বিডি মেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ অন্য ফুলের মতো চা ফুলের কদর নেই। মনে করা হয়, ফুল ফোটা মানে চা গাছটি ‘কষ্টে’ আছে। থোকাথোকা সাদা সেই ফুল দু-তিন সপ্তাহ পরে আপনা আপনি ঝরে যায়। এ বার সেই চা ফুল থেকে প্রসাধনী তৈরি করতে শুরু করেছে শিলিগুড়ির একটি চা প্রস্তুতকারী সংস্থা। ইতিমধ্যে ‘পেটেন্ট’ও তাদের হাতে চলে এসেছে বলে সংস্থাটি দাবি করেছে।
শিলিগুড়ির চায়ের ফুল থেকে তৈরি এই প্রসাধনী সহজেই নিজস্ব বাজার তৈরি করতে পারবে বলে সংস্থা মনে করছে। সংস্থা সূত্রে জানানো হয়, প্রসাধনী বাজারে গোলাপ, জুঁইয়ের মতো ফুলের ‘ফেস প্যাক’ পাওয়া যায়। এ বার সংযোজন চা ফুলের ‘ফেস প্যাক’। চা ফুল সংগ্রহ করে, তাকে শুকিয়ে নেওয়া হবে। আর এই প্রসাধনী তৈরি হচ্ছে শুকনো ফুল গুঁড়ো করে তার সঙ্গে কিছু ভেষজ উপাদান মিলিয়ে।
চিনের একটি চা বিপণন সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাজারজাত করতে যাওয়া এ প্রসাধনীর নাম রাখা হয়েছে ‘টি ব্লসম’। সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে স্থানীয় বাজারে বাণিজ্যিক ভাবে ফেসপ্যাক আনা হবে।
সংস্থাটির দাবি, চা পাতার মতো ফুলেরও সুগন্ধ রয়েছে। সে সুগন্ধই হবে প্রসাধনীর মূল আকর্ষণ। সংস্থার সিইও রাজীব লোচনের দাবি, চা ফুলের ফেসপ্যাক লাগিয়ে রাখার সময় একটি ঠান্ডা অনুভূতি হবে। ফেস প্যাক ধুয়ে উঠিয়ে দেওয়ার পরে ত্বক অনেকটাই ঝলমলে দেখাবে, সতেজ থাকবে।
চা বাগানগুলোতে শীতকালে পরিচর্যা করার সময়ে চা ফুলের কুঁঁড়ি কেটে ফেলা হলেও, বেশির ভাগ পুরোনো বাগানেই গাছের নীচের দিকে চা ফুল ফোটে। সাদা রঙের এই ফুলে ছোট ছোট পাপড়ি থাকে। যে সব বাগানে গাছের পরিচর্যা হয় না, বিশেষত বন্ধ বাগানে বড় ধরনের চা ফুলও দেখা যায়।
ুদ্র চা চাষির সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘সাধারণত কোনও চা গাছে ফুল ফুটলে মনে করা হয়, সেই গাছটি কষ্টে রয়েছে। তাই চা গাছের ফুল ফুটতেই দেওয়া হয় না।’ বাণিজ্যিক ব্যবহার না হলেও, শ্রমিকদের অনেকেই চা গাছের ফুল ভাজা করে খেয়ে থাকেন। সাধারণত বসন্তের শুরুতেই চা ফুল ফোটে। বেশিরভাগ েেত্রই ফুল ফোটার আগেই চা গাছের ডালপালা কেটে দেওয়া হয়।
চিনে দীর্ঘদিন ধরেই চা ফুল থেকে নানা বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হয়েছে। সুগন্ধি বাড়াতে চা ফুল শুকিয়ে গুঁড়ো করে চা পাতার মধ্যেই মেশানো হয়। কিছু ওষুধেও চা ফুল ব্যবহার করা হয়। তবে চা ফুল থেকে প্রসাধনী তৈরির কথা জানা যায়নি।