বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশে চলমান মহামারির এই দুঃসময়ে যাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে চিকিৎসার অভাবে রোগী মারা গেছে, সেই ডাক্তারদের নাম জানতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদেরকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার সকালে গণভবন থেকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৫টি জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনায় ঝুঁকি নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তাদেরকে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। আর যারা নিজের জীবনের সুরক্ষায় পালিয়ে গেছেন তারা কোনো প্রণোদনা পাবেন না বলেও জানান তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘শর্ত দিয়ে কাউকে (ডাক্তার) আমি কাজে আনবো না। যাদের মধ্যে এই মানবতাবোধটুকু নেই তাদেরকে প্রণোদনা দিয়ে কাজে আনার কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না। যদি বাংলাদেশে সেরকম দুর্দিন আসে, প্রয়োজনে বাইরে থেকে আমরা ডাক্তার নিয়ে আসবো।
‘কিন্তু এই ধরনের দুর্বল মানসিকতা দিয়ে আমার কাজ হবে না। কাজেই তারা মিটিং করুক আর শর্ত দিক ওই শর্তে আমার কোনো কিছু আসে না। বরং ভবিষ্যতে তারা ডাক্তারি করতে পারবে কিনা সেটাই চিন্তা করতে হবে’ হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী।
ডাক্তারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একজন রুগী আসছে, চিকিৎসা করতে হবে। তার জন্য নিজেকে সুরক্ষিত করা যায়। অ্যাপ্রোন পরে নিন, মুখে মাস্ক লাগান, হাতে গ্লাভস পরেন অথবা স্যানিটাইজার ব্যবহার করেন, হাত ধোন, রোগী দেখেন। রোগী কেন ফেরত যাবে? একজন রোগী দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে সেই রোগী কেন মারা যাবে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র কেন মারা যাবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘এই রোগী যেখানে যেখানে গিয়েছে। সেখানে কোন কোন ডাক্তার দায়িত্বে ছিল, আমি তাদের নামটাও জানতে চাই। কারণ তাদের ডাক্তারি করবার মতো বা চাকরি করবার মতো সক্ষমতা নাই। তাদের বের করে দেওয়া উচিত চাকরি থেকে, এটা আমি মনে করি।’
‘আমরা জানি এটা একটা আতঙ্ক সারাবিশ্বে। সবাইকে সবাই ভয় পাবে। সবাই সুরক্ষিত থাকবে। ইটস ট্রু, মানি আমি। কিন্তু একজন ডাক্তার তার একটা দায়িত্ব থাকে। আর তাদের সুরক্ষার জন্য যা যা দরকার আমরা তো দিয়ে যাচ্ছি, ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। লাগলে আমরা আরও করবো। সেখানে তো আমরা কোনো কার্পণ্য করছি না’ আরও যোগ করেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আবার আমি বলছি যাদেরকে আমরা সামাজিক নিরাপত্তায় সাহায্য দিচ্ছি তাদেরকে তো দিচ্ছিই। কিন্তু এর বাইরের যে শ্রেণিটা, যারা হাত পাততেও পারছে না- তাদের তালিকা করে তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া। এই কাজটা আপনারা করবেন। আর কোভিড-১৯ অর্থাৎ করোনার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যে যে নির্দেশনাগুলো দেওয়া হচ্ছে সে নির্দেশনাগুলো আপনারা দয়া করে মেনে চলবেন।’