মুস্তাফিজ ম্যাজিকে রংপুরের হার

সংক্ষিপ্ত স্কোর: রাজশাহী কিংস-১৩৫/৮, রংপুর রাইডার্স-১৩০/৬

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে জয়ের জন্য রংপুরের টার্গেট ১৩৬ রান। এই রান তাড়া করতে নামা রংপুরের ওপেনিং জুটি দেখে ক্রিকেটপ্রেমীরা চমকে উঠল। বিপিএলের দর্শকদের একেবারে চমকে দিয়ে ক্রিস গেইলের সঙ্গী যে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা নিজে। ১৮ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে বহু চমক দেখালেও, এবারই প্রথম ওপেনিংয়ে নেমে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেন তিনি।

তবে মাশরাফী চমকের দিনে হেরে গেছে তার দল। রাজশাহীর কাছে ৫ রানে হেরেছে তারা। পাঁচ ম্যাচে এটি রংপুরের তৃতীয় হার। আর চার ম্যাচে দ্বিতীয় জয় পেল রাজশাহী।

প্রথম ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৩৫ রান করে রংপুর। জবাবে ৬ উইকেটে ১৩০ রানে থামে রংপুরের ইনিংস।  শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১০ রান, মুস্তাফিজের ওভারে ৪ রানের বেশি নিতে পারেনি দুই ব্যাটসম্যান রাইলি রুশো ও ফরহাদ রেজা।

মুস্তাফিজের করা শেষ ওভারে রংপুরের দরকার ছিল ৯ রান। হাতে ছিল ৪ উইকেট। ৪২ রানে রাইলি রুশো অপরাজিত থাকায় ম্যাচটা মাশরাফীদের নাগালেই ছিল। প্রথম বলে ডিপ পয়েন্ট খেলে সিঙ্গেল নিয়ে প্রান্ত বদলাতেই বদলে যায় ম্যাচের ভাগ্য।

মুস্তাফিজের পরের তিন ডেলিভারি ব্যাটেই ছোঁয়াতে পারেননি ফরহাদ রেজা। ওভারে পঞ্চম বলটাও ডট হতে পারত। তবে উইকেটরক্ষকের হাতে বল গেলে প্রান্ত বদল করে ফেলেন দুই ব্যাটস্যান। শেষ বলে দরকার পড়ে ৭ রান। কিন্তু এক রানের বেশি নিতে পারেননি রুশো। ৪৪ রানে অপরাজিত থাকা ইনিংসটি দেখেনি আলোর মুখ।

বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ১৩৫ রানের পুঁজি নিয়েও ম্যাচ জিতে নিল রাজশাহী কিংস। শেষ ওভারের নাটকীয়তার পর মাশরাফীর দলকে মিরাজবাহিনী হারিয়েছে ৫ রানে। মোস্তাফিজ ৯ রান ডিফেন্ড করে রাজশাহীর হারের বৃত্ত ভাঙেন।

ছোট লক্ষ্যে ক্রিস গেইলের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমে পড়েন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। বিপিএলের আগের দুটি আসরে তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে চমক দেখানো বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক জাগান বিস্ময়।

তবে ইনিংসের গোড়াপত্তন সফল হননি। রানের খাতা খোলার আগেই কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে।

এর আগে গত বছরের মার্চে ফতুল্লায় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে নামেন আবাহনী লিমিটেডের অধিনায়ক মাশরাফী। ক্যারিয়ারে প্রথমবার ওপেনিং করেও সফল হতে পারেননি। আউট হন ৭ রান করে।

অন্য ওপেনার গেইল ভালো শুরু করলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। রাব্বির বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে করেন ১৪ বলে ২৩। মোহাম্মদ মিঠুনের প্রতিরোধ গড়া ৩০ রানে জয়ের দিকেই ছুটছিল রংপুর। কিন্তু শেষ দিকে ইসুরু উদানা ও মোস্তাফিজুর রহমানের দারুণ বোলিংয়ে সহজ লক্ষ্যটা হয়ে যায় খুব কঠিন। শেষ ৪ ওভারে ৫ উইকেট হাতে রেখে ৩৩ রানের সহজ সমীকরণ মেলাতে পারেনি মাশরাফীর দল।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি রাজশাহী। মাশরাফীর বলে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। এ ম্যাচেই দুই অধিনায়কই নামেন ওপেনিংয়ে। অথচ ওয়ানডে দলে তারা ৮-৯ নম্বরে ব্যাট করেন।

অপর ওপেনার মুমিনুল হক ১৬ বলে ১৪ রান করে স্টাম্পড হন সোহাগ গাজীর বলে। সৌম্য এসে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৩ বলে ১৮ করে শিকার হন মাশরাফীর।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে মোহাম্মদ হাফিজ ও জাকির হাসান ৫৪ রান যোগ করলে মাঝারি সংগ্রহের দিকে ছুটতে পারে কিংসরা। জাকির শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩৬ বলে ৪২ রান করে। আর তাতেই ১৩৪ রানের পুঁজি পায় মিরাজের দল। দারুণ বোলিং সেটিই যথেষ্ট হয় শেষ পর্যন্ত।

Print Friendly

Related Posts