মেট্রো নিউজ : বুড়িগঙ্গা বললে অনেকে নাক ছিটকান। ভাবেন হাজারো আবর্জনায় ভরপুর একটা জায়গা। বুড়িগঙ্গা মানে ময়লা আবর্জনা আর দুর্গন্ধযু্ক্ত পানির এক অসহ্য নদী। আর সে বুড়িগঙ্গার পাশে পার্ক। মনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া!
ঢাকার অদূরে শ্যামপুরে প্রায় সাত একর জায়গার ওপর গড়ে উঠেছে পার্কটি। নদী দখল ঠেকাতে এবং পরিবেশের উন্নয়নে ২০১২ সালের অক্টোবরে ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পার্কটি নির্মাণ করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। শহরের এই ইট-বালি-সিমেন্টের নাগপাশে পার্কটিকে সবুজের গহীন অরণ্যই বলা যায়। আর একপাশে শানবাঁধানো ঘাটের লাগোয়া বুড়িগঙ্গা নদীর উন্মুক্ত প্রান্তর। সব মিলিয়ে পার্কটির পরিবেশ অতুলনীয়।
পার্কের ভেতরের পুরো জায়গা জুড়েই গাছগাছালিতে ভরপুর। মাঝে মাঝে বিভিন্ন ফুলের গাছে ফুটে থাক ফুল দেখে মনে হতে পারে এটা কোনো পার্ক নয়, কোনো রাজা তার রাণীকে খুশি করার জন্য নিজের হাতে সুনিপুণভাবে সাজিয়েছেন এই বাগান। আর গাছের সারির ফাঁকে ফাঁকে পাকা রাস্তা। রাস্তা আর গাছগাছালির ফাঁকে ফাঁকে আবার ইট-সিমেন্টের তৈরি বেঞ্চ।বেঞ্চে বসে বসে গল্প করছে কপোত-কপোতিরা। তবে কেউ আবার ভাববেন না কপোত-কপোতিদের জন্য ঝুপড়ি আছে এই পার্কে। এই রকম মনোমুগ্ধকর পরিবেশে আপনি ভিন্ন ভাবনা ভাবতেই পারবেন না।
পার্কের যে পাশে (দক্ষিণ) শান বাঁধানো ঘাট তার পাশেই রয়েছে একটি ছোট সেতু। সেতুতে দাঁড়িয়ে দেখা যায় বুড়িগঙ্গা দিয়ে যাতায়াতরত নৌ যানবাহন আর নদীর অপার সৌন্দর্য। পার্কের শানবাঁধানো লাগোয়া বুড়িগঙ্গায় নৌকা আর স্পিড বোটে চড়তে ২০টাকায় দুই চক্কর।
নগর জীবনে হাঁপিয়ে উঠছেন? দূরে কোথাও যাওয়ার মতো হাতে ছুটি নেই, কিন্তু খোলা আকাশের নিচে গাছগাছালিতে ভরপুর সবুজের অরণ্যে ঘুরতে মন চায়। তবে চলে যান বুড়িগঙ্গার ইকোপার্কে। শুধু একটি স্নিগ্ধ বিকেল হলেই চলবে। আপনার ভাল লাগবেই।
যাত্রাবাড়ী থেকে লেগুনা বা রিকশা। ভাড়া নিবে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর গুলিস্তান থেকে ফতুল্লাগামী বাস। ভাড়া ২০ থেকে ২৫ টাকা। তবে রিকশায়ও যাওয়া যায়। ভাড়া একটু বেশি নিবে। সপ্তাহে সাতদিনই খোলা থাকে পার্কটি। পার্কের টিকেট মূল্য মাত্র ৫ টাকা।