‘বিকাশ রাজ্যে’ খাবার জোটে না ‘গোমাতা’র!

কমলিকা সেনগুপ্ত

 

রাজ্যে বিকাশের বাড়বাড়ন্ত এতই, যে অনাহারেই দিন কাটাতে হচ্ছে ‘গোমাতা’কে! হ্যাঁ। বিজেপি শাসিত গুজরাটের বেশ কিছু জায়গায় অন্ন সঙ্কটে ‘গো-সম্প্রদায়’।

সারা দেশে যেখানে গোহত্যার বিরোধীতায় এককাট্টা হিন্দুত্বের ধ্বজাধারীরা, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যেই অনাহারে গবাদি পশু। বিকাশের নামে যা হয়েছে তাতে গবাদি পশুর খাদ্য ভাণ্ডারে টান পড়েছে, ২৪ ঘণ্টা কমের কাছে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন গুজরাটেরই ‘গো-সেবক’।

দিগন্ত বিস্তৃত হাইওয়ে। যেদিকেই দু’চোখ যায় কেবলই রাস্তা আর রাস্তা। পিচের রাস্তায় চোখ হারিয়ে যাওয়ার মতো! প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ম্লান করে সূর্যও গুজরাটে অস্ত যায় পথের দিগন্ত রেখায়। সড়ক পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এখানে এতটাই! বিঘার পর বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে মাইলের পর মাইল তৈরি হয়েছে হাইওয়ে এনএইচ ৪৭। ৬-৮ লেন বিশিষ্ট রাস্তা। আর এই বিকাশেই ভিটেমাটি হারা হয়েছে গবাদি পশুরা। বিচরণের জায়গা সংকুচিত হয়েছে, টান পড়েছে খাদ্য ভাণ্ডারেও।

‘বিকাশ গাণ্ডো থাও ছে’ বনাম ‘বিকাশ থাও ছে’, এই দুই লাইনেই দ্বিধাবিভক্ত গুজরাট। বিকাশ কি সত্যিই পাগল  হয়ে গেছে না কি আদপে বিকাশ হচ্ছে? এই প্রশ্নই বারবার উঠে আসছে গুজরাট ভোটে। ৯ ডিসেম্বর উত্তর দিয়েছে অর্ধেক গুজরাট। ১৪ তারিখ এই প্রশ্নেই রায় দেবে বাকি অংশ। ভোটে বিকাশ এফেক্ট কতটা? বিকাশকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে?

আমেদাবাদের খুব কাছেই আওড়ার কৃষক কমলেশ বলছেন, “বিকাশ হচ্ছে না। দেখতেই পাওয়া যাচ্ছে না বিকাশকে।” এত হাইওয়ে, এত রাস্তা, তারপরও বিকাশ চোখে পড়ছে না? কমলেশের সাফ কথা, “হ্যাঁ, হাইওয়ে হয়েছে।” তাহলে সমস্যা কোথায়? হাসিমুখে কৃষক কমলেশ অঙ্গুলি হেলনে দেখালেন সমস্যায় পড়েছে ‘গাই’ (গরু)। “সারাদিন না খেয়ে থাকে। খাবার পায় না। গোচর নেই, সব নষ্ট করে দিয়েছে। গরু চরবে কোথায়”, ক্ষুব্ধ কৃষক।

কমলেশ একা নন, গুজরাটের চাষীদের সামগ্রিক ছবিটাই এমন। এবার ভোট তাহলে কোন দিকে? প্রশ্ন সহজ হলেও উত্তরটা কিন্তু কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে গুজরাটে। ‘চুপচাপ কমল ছাপ’, একথা কিন্তু একবারের জন্যও শোনা যাচ্ছে না তাদের মুখে। ‘ভোট তো দেবই’, হাসিমুখে একথা বললেও ইভিএমে আঙুল পড়বে কোন চিহ্নে তা নিয়ে কিন্তু মুখে কুলুপই এঁটেছেন কমলেশের মত কৃষকরা।

২৪ ঘন্টা/জিনিউজ

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts