বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমান ভাগ নিশ্চিতকরণের নামে কুরআনের আইনের পরিবর্তনের পায়ঁতারা করলে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে না। শরীয়তের আইন পরিবর্তনের সাহস দেখালে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।
তিনি বলেন, সরকার নাস্তিক-মুরতাদদের চক্রান্তে পা দিয়ে কুরআনের আইন পরিবর্তনের পায়তারা করছে। এধরণের সাহস দেখালে বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলমানরা নিরবে বসে থাকবে না। তিনি বলেন, নাস্তিক-মুরতাদগিরি দেখালে এদেশ থেকে বের হয়ে দেখাও। এদেশ মুসলমানদের দেশ, বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশ। এদেশে ইসলাম নিয়ে চক্রান্ত করলে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া দেয়া হবে। তিনি বলেন, ইসলাম নারীদের সমান অধিকার নয়, অগ্রাধিকার দিয়েছে। নারীদের অধিকার দিতে চাইলে কুরআন বর্ণিত নীতি বাস্তবায়ন করুন।
আজ বুধবার সকাল ১১টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম পূর্ব চত্ত্বরে মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ঢাকা মহানগর আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুশিয়ারী দেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত র্যালী পূর্ব সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুর রহমান। বক্তব্য রাখেন মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, মুফতী ছিদ্দিকুর রহমান, হাফেজ শাহাদত হুসাইন প্রধানিয়া, ইমাম হোসাইন ভুইয়া প্রমুখ। সমাবেশের পর একটি বিশাল র্যালী বায়তুল মোকাররম, পল্টন মোড় হয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে সমাপ্ত হয়।
মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৮ বছর পরও শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। শ্রমিকরা বার বার শোষণ বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন হলে শ্রমিকরা তাদের শ্রমির মর্যাদা পাবে।
অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, সভ্যতার কারিগর, উৎপাদন ও উন্নয়নের কর্ণধার, সুখী-সমৃদ্ধ কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অগ্রসৈনিক ও মানবতার কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ কৃষক শ্রমিকগণকে সম্মানিত নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। তাঁদের প্রকৃত মর্যাদা ও ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল শ্রমিককে আইডি কার্ড প্রদান করে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। তাঁদের পরিবারের শিক্ষা, চিকিৎসা ও পরিবহন ব্যয় অর্ধেক করতে হবে। সেইসাথে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নসহ ১৭ দফা দাবী মেনে নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বলেন, উন্নয়ন ও উৎপাদনের কারিগর শ্রমিকরা নিপীড়িত নিস্পেষিত। শ্রমিকদের অভুক্ত ও অবহেলায় রেখে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব নয়। তিনি ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্বের অবসান, বিদেশী বিনিয়োগের মাধ্যমে নতুন নতুন কলকারখানা স্থাপন, বন্ধ কল-কারখানা চালু ও রুগ্নশিল্প কারখানাগুলোতে উৎপাদনের স্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি এবং শ্রমিকের সর্বনিম্ন মজুরি ১৬,০০০/- টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শ্রমিক মালিক এক হয়ে কাজ করলে উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং পরস্পর ভালবাসা সৃষ্টি হবে। তখন শ্রমিকরা আন্তরিত হয়ে কাজ করবে। তিনি বলেন, কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই শ্রমিকের ওপর কঠিন জুলুম। তাই যৌক্তিক কারণ ও ছাঁটাইয়ের শর্ত পূরণ ছাড়া শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না