সনদ এখন অভিশাপ ॥ সাব্বির আহমেদ সুবীর

দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের শিক্ষার্থীরা তাদের সনদ ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। তাদের অনেকেই উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেও কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সম্প্রতি দেশের কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি মতে, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদনপ্রাপ্ত মূল ক্যাম্পাসের বাহিরে অনুমোদনবিহীন ভাড়া করা বাড়িতে অস্থায়ী ক্যাম্পাস বানিয়ে বেশির ভাগ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী এমবিএ, অনার্স, মাস্টার্সসহ বিভিন্ন উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করছেন।

জানা গেছে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির মান অনুযায়ী ক্যাম্পাস না থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদন না পেয়ে হাইকোর্টের ঝঃধু ঙৎফবৎ-এর মাধ্যমে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলোÑ এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অপরাধটা কী?

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সতর্কতা জারি করেই দায়িত্ব শেষ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট ব্যবসাসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নানা অবৈধ কাজকারবার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে তোপের মুখে পড়লেও কিছুদিন পরই মঞ্জুরি কমিশন ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ইবাইস ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়-চট্টগ্রাম, শান্তা-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, আমেরিকা-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ও কুইন্স ইউনিভার্সিটি।

কিন্তু সতর্কতা জারি কেন? গ্রহণযোগ্য না হলে সরাসরি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করা হোক। তাতে নিশ্চয়ই সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো রকমের হয়রানির শিকার হতে হবে না।

অভিযোগ রয়েছে- এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত না করেই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু এমন নেতিবাচক অবস্থার মধ্যেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জোয়ার চলছে। এদিকে সরকারের পক্ষে বলা হচ্ছে, রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরের অলিগলিতে ‘আউটার’ নামে গজিয়ে ওঠা অবৈধ ক্যাম্পাসের শিার্থীর দায়ভার নেবে না সরকার। আউটার ক্যাম্পাস পরিচালনা, মালিকানা দ্বন্দ্ব থেকে শুরু করে নামমাত্র শিক্ষাদান, কোচিং স্টাইলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা, ভাড়া করা শিক্ষক দিয়ে ক্যাম্পাস পরিচালনা, সনদ বিক্রি, ক্যাম্পাস ও শাখা বিক্রি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের অভিযোগে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস বা আউটার ক্যাম্পাস বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

এসব সমস্যাকবলিত ক্যাম্পাসের তালিকা প্রকাশ করে ইউজিসি গত বছর সেপ্টেম্বরে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে। এতে এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিও ক্ষেত্রে তথ্য যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। তবে চলতি বছর এ সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি ইউজিসি।

এ বিষয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান জানান, ‘যেহেতু সরকার অবৈধ ক্যাম্পাসের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছে, তাই কোনো শিক্ষার্থী এসব ক্যাম্পাসে ভর্তি হলে তাদের দায়ভার সরকার নেবে না। এমন হলে ধরে নেয়া হবে যে, এসব শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্যই হলো সনদ কেনা। এসব অবৈধ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সনদ বৈধ বলে গণ্য হবে না। ভর্তি হওয়ার আগে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জেনেশুনে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি’। একই সময়ে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে চলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান জানান, ‘সরকার মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা চালাচ্ছে। তালিকা প্রকাশের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি’।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট যেন এখন ছাত্রছাত্রীদের অভিশাপে পরিণত হয়েছে। একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর এইচএসসি পাশ করে যে পরিমাণ ছাত্র-ছাত্রী বের হয় তাদের অধিকাংশই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না। ফলে অভিভাবকদের বাধ্য হয়ে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয় আবার অনেকেই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রী নেয়ার পরও এক্সট্রা কারিকুলাম হিসাবে সন্ধ্যাকালীন ইএমবিএ সহ অন্যান্য শর্ট কোর্সে ভর্তি হচ্ছে। ভর্তির সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান সম্বন্ধে অনেকেরই জানা থাকে না। পরবর্তীতে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের মেধার ভিত্তিতে সরকারি এবং বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে নিয়োজিত হন।

এ রকম একটা পরিস্থিতিতে সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রিকায়/মিডিয়ায় অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসির অনুমোদনবিহীন শিক্ষার্থী বের হচ্ছে আবার কেউ কেউ এটাকে ভুয়া সার্টিফিকেট বলে আখ্যায়িত করছেন। এ রকম প্রতিবেদনের ফলে শিক্ষার্থীরা পারিবারিক, সামাজিক এবং চাকরিস্থলে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, তাদের সার্টিফিকেট কোনোভাবেই ভূয়া প্রমাণিত করার সুযোগ নাই। তারা যে ক্যাম্পাস থেকে সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হয়েছেন ঐ ক্যাম্পাসে যাচাইয়ের জন্য প্রেরণ করা হলে তা সঠিক বলে প্রতীয়মান হবে।

দারুল ইহসানসহ প্রাইম ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সাউদার্ন, নর্দান, দি পিপলস, বিজিসি, ট্রাস্ট, ইবাইস ও আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় একই রকমভাবে চলছে।

জানা গেছে, বর্তমানে ১০-১৫টি অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে করা ২৭টি মামলা লড়ছে ইউজিসি। তবে বিভিন্ন অনিয়ম অভিযোগে তুষ্ট এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মামলা করলেও টিকতে পরছে না সংস্থাটি। হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আবারও শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে এসব বিশ্ববিদ্যালয়। এতে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে নতুন করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় বেঁধে দেয় ইউজিসি। প্রথমে ২০১২ সালের মধ্যে, দ্বিতীয়বার ২০১৩ সালের মধ্যে এবং সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল।

জানা গেছে, এলাকা বা অঞ্চলভিত্তিক শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়ার জন্যই এসব অবৈধ আউটার ক্যাম্পাস পরিচালনা করা হয়। এমনকি নির্দিষ্ট কোনো জেলাকে টার্গেট করেও ওই জেলায় আউটার ক্যাম্পাস খোলা হচ্ছে। বিভাগীয় শহরের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করেও পরিচালিত হচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সনদবাণিজ্যের ব্যবসা। ইউজিসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি সরকারি অনুমোদন ছাড়াই চালাচ্ছে ক্যাম্পাস। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই একাধিক ক্যাম্পাস রাখতে পারবে না। অর্থাৎ ক্যাম্পাস থাকবে একটি। কিন্তু এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় একাধিক ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে। যার নাম দেয়া হচ্ছে আউটার ক্যাম্পাস বা শাখা ক্যাম্পাস। এর মধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে।

গত বছর ৩১ মে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়, যাতে বিষয় ছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত সনদের গ্রহণযোগ্যতা প্রসঙ্গে। সেখানে ৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত সনদের গ্রহণযোগ্যতা প্রসঙ্গে নির্দেশ দেয়া হয়।

এগুলো হলো- ১. আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ২. দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি ৩. প্রাইম ইউনিভার্সিটি ৪. কুইন্স ইউনিভার্সিটি ৫. ইবাইস ইউনিভার্সিটি ও ৬. গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। এ ৬টি ইউনিভার্সিটির বিষয়ে ইউজিসি কর্তৃক মন্ত্রণালয়ে প্রেরিত পত্রে বর্ণিত ঠিকানা অনুযায়ী সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য হবে বলে জানায়; কিন্তু পূর্বে যারা এসব ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে পাশ করেছেন তাদের ব্যাপারে কোনো বক্তব্য প্রদান করেননি। এতে প্রতীয়মান হয় যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১/১১/২০১৫ তারিখের চিঠির আগে অন্যান্য ক্যাম্পাসের সনদ বৈধ আছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মালিকানা দ্বন্দ্বে এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করা দেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাই এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হওয়া উচিত বলে মনে করছে সুধীমহল।

এছাড়া খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমশিন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত সনদের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয় চিঠি আদান প্রদান করে আসছে। ২০১৬ সালে নতুন ৬টিসহ ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ২০১২ সালে ১৬টি, ২০১৩ সালে ১০টি, ২০১৪ সালে ২টি, এবং ২০১৫ সালে অনুমতি পেয়েছে ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়।

অভিযোগ আছে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশই অনুমোদন দেয়া হয় দলীয় বিবেচনায়। সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনেই রাজনৈতিক ব্যক্তি না হয় ব্যবসায়িক গোষ্ঠি জড়িত। দলীয় সরকার পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। বিগত বিএনপি-জমায়াত জোট সরকারের সময়ও দলীয় বিবেচনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়া হয়। এমনকি জোট সরকারের শেষ কার্যদিবসেও একটি বেসরকারি সংস্থাকে ঢাকায় এবং একজন মন্ত্রীকে চট্রগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এর কুফল নিরীহ শিক্ষার্থীদের ভোগ করতে হবে কেন?

সম্প্রতি বিবিসিতে প্রচারিত এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছেন এমন ৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থীই পড়ছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, কিন্তু এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১০টির মান ‘ভালো’। বাকিগুলোর মান ‘মোটামুটি’, অনেকগুলোর মান ‘খুব খারাপ’। এমন চিত্রই ওঠে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুির কমিশনের এক জরিপে পাওয়া তথ্যে।

কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকাসহ সারাদেশে ৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে চার লাখের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মো: মহব্বত খান বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সব একই মানের নয়। শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধা, শিক্ষকের মান, অবকাঠামো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র সবদিক থেকে পার্থক্য রয়েছে’। তিনি আরও জানান, ‘৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৬টির মান মোটামুটি। তার মধ্যে ১০টি ভাল মানের। মঞ্জুরী কমিশনের জরিপে তারা এমন তথ্য পেয়েছেন’।

সূত্রমতে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি’র ক্ষেত্রে একক কোনো কাঠামো নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের ব্যয়কে ভিত্তি করে টিউশন ফি নির্ধারণ করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান, শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধা কতোটা দেয়া হচ্ছে, শিক্ষকের মান-এসব বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেরা টিউশন ফি নির্ধারণ করে বলে জানা গেছে। এই ফি প্রতি সেমিস্টারে একটা ক্রেডিটের জন্য তিন থেকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত আছে। তবুও যদি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়, তা জাতির জন্য লজ্জার বিষয়।

সাব্বির আহমেদ সুবীর    কবি, সাংবাদিক ও কলাম লেখক

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts