আবুল কাশেম, প্যারিস থেকে : গত ২ মে বাংলাদেশ জামাতের সংস্কারপন্থীদের এ বি পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল ঘোষণার পর থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থাকা জামাতের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে লন্ডন ও ইউরোপের দেশসমূহে।
ফ্রান্সেও এর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। ফ্রান্সে দীর্ঘদিন থেকে অবহেলিত জামাতের একটি অংশ । এর মধ্যে দুইজন প্রমিনেন্ট নেতা রয়েছে মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন এবং মোহাম্মদ আল-আমিন। তারা দুজনেই এবি পার্টির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য (আন্তর্জাতিক) মনোনীত হয়েছেন। এনিয়ে আভ্যন্তরীণ ভাবে নড়েচড়ে বসেছে ফ্রান্স জামাত।
গত ২ মে এর পর থেকে প্রায় তিনবার লন্ডন প্রবাসী ফ্রান্স জামাতের সমন্বয়ক জামাত নেতা সুলতান আহমদ এর সভাপতিত্বে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকগ্রুপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সমস্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জালাল আহমেদ, ফারুক আহমদ ভূঁইয়া, হাবিবুর রহমান খান, নজরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, আবুল খায়েরসহ আরো কয়েকজন। এসমস্ত বৈঠকের ব্যাপারে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষার কথা থাকলেও উপস্থিত এক নেতা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তা স্বীকার করেছেন।
ফ্রান্স জামাতের সংস্কারপন্থী সন্দেহের তালিকায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রায় ৪২ জন নেতাকর্মী রয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে সুলতান আহমদ এর কঠোর নির্দেশনাও রয়েছে।
অপরদিকে সংস্কারপন্থী কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেছেন আসলে ফ্রান্সে জামাতের সংস্কারপন্থী বলে কিছু নেই। তবে এখানে দল ও মসজিদ পরিচালনার স্বচ্ছতার প্রশ্নে কিছু নেতাকর্মীদের ভিন্নমত রয়েছে।
ফ্রান্সে সুলতান আহমেদ লন্ডন থেকে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের সিদ্ধি অর্জন এর জন্য এখানে একটি বলয় সৃষ্টি করেছেন। এই বলয়ের বাইরে কেউ কথা বললে তাকে বিভিন্ন ভাবে সংস্কারপন্থী আখ্যা দিয়ে দলের বিভিন্ন কর্মসূচির বাইরে রাখা হয়।
মনির আহমল নামে এক জামায়াত নেতা বলেছেন আসলে এখানে কোন সংস্কারপন্থী নাই । তবে কিছু ভাই এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও সংগঠনের ঊর্ধ্বতন কিছু নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ রয়েছে। তাদের অভিযোগ ফ্রান্স থেকে ফিতরা, যাকাত, কুরবানী ছাড়াও বিগত কয়েক বছরে মসজিদের সংস্কারের উদ্দেশ্যে ও দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে মাসিক উত্তোলিত অর্থের একটা বড় অংশ লন্ডন হয়ে বাংলাদেশে যায । সুলতান আহমদ এর লন্ডনের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে টাকার একটি বড় অংশ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে । তাছাড়া এখানকার কিছু সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা বিষয়ে অনিয়ম ও অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সংগঠনের পক্ষ থেকে ববাবরই এসব অস্বীকার করা হয়েছে।