শহরে বন্দরে হাঁটতে হাঁটতে ঘুরতে ঘুরতে
বোবা চোখে তাকিয়ে দেখি;
হাসপাতাল, হাসপাতাল আর হাসপাতাল
ক্লিনিক ক্লিনিক আর ক্লিনিক
প্যাথলজি, চেম্বার, আর ফার্মেসী ফার্মেসী ফার্মেসী
সবাই যেনো ফাঁদ পেতে বৃত্ত রচনা করে আছে পরস্পর
তারপরেও দেখি মানুষের আয়ু কমছে,
ছুটছে তারা কবরের দিকে –
আমি এর মানে বুঝে উঠতে পারি না, শুধু মনে হয়
এমন তো হবার কথা নয়, এমন তো হবার কথা নয় …
শহরে বন্দরে হাঁটতে হাঁটতে ঘুরতে ঘুরতে
আশ্চর্য চোখে তাকিয়ে দেখি;
এখানে ওখানে ঐখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে
পুলিশ, পুলিশ আর পুলিশ
কখনো বা র্যাব কখনো বা বিজিবি
আর অনতিদূরে কারাগার, থানা হাজত
তারপরেও দেখি দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে;
লুটেরা, ছিনতাইকারী, দুর্নীতিবাজ-
তাহলে কারাগারে, থানাহাজতে কারা বাস করে …
আমি এর মানে বুঝে উঠতে পারি না, শুধু মনে হয়
এমন তো হবার কথা নয়, এমন তো হবার কথা নয় …
শহরে বন্দরে হাঁটতে হাঁটতে ঘুরতে ঘুরতে
নিঃসঙ্গ চোখে তাকিয়ে দেখি;
জেলার পর জেলা, উপজেলার পর উপজেলা
একের পর এক সিটি কর্পোরেশন,
একের পর এক পৌরসভা
আর গ্রামের পথে ঘাটে ইউনিয়ন আর ইউনিয়ন
সবাই যার যার মতো মানবতার মশাল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
অথচ, কারো মুখে শান্তি নেই, কারো মুখে প্রশান্তি নেই-
আমি এর মানে বুঝতে উঠতে পারি না, শুধু মনে হয়
এমন তো হবার কথা নয়, এমন তো হবার কথা নয় …
শহরে বন্দরে হাঁটতে হাঁটতে ঘুরতে ঘুরতে
নিরব চোখে তাকিয়ে দেখি;
বাতাসে শাড়ির আঁচল ধরে উড়ছে
সভাসমিতির ব্যানার, উন্নয়নের ব্যানার
সম্পাদকের ব্যানার, সভাপতির ব্যানার
আর অন্যদিকে সচিব, মহাসচিব, বিশেষজ্ঞ
সবারই বুকপকেটে একজন কিংবদন্তীর নামে
আলজিভ থেকে জিহ্বায়, ঠোঁটে সুন্দরবনের মধু
অবিরাম ঝরছে অবিরাম ঝরছে
অথচ, গৃহদাহে জ্বলছে চারপাশ
অথচ, গৃহদাহে জ্বলছে দশদিক
আমি এর মানে বুঝতে উঠতে পারি না, শুধু মনে হয়
এমন তো হবার কথা নয়, এমন তো হবার কথা নয় …
অতঃপর বোবা চোখে নিজের দিকে নিজেই তাকিয়ে দেখি;
পায়ে আমার শিকল
হাতে আমার শিকল
মুখে আমার শিকল এবং
আমার একমাত্র কলম শীতবস্ত্রের মতো
শিকলের জ্যাকেটে আবদ্ধ পড়ে আছে
নিঃসঙ্গ শাদাপাতায় দুর্দিনের লজ্জায় …
নাম মাত্র বেঁচে আছি মানব আমি-
মা বলে আজ আমি কাউকে ডাকতে পারছি না,
কাউকে ডাকতে পারছি না …
#
মেরীল্যান্ড, আমেরিকা।