চিটাগংকে জিততে দেননি মুস্তাফিজ

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বিপিএলে বিদায়ের সুর। গতকাল দুপুরের ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে খুলনা টাইটান্স। বিদায় ঘন্টা বাজতে চলেছিল সন্ধ্যায় নামা রাজশাহী কিংসেরও।

তবে মরার আগে দারুণভাবে জ্বলে উঠল তাদের ব্যাটসম্যানরা। কার্যকরী ফিফটি তুলে নিলেন ক্রিস চার্লস, মাঝে ঝড় তুললেন রায়ান টেন ডেসকাট, শেষ দিকে ব্যাটে ঝঙ্কার তুললেন ক্রিস্টিয়ান জোঙ্কার। আর তাতেই ৪ উইকেটে ১৯৮ রানের পাহাড় গড়ে ২০১৬ সালের রানার্সআপরা।

বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালোই লড়ল চিটাগং ভাইকিংসও। ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়ালেন মোহাম্মদ শাহজাদ, ইয়াসির আলী, মুশফিকুর রহিম, সিকান্দার রাজারা। তবে ডেথ ওভারে মুস্তাফিজ জাদুতে পেরে ওঠেনি স্বাগতিক শিবির। জয়ের খুব কাছে গিয়েও ২ উইকেট হাতে রেখে থেমেছে ১৯১ রানে। ৭ রানের রোমাঞ্চকর এই জয়ে প্লে অফের লড়াইয়ে টিকে থাকল মেহেদী হাসান মিরাজের দল।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের রানপ্রসবা উইকেট দু’হাত ভরেই দিয়েছে আগে ব্যাট করা দলগুলোকে। সেই তালিকায় বাদ ছিলনা রাজশাহীও। গতকাল শুরুটা করে দিয়েছিলেন এবারের বিপিএলে ব্যর্থতার আবর্তে ঘুরপাক খাওয়া সৌম্য সরকার। জাতীয় দলের এই ওপেনার আর ক্রিস চার্লসের দারুণ বোঝাপড়ায় দূর্দান্ত ভীত পায় রাজশাহী। দুই পাশ থেকে সমান তালে রান তোলায় দলীয় ৫০ আসে ৬ষ্ঠ ওভারেই। তবে এর পর আর বেশিদূর এগুতে পারেন নি সৌম্য। খালেদ আহমেদকে বড় শট খেলার লোভে লং অনে ধরা পড়েন মুশফিকের হাতে। অপরপ্রান্তে তখনও চলছিল চার্লস ঝড়।

ছন্দ কাটায় এদিন শুরু থেকেই সাবধানী ছিলেন এবারের আসরের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান লরি ইভান্স। দেখে শুনে খেলেছেন প্রতিটি শট। ধীরে ধীরে খুলেছেন হাত। অপর প্রান্তে চার্লস কিছুটা মারমুখী হওয়ায় ১২তম ওভারে দল শতরানের দেখা। তখনও নির্বিকার ইভান্স। যেন মারতে ভুলে গেছেন! স্বভাববিরুদ্ধতার কারণেই কি-না বেশিদূর টানতে পারেন নি এদিন। সেই খালেদের বলেই উইকেটের পিছনে শাহজাদের হাতে ধরা পড়েছেন খোঁচা মেরে।

এদিকে আগের বলে ফিফটির দেখা পেয়ে গেছেন চালর্স। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে নেমেই ঝড় তোলেন রায়ান টেন ডেসকাট। নাঈম হাসানের এক ওভারেই বিশাল বিশাল তিন ছক্কা! সেই ছন্দে গা ভাসাতে গিয়ে ৫৫ রানে থামেন চার্লস। ক্যারিবিয়ান বিষ্ফোরক ব্যাটসম্যানের ৪৩ বলের ইনিংসটি ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো। সময়ের প্রয়োজনে এসেই স্বাগতিক বোলারদের উপর চড়াও হন নতুন ব্যাটসম্যান ক্রিস্টিয়ান জঙ্কার। দক্ষিণ আফ্রিকান এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ব্যাটে ঝঙ্কার তোলার আগেই ওপাশে রান আউটে কাটা পড়েন ডেসকাটে। তার ১২ বলে তার ২৭ রানের ইনিংসটি ৪টি ছক্কায় মোড়ানো। তবে ডেলপোর্টের করা ইনিংসের শেষ বলে আউট হবার আগ পর্যন্ত ঝলসেছে জঙ্কারের ব্যাট। ১৭ বলে এর চার ও তিন ছক্কায় সাজানো তার ৩৭ রানে ভর করেই চিটাগংকে বিশাল লক্ষ্য দেয় রাজশাহী।

শুরু আর শেষের অমিল বোঝাতে একটি পরিসংখ্যানই যথেষ্ট, শেষ ৫ ওভারে মিরাজের দল তুলেছে ৭৮ রান। শক্ত ব্যাটিং লাইনআপে ভর করে কেন দুই ম্যাচেই টস জিতে বোলিং বেছে নিয়েছেন চিটাগং অধিনায়ক তা এদিন হারে হারে টের পেয়েছে রাজশাহী। শুরুর ঝড়টা গেছে কামরুল ইসলাম রাব্বীর উপর দিয়ে। প্রথম বল দেখে শুনে ছাড়লেও ঐ ওভারে তিন ছক্কা আর এক চারে ২২ রান তোলেন মোহাম্মদ শাহজাদ। ২২ বলে ফিফটির এক রান আগে থামে সেই ঝড়। সেখান থেকে শুরু করেন ইয়াসির আলী। ৩৮ বলে ৭ চার আর দুই ছক্কায় থামেন ৫৮ রানে। মুশফিক (২২) আর সিকান্দার রাজার লড়াইয়েও শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি চট্টলার দলটি। শেষ ওভারে দুই উইকেট তুলে নিয়ে বলতে গেলে পারতে দেননি মুস্তাফিজ।

Print Friendly

Related Posts