তিন বছরেও পাননি বিধবা ভাতা
মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ: রমজানের শেষে এলো খুশির ঈদ। তবে বাহুবল উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাহসি ও সৎ সাংবাদিক এটিএম তামিমের পরিবারে ঈদের আনন্দ নেই বললেই চলে। প্রায় তিন বছর আগে ডায়াবেটিস জনিত রোগের কারণে না ফেরার দেশে চলে যায় সাংবাদিক এটিএম তামিম। তামিম মারা যাওয়ার পর তিন বছর পেরিয়ে গেরেও তার স্ত্রীর ভাগ্যে জুটেনি বিধবা ভাতা।
সূত্র জানায়, তামিম দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসের রোগে ভোগছিলেন। সে সময়ে চিকিৎসার খরচের জন্য শেষ সম্বল ভিটেমাটি বিক্রি করতে হয়েছিল তাকে। সংসারে স্ত্রীসহ দুটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান। ছোট ছেলে সাঈদীর বয়স এখন প্রায় আড়াই বছর। তার জন্মের ৬ মাস আগেই মারা যান বাবা তামিম। বড় ছেলে সাদ্ এর বয়স ৫ বছর।
স্বামীর বাড়ীতে ভিটেঘর না থাকায় সন্তানদের নিয়ে বর্তমানে সাংবাদিক তামিমের স্ত্রী বসবাস করেন তার বাবার বাড়ী উপজেলার দওপাড়া গ্রামে। সেখানেও নুন আন্তে পান্তা ফুরায়। উপার্জনহীন সংসার চলে কষ্টে। ঈদে সাংবাদিক তামিমের দুই পুত্রের জন্য নেই নতুন জামা-কাপড়। স্ত্রীর মুখের হাসি অনেক দিন আগে চলে গেছে।
তামিমের স্ত্রী জানান- তার বাবার বাড়িতে আছেন বড় ভাইয়ের সংসারে। সেখানেও তাদের মাথাগোজার ঠাঁই পেতে সমস্যা হচ্ছে।
১৪ জুন বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সিদ্দিকুর রহমান মাসুক ও আব্দুল কাদির চৌধুরী বাবুল সরজমিন যান। তারা এ সময় জানতে পারেন ঈদে সাংবাদিক তামিমের দুই পুত্র সন্তানের জন্য আসেনি নতুন কাপড়। স্ত্রী মনমরা হয়ে বসে আছেন। তারা সাংবাদিক পরিচয় দিতেই তামিমের বড় ছেলে গলায় জড়িয়ে ধরে বলে ‘আমার আব্বুও সাংবাদিক ছিলেন’। তখন তার হাতে তুলে দেয়া হয় নতুন কাপড়। নতুন কাপড় পেয়ে সাদ খুশিতে আত্মহারা।
তামিমের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার বৃষ্টি জানান- স্বামীর চিকিৎসার জন্য শেষ সম্বল ভিটেমাটি বিক্রি করতে হয়েছে। তবুও বাচানো গেলো না তাকে। এখন সহায় সম্বলহীন দুই সন্তানকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে তাকে। সরকার কিংবা কোন হৃদয়বান ব্যক্তি আমাদের মাথাগোজার ঠাঁই করে দিলে চিরঋণি হয়ে থাকব। এখন পর্যন্ত বিধবা ভাতা না পাওয়া তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।