ভিডিও কনফারেন্সে বিচার করা যাবে

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ তৈরি করতে একটি অধ্যাদেশের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০-এর খসড়ার’ নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বাংলাদেশ টেলিভিশনের ক্যামেরার মাধ্যমে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ওই ব্রিফিংয়ের অডিও রেকর্ড সাংবাদিকদের সরবরাহ করে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কোভিড-১৯ অবস্থার কারণে সব জায়গায় ফিজিক্যালি আদালত চালানোর সুযোগ নেই। সংক্রণের সম্ভাবনা বেশি হওয়ায় সুপ্রিমকোর্ট থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে যার যার অবস্থানে থেকে যেন বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা যায়।’

দেশে বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী আদালতে মামলার পক্ষরা বা তাদের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবীদের সশরীরে উপস্থিতি থেকে মামলার বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয় বলে জানান সচিব আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘যেহেতু সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনা মহামারি রোধকল্পে এক মাসের বেশি সময় ধরে কতিপয় ব্যতিক্রম ছাড়া আদালতসহ সরকারি, বেসরকারি সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষের সমাগম হয়- এমন সব কর্মকাণ্ডও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেজন্য দীর্ঘ সময় ধরে আদালত বন্ধ থাকায় মামলাজট যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি বিচারপ্রার্থীরা বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে এবং বিচার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সুবিধার্থে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম চালাতে আইনি বিধান প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলে আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্ট মনে করে।’

এই পরিপ্রেক্ষিতে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম চালানোর জন্য ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০’ শীর্ষক একটি অধ্যাদেশের খসড়া মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হলে তাতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

বর্তমানে সংসদ চালু না থাকায় জরুরি ভিত্তিতে এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয় আরেকটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে এটি অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করবে। সংসদ বসার প্রথম দিন এটি সংসদে উপস্থাপন করা হবে।’

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি কার্যকর হলে বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।

করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ বাড়তে থাকায় ভারতের সুপ্রিমকোর্ট ইতিমধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতের বিচারিত কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু আইনি কাঠামো না থাকায় বাংলাদেশে তেমন কোনো ব্যবস্থা করা যাচ্ছিল না।

Print Friendly

Related Posts