প্রিয়মুখের গর্ব

বিডি মেট্রোনিউজ কবি রফিক আজাদের ‘ভাত দে হারামজাদা…’ কবিতাটি সংকলিত হয়েছে ‘সীমাবদ্ধ জলে, সীমিত সবুজে’ কাব্যগ্রন্থে। বইটি প্রকাশ করেছে ‘প্রিয়মুখ’।

‘ভাত দে হারামজাদা’। এই কবিতায় তিনি যে প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়েছেন, তা অভূতপূর্ব। দেশজুড়ে তখন ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। ভাতের জন্য হাহাকার, মানুষ মরছে অনাহারে। কাব্যভাষায় প্রতিবাদ জানালেন কবি, বিশ্বব্যাপী বুভুক্ষু মানুষের পক্ষে এটি ছিল এক বলিষ্ঠ উচ্চারণ।

তিনি লেখেন-
‘ভীষণ ক্ষুধার্ত আছিঃ উদরে, শরীরবৃত্ত ব্যেপে/ অনুভূত হতে থাকে- প্রতিপলে- সর্বগ্রাসী ক্ষুধা/ অনাবৃষ্টি- যেমন চৈত্রের শষ্যক্ষেত্রে- জ্বেলে দ্যায়/ প্রভুত দাহন- তেমনি ক্ষুধার জ্বালা, জ্বলে দেহ/ দু’বেলা দু’মুঠো পেলে মোটে নেই অন্য কোন দাবী/ অনেকে অনেক কিছু চেয়ে নিচ্ছে, সকলেই চায়ঃ/ বাড়ি, গাড়ি, টাকা কড়ি- কারো বা খ্যাতির লোভ আছে/ আমার সামান্য দাবী পুড়ে যাচ্ছে পেটের প্রান্তর-/ ভাত চাই- এই চাওয়া সরাসরি- ঠান্ডা বা গরম/ সরু বা দারুণ মোটা রেশনের লাল চাল হ’লে/ কোনো ক্ষতি নেই- মাটির শানকি ভর্তি ভাত চাইঃ/ দু’বেলা দু’মুঠো পেলে ছেড়ে দেবো অন্য-সব দাবী।’

১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে তার এই কবিতা। এই কবিতার জন্য তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতার বিরাগভাজন হলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবির ‘স্বাধীনতা’য় হস্তক্ষেপ করেননি বলে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন রফিক আজাদ।

“বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী আর আনওয়ারুল আলম শহীদ, বঙ্গবন্ধুর কাছে আমারে নিয়া গেছিলেন। উনি ব্যাখ্যা চাইলেন। আমি ব্যাখ্যা দিছি, সারা পৃথিবীর নিরন্ন মানুষের প্রধান চাওয়া হলো ভাত। আমি সারা পৃথিবীর লোকের কথা বলছি। আর আমাদের দেশে, নিরন্ন মানুষ এই ভাষাতেই কথা বলে।

“এটা বলার পর উনি বলে, ‘তা বটে!’ আমার কাঁধে হাত রাইখা বলল, ‘ভালো লিখছিস, যাহ’।”

10347554_10152807736704168_8947882653860068130_n

 

প্রিয়মুখ প্রকাশনীর কর্ণধার ‍আহমেদ ফারুক এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন- ‘প্রিয়মুখ থেকে তাঁর একটি বই প্রকাশিত হয়েছিল_ সীমাবদ্ধ জলে, সীমিত সবুজে। এই বইটিতে ‌’ভাত দে হারামজাদা…’ কবিতাটি রয়েছে। এটা প্রিয়মুখের গর্ব যে উনার সবচেয়ে বিখ্যাত বইটি আমরা একুশে বইমেলা ২০১৩ তে প্রকাশ করেছি। প্রিয়মুখ তার রূহের মাগফিরাত কামনা করে।’

কবি শাহ মতিন টিপুর লেখা অবলম্বনে

 

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts