বিডি মেট্রোনিউজ ডেস্ক॥ শীতের দিনে হলুদের উৎস যে ফুলটি তার নামটি গাঁদাফুল। অতি পরিচিত এই ফুলটির আগমন শীতকালেই। গ্রামের ঘরের ডোয়ায়, উঠোনে, শহুরে বারান্দায়, ছাদে কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গনে হলুদ রঙের সমারোহ চোখে পড়বেই পড়বে।
দক্ষিণ ইউরোপে সর্বপ্রথম গাঁদাফুলের চাষ শুরু হলেও বর্তমানে এর ব্যাপ্তি ছড়িয়ে পড়েছে সারাবিশ্বে। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান গাঁদাফুল ছাড়া যেন অসম্ভব বলেই মনে হয়। নারীরা প্রিয়জনের নজর কারতে খোঁপায় গুঁজে নেয় এ ফুলটি। শোভাবর্ধক হিসেবে মূলতঃ এ ফুল ব্যবহৃত হলেও এ ফুলের রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা।
সেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে ক্ষতস্থান ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে এন্টিসেপ্টিক হিসেবে গাঁদাফুল ও পাতা ব্যবহার করা হচ্ছে। কেটে যাওয়া স্থানে রক্ত পড়া বন্ধ করতে গাছের পাতা থেঁতলে ব্যবহার করা হয়। এ ফুলে রয়েছে প্রচুর ফ্ল্যাভিনয়েড ও ভিটামিন সি, কোন ফ্যাট থাকায় এটি ওজন কমাতেও সহায়ক। এক্ষেত্রে ফুলের পাঁপড়ি ভালো করে ধুয়ে মিক্সড সালাদে যোগ করা যায়। প্রচুর লাইকোপিন থাকায় হার্টের অসুখে ও প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
এ ছাড়াও ইনফ্লেমেটোরি ক্ষমতা থাকায় ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্যান্সার, হজমে সমস্যা ইত্যাদি প্রতিরোধেও এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। গরম পানিতে গাঁদাফুলের পাঁপড়ি দিয়ে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে সেই পানি দিয়ে চা বানিয়ে খেলে তা মুখ ও পাকস্থলির আলসার প্রতিরোধ করে বলে গবেষণায় পাওয়া গেছে।
স্তন ক্যান্সারের রোগীদের ক্যামোথেরাপীর পর চামড়ায় যে ডার্মাটোফাইটের আক্রমণ হয় তা কমাতে গাদাফুলের পেস্ট উপকারী। যা বাজারে ক্যালিন্ডুলা ক্রীম হিসেবে পাওয়া যায়। গাঁধা ফুলে রয়েছে টার্পিনয়েড, এস্টার, ফ্ল্যাভোজেন্থিন। তাই ভেজিবেটল ডাই হিসেবেও এর রয়েছে বহুল ব্যবহার। পায়ের পাতার ফাঁকের ঘা নিরাময়ে এ ফুলের নির্যাস থেকে তৈরি তেল কার্যকরী।
ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করতে গাঁদাফুল হতে পারে এক কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান। গরম পানিতে কয়েকটি পরিষ্কার তাজাফুল ভিজিয়ে রাখুন। প্রতিদিন সেই পানি মুখে মেখে দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। গোসলের আগে গাঁদাফুলের পাঁপড়ি পরিষ্কার পানিতে ফুটিয়ে নিন। সেই পানি কুসুম গরম থাকতেই গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করে নিন। ভ্যাজিনাল ইনফেকশন, ব্লাডার ইনফেকশন, একজিমা প্রতিরোধ করে।