বদরুজ্জামান জামান, প্যারিস : ‘সাহসী যৌবনে সুন্দর আগামী ’- এই স্লোগানে ‘বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন ফ্রান্সে’র উদ্যোগে পঞ্চমবারের মতো ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী একুশে বইমেলা, শিশুদের চিত্রাঙ্কন , আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন সিপিবি ফ্রান্স শাখার সম্পাদক- কমরেড আহাম্মেদ আলী দুলাল।
যুব ইউনিয়ন ফ্রান্স কমিটির সভাপতি- রমেন্দ্র কুমার চন্দের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক- ফাহাদ রিপনের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি- হাসান হাফিজুর রহমান সোহেল, বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন- যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আলম মামুন। বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ ফ্রান্সের সভাপতি- মুক্তিযুদ্ধা জামিরুল ইসলাম মিয়া, লেখক ও আবৃত্তিশিল্পী কবি রবি শংকর মৈত্রী, সাংবাদিক এম এ হাসেম, সাংবাদিক আবুল মুমিত রুমেল, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জুয়েল দাস রায় লেলিন, যুব ইউনিয়ন নেতা রহমত আলী চৌধুরী সুজন ।
উপস্থিত ছিলেন- সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসনাত জাহান, কণ্ঠশিল্পী কুমকুম সাইদা, পুঁথিশিল্পী কাব্য কামরুল,চিত্রশিল্পী শাহাদাত হোসেন, ফ্রান্স বিএনপি নেতা মোঃ আবু তাহের, কমিউনিটি নেতা টি এম রেজা, সোহেল ইবনে হোসেনসহ কমিউনিটির নানা শ্রেণী পেশার মানুষ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসান হাফিজুর রহমান সোহেল বলেন- প্যারিসের এই বইমেলায় আমি এক খণ্ড বাংলাদেশ খুঁজে পাচ্ছি। যুব ইউনিয়ন ফ্রান্স কমিটি যে বইমেলার আয়োজন করেছে সেজন্য আমি কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আশা করবো এই বইমেলার ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত রাখেন।
তিনি বলেন- এই মুহূর্তে যে তিনটি স্তম্ভের উপর বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে এর একটি হচ্ছে রেমিটেন্স । আমাদের এক কোটির বেশি ভাইবোন প্রবাসে থাকেন , তারা বিদেশে অর্থ উপার্জন করে দেশে রেমিটেন্স পাঠায় । এটি আমাদের একটি বড় স্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়েছে । আমাদের গার্মেন্টস সেক্টর এবং কৃষি সেক্টর অন্য দুটি স্তম্ভ । আমাদের প্রবাসি ভাইয়েরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ প্রবাসের নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় কিন্তু আমাদের দেশের দূতাবাসগুলো সমস্যা সমাধানে কোন প্রকার সহযোগিতা করেন না । আমাদের প্রবাসিদের সমস্যা সমাধানে দূতাবাসগুলোকে কার্যকর ভূমিকা আহবান জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন- প্রবাসে বেড়ে উঠা এই প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষা সংস্কৃতির ইতিহাস ঐতিহ্য পরিচয় করে দিতে ও বাংলা ভাষা চর্চার ক্ষেত্রে বইমেলা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। ভবিষ্যতে এধারা অব্যাহত রাখার আহবান জানান ।
মেলায় একুশ উপলক্ষে প্রকাশিত পাঁচটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এবারের মেলায় অনেকগুলো স্টল অংশগ্রহণ করে। দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে । তারাতাদের পছন্দের লেখকের বই কিনেছেন । তাছাড়াও ফ্রান্স প্রবাসী কয়েকজন লেখক নতুন প্রকাশিত বইসহ স্টলে দেখা গেছে । তাদের একজন জানালেন এবারের মেলায় তাঁর নতুন প্রকাশিতবইয়ের বিক্রি বেশ ভালই হয়েছে ।
শেষ পর্বে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল একুশের গান, দেশাত্মবোধক গান, গণসংগীত ও আবৃত্তি। পরিবেশন করেন যুব ইউনিয়নের শিল্পীবৃন্দ , ফ্রান্সে বেড়ে ঊঠা এই প্রজন্মের শিশু কিশোর এবং ছিল স্থানীয় বিশিষ্ট শিল্পিদের পরিবেশনা ।