নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে (জানুয়ারি থেকে মে) ওয়ালটন ফ্রিজ বিক্রিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭৭ শতাংশ। এ সময় সারা দেশে ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে ৯ লাখ ২ হাজার ৬৪৮ ইউনিট। আগের বছর একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৫ লাখ ৯ হাজার ১২৯ ইউনিট।
সূত্রমতে, ২০১৯ সালে ওয়ালটনের টার্গেট ২০ লাখ ফ্রিজ বিক্রি করা। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘১৯ এ ২০’। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে মে মাসে ৮ লাখ ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছিল। বিপরীতে এই সময়ে ওয়ালটনের ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে ৯ লাখ ২ হাজার ৬৪৮ ইউনিট। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১ লাখের বেশি ফ্রিজ বিক্রি করেছে বাংলাদেশী মাল্টিন্যাশনাল ইলেকট্রনিক্স ব্র্র্যান্ড ওয়ালটন।
ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ও ফ্রিজ বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুর্শেদ বলেন, স্থানীয় বাজারে বেশ কয়েক বছর ধরে গ্রাহকপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ওয়ালটন ফ্রিজ। মোট চাহিদার প্রায় ৭৫ ভাগই পূরণ করছে ওয়ালটন। মার্কেট শেয়ার চলতি বছর আরো বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।
এর পেছনে তিনি যুক্তি দেখান, এ বছর বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের নতুন মডেলের ইনভার্টার ও গ্লাস ডোরের ফ্রস্ট, নো-ফ্রস্ট ও ডিপ ফ্রিজ বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। এসব ফ্রিজের দাম যেমন কম, তেমনি মানও খুব উন্নত। ফ্রিজ কম্প্রেসরের গ্যারান্টি সুবিধা আরো দুই বছর বাড়িয়ে ১২ বছর করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শ্রেষ্টত্যের আত্মবিশ্বাসে ১ বছরের রিপ্লেসমন্টে গ্যারান্টি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের আওতায় ফ্রিজের ক্রেতাদের নতুন গাড়ি, হাজার হাজার পণ্য ফ্রি, কোটি কোটি টাকার ক্যাশ ভাউচারসহ অসংখ্য সুবিধা দেয়া হয়েছে। ফলে, বছরের শুরু থেকে প্রতিমাসেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রয়োত্তর সেবাকে অনলাইন কার্যক্রমের আওতায় আনতে ডিজিটাল কাস্টমার ডাটাবেজ তৈরি করছে ওয়ালটন। এজন্য সারা দেশে চালু করা হয়েছে ডিজিটাল ক্যাম্পেইন। এখন চলছে সিজন ফোর। এর আওতায় দেশের যে কোনো ওয়ালটন শোরুম থেকে ফ্রিজ কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই ক্রেতারা পেতে পারেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক ও ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মাশরাফি বিন মর্তুজার অটোগ্রাফযুক্ত গোল্ড এডিশন ক্রিকেট ব্যাট ও বল। পেতে পারেন হাজার হাজার টিভিসহ অসংখ্য পণ্য ফ্রি। এছাড়াও থাকছে কোটি কোটি টাকার নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার সুযোগ।
উল্লেখ্য, এর আগে ঈদ ও বিশ্বকাপ উপলক্ষে গত রোজায় ক্রেতাদের ফ্রিজ কিনলে নতুন গাড়ি পাওয়ার সুযোগ দিয়েছিল ওয়ালটন। সেসময় নতুন গাড়ি পেয়েছিলেন বেশ কয়েকজন ক্রেতা।
ওয়ালটন নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিম জানান, ফ্রিজ বিক্রিতে প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। প্রবৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে চলতি বছরেও। এ বছর ২০ লাখ ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রথম ৫ মাসেই ৯ লাখের বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে। আসছে ফ্রিজ বিক্রির প্রধান মৌসুম কোরবানির ঈদ। সারা বছরের মোট ফ্রিজ বিক্রির অর্ধেকের বেশি হয় এ সময়। আশা করছি, কোরবানি ঈদের মধ্যেই এ বছরের ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট পূরণ হয়ে যাবে। কেননা, স্থানীয় বাজারে ওয়ালটন ফ্রিজ এখন হটকেক।
বিপণন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় বাজারে ১৩৭ মডেলের ফ্রস্ট, নন-ফ্রস্ট, ডিপ ফ্রিজ ও বেভারেজ কুলার ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১০২ মডেলের ফ্রস্ট ও ২১ মডেলের নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর, ১২ মডেলের ফ্রিজার এবং ২ মডেলের বেভারেজ কুলার।
ওয়ালটন ফ্রস্ট ফ্রিজের মধ্যে রয়েছে চোখ ধাঁধানো ডিজাইনের গ্লাস ডোর, ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার ও বিএসটিআই’র ‘ফাইভ স্টার’ এনার্জি রেটিং প্রাপ্ত রেফ্রিজারেটর। এসব ফ্রিজ স্ট্যাবিলাইজার ছাড়াই নিশ্চিন্তে চালানো যাবে।
নন-ফ্রস্ট ফ্রিজের মধ্যে ইনভার্টার ও গ্লাস ডোরের ৫৬৩ লিটারের সাইড বাই সাইড ডোরের নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর গ্রাহক পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ওয়ালটন ফ্রিজে ব্যবহার করা হচ্ছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তিসহ ন্যানো হেলথ কেয়ার, এন্টি ফাংগাল ডোর গ্যাসকেটের মতো বিশ্বের লেটেস্ট সব প্রযুক্তি। তাছাড়া, আন্তর্জাতিক মান যাচাইকারি সংস্থা নাসদাত ইউনিভার্সাল টেস্টিং ল্যাব থেকে মান নিশ্চিত হয়ে ওয়ালটন প্রতিটি ফ্রিজ বাজারে ছাড়া হচ্ছে।
দেশের গন্ডী পেরিয়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন পণ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এবার ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত বিশ্বের বাজারে রপ্তানির বৃহৎ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ ব্র্যান্ড হতে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে ওয়ালটন।