উড়োজাহাজের সেই ছিনতাইকারী নিহত

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ টান টান উত্তেজনার পর চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টা ঘটনার অবসান হলো আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে। কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হয়েছেন। ওই উড়োজাহাজ থেকে যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

কমান্ডো অভিযান নিয়ে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ২৫–২৬ বছর বয়সী অস্ত্রধারী তরুণকে আটক করা হয়। পরে তিনি মারা যান।

ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার বেড়াজাল ডিঙিয়ে অস্ত্র নিয়ে রোববার বিমানের দুবাইগামী ফ্লাইটে উঠে পড়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তিনি পাইলটের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তার ‘পারিবারিক সমস্যা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইছিলেন বলে বিমানযাত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে উড়োজাহাজটি শাহ আমানতে অবতরণের পর আইনশঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তা ঘিরে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পর অভিযানে নামে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডোরা। কমান্ডো অভিযান শুরুর ৮ মিনিটের মধ্যে সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থার বোয়িং-৭৩৭ উড়োজাহাজটি মুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এম নাঈম হাসান।

রাত ৮টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারীকে জখম অবস্থায় আটক করা হয়েছে। তার পৌনে ১ ঘণ্টা পর আরেক সংবাদ সম্মেলনে এসে সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জানান, আহত ওই ব্যক্তি মারা গেছেন।

নিহত ওই ব্যক্তির নাম ‘মাহদী’- শুধু একটুকুই বলতে পেরেছেন অভিযানে থাকা সেনা ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা। তার আর কোনো পরিচয় তিনি দিতে পারেননি।

অভিযানের আগেই বিমানের ১৩৪ জন যাত্রীর সবাই নিরাপদে নেমে আসেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছিলেন। ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী একজন ক্রুকে জিম্মি করেছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে বেবিচক ও সেনাবাহিনীর সংবাদ সম্মেলনে জানান। তবে পাইলটসহ ক্রুদের সবাই অক্ষত বলেই জানানো হয়েছে।

এই ঘটনায় সন্ধ্যা পৌনে ৬টার পর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অভিযান শেষে রাত ৮টা থেকে বিমান ওঠানামা স্বাভাবিক বলে বেবিচক চেয়ারম্যান জানান।

একজন ক্রু জানান, বিকালে ঢাকা থেকে উড়োজাহাজটি উড়ে যায়। আকাশে প্রায় ১৫ হাজার ফুট ওপরে উঠার পর যাত্রীদের আসনে থাকা এক ব্যক্তি উঠে ককপিটের দিকে আসেন। এ সময় ওই ব্যক্তি এক ক্রুর কাছে গিয়ে বলেন, আমি বিমানটি ছিনতাই করব। আমার কাছে পিস্তল ও বোমা আছে। ককপিট না খুললে আমি বিমান উড়িয়ে দেব। এটা বলে সঙ্গে সঙ্গে একটি পিস্তল ও বোমাসদৃশ একটি বস্তু বের করে ব্যক্তিটি।

ওই ক্রু আরো জানান, এর মধ্যে অন্য কেবিন ক্রুরা ককপিটে থাকা পাইলট ও সহকারী পাইলটকে গোপনে বার্তা দেন যে, উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। ততক্ষণে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করে উড়োজাহাজ। এরপরই রানওয়েতে বিমানটি ঘিরে ফেলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ।

Print Friendly

Related Posts