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় যে ব্যাপারে তারা বেশকিছু আগাম ব্যবস্থাও নেবেন।
প্রভাবমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করলেও কমিশন জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে শৈথিল্য করবে না।
নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করলেও বিএনপি এই কমিশনের অধীনেই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যাচ্ছে। বিএনপির মাঠের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনে সক্রিয় হয়েছেন। দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে একক প্রার্থী দিতে বিজয় নিশ্চিত করতে কেন্দ্র থেকে শিগগিরই নির্দেশনা দেয়া হবে বলে বিএনপি সূত্রে জানা যায়।