তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

মোঃ রফিকুল ইসলাম

বিশ্ব আজ হাতের মুঠোয়। হাত বাড়ালেই বিশ্বের তথ্যাদি জানা যায় পাওয়া যায়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতিতে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে।

একসময় মানুষ টেলিপ্রিন্টার, টেলিস্কোপ, ফ্যাক্স এবং টেলিফোন ব্যবহার করে তথ্য আদান-প্রদান করত। এখন আইসিটির বদৌলতে যেমন- ফেইসবুক, ইন্টারনেট, ই-মেইল, ইউটিউব, গুগল প্লাস, টুইটার পেজ এবং মোবাইল ইত্যাদির মাধ্যমে কম খরচ এবং কম সময়ের মধ্যে বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে মুহুর্তের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংবাদ পেয়ে থাকেন।

এছাড়াও টাইপ-রাইটারের পরিবর্তে কম্পিউটার, ল্যাপটপ ব্যবহার করে মানুষ কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দৈনিক হাজিরার পরিবর্তে পাঞ্চিং কার্ড ব্যবহার করে কর্মকর্তা কর্মচারী কে কখন অফিসে উপস্থিত হলেন বা মাসিক গড় উপস্থিতি অতি সহজেই নির্ণয় করা যাচ্ছে। আধুনিক সি.সি ক্যামেরার মাধ্যমে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী কাজ ফাঁকি দিয়ে গল্প করেছেন বা নিজ চেয়ার টেবিল ছেড়ে পায়চারি করছেন ইত্যাদি সহজেই দেখা যায়। এসবই প্রযুক্তির আগমনে ঘটেছে।

তবে যতই সহজ হউক না কেন কোন কোন প্রযুক্তি ব্যবহারে বিড়ম্বনাও বেড়েছে। আবার কোন কোন প্রযুক্তি ব্যবহারে উন্নতি সাধিত হয়েছে।

ধরা যাক, মোবাইল ফোন ব্যবহারে কাজের গতি এলেও স্মার্ট মোবাইলে বিড়ম্বনার শেষ নেই। তাইতো বিরোধী দলের মাননীয় সভানেত্রী মহান সংসদে দাঁড়িয়ে স্মার্ট মোবাইলের কুফলের বিষয়াদি বর্ণনা করেছেন। তিনি মহান সংসদে এমনও আবেদন করেছেন সন্ধার পর যেন স্মার্ট ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকে বা বন্ধ করা হউক।

এবার ই-মেইল ব্যবহারকারীর বিড়ম্বনা: যে কোন অফিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আপানার নিকট একটি ই-মেইল পাঠালেন কিন্তু আপনি সময়মত ই-মেইল ওপেন করেন নাই। ফলে উক্ত ই-মেইলটির সুবিধা আপনি পেলেন না। এক্ষেত্রে কেউ যদি ই-মেইল দিয়ে আপনাকে মোবাইলে বলে দিতেন যে, আপনার ই-মেইলে গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাসেজ পাঠানো হয়েছে। এই সংবাদটি পাওয়ার সাথে সাথে আপনি ই-মেইল ওপেন করে প্রেরিত সংবাদটি বের করে ই-মেইলের সুবিধা নিতে পারতেন। এক্ষেত্রে ফ্যাক্সের মাধ্যমে সংবাদ পাওয়া সহজ ও সঠিক কেননা ফ্যাক্স-ব্যবহারে একটি দৃশ্যমান বস্তু হস্তগত হয়।

অনেক সময় টুকরা খবর আদান প্রদানে মোবাইলে ম্যাসেজের মাধ্যমেও পাওয়া যায় সহজে। কম্পিউটার ব্যবহারে কাজে সহজলভ্যতা এলেও বিড়ম্বনার শেষ নেই। যেমন বিদ্যুৎ না থাকলে কম্পিউটার চালনা করা যায় না পক্ষান্তরে টেলিপ্রিন্টার বা টাইপরাইটার ব্যবহারে বিদ্যুৎ না থাকলেও মোমবাতি জ্বালিয়ে অতি সহজে কাজ করা যায়।

উপসংহার: কাউকে ই-মেইল প্রদান করা হলে ল্যান্ডফোন বা মোবাইলে ই-মেইল প্রেরণের বিষয়টি জানালেই কাজের সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও হার্ডকপি অবশ্যই প্রেরণ করা উচিৎ। কেননা অনেক সময় ইন্টারনেট চালু থাকে না বা বিদ্যুতের সমস্যায় সঠিক সময় ই-মেইল ওপেন করা যায় না বা ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণে সঠিক সময় একশত ভাগ নির্ভর করা যায় না।

তাই কাউকে বা কারো ই-মেইলে অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রেরণ করা হলে তাকে অবশ্যই তার ব্যবহৃত মোবাইলে প্রেরিত ই-মেইলের ব্যাপারে বলতে হবে বা মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে জানিয়ে দিতে হবে। তবেই আইসিটি অর্থাৎ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির শতভাগ সুবিধার পাওয়া যাবে। কারণ ই-মেইল যতক্ষণ না ওপেন করা হবে ততক্ষন উহা অদৃশ্যমান থাকে, পক্ষান্তরে ফ্যাক্স বা মোবাইলের ম্যাসেজ দৃশ্যমান।

উদাহরণস্বরুপ সরকারী বা বেসরকারী বা বহুমুখি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মকর্তা/কর্মচারী নিয়োগের অনলাইনে যোগাযোগ ঠিকানা প্রদান করা হলেও বিস্তারিত তথ্যাদি পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ম্যাসেজ মোবাইলে পাঠালেও বিস্তারিত তথ্যের জন্য পত্রিকা বা ওয়েবসাইট দেখার জন্য উপদেশ দেয়া হয়। এমনকি কেউ কেউ নিয়োগের ব্যাপারে বা যে কোন কাজের ব্যাপারে জিপিও বক্স ব্যবহার করেন তাও পত্রিকায় বিস্তারিত প্রকাশ করেন।

মোঃ রফিকুল ইসলাম : লালমোহন, ভোলা

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts