বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ আজ ছিল পবিত্র রমজানের জুমাতুল বিদা। এ কারণে রাজধানীর মসজিদগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। তবে সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় অনেককেই সচেষ্ট থাকতে দেখা গেছে। রাজধানীর অনেক মসজিদেই জুমার জামাতে বন্ধ হয়ে যায় সড়ক।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দেশে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এতে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে জুমআর বয়ানে।
শুক্রবার (২২মে) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমআর বয়ানে এ আহবান জানান পেশ ইমাম মুফতি মহিউদ্দিন কাশেম।
আজানের পরই মুসল্লিদের মসজিদে প্রবেশ করতে গেট খুলে দেওয়া হয়। গেটে হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করেন।
বেলা পৌনে ১ টার দিকে মুফতি মহিউদ্দিন কাশেম বাংলায় বয়ান দেওয়া শুরু করেন। বয়ানে তিনি বলেন, আজ বিশ্ব করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এ পরিস্থিতির কারণে আমারও স্তব্ধ। আমরা কঠিন সময় পার করছি। মরণব্যাধি করোনার কারণে বাবা সন্তানের কাছে বা সন্তান বাবাকে ছুতে পারছে না। এ সমস্ত অবস্থা দেখে আমরা কি বুঝতে পারি, আল্লাহর পথে আমাদের চলতে হবে। সবকিছুর মালিক তিনিই। আমরা বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত। এগুলো ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর পথে আসতে হবে। এমন জীবন অর্জন করবো, যে জীবন হবে গোনামুক্ত, অপরাধমুক্ত।
মহিউদ্দিন কাশেম বলেন, করোনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। শিক্ষা গ্রহণ না করলে আমাদের জন্য আরো কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। দিন দিন করোনার ভয়াবহতা বেড়ে যাচ্ছে। পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন থাকলে এ রোগের প্রার্দুভাব কিছুটা কমে। আমাদের সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। বাড়ির আশে-পাশে পানি বা ময়লা জমে আছে কি না খেয়াল রাখতে হবে। কারণ সেখান থেকে ডেঙ্গু মশার জন্ম হতে পারে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগুলো পরিষ্কার করতে হবে। আমার কারণে কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। করোনার বিষয়ে প্রশাসন যে নির্দেশনা দিয়েছে তা মেনে চলার আহবান জানান তিনি।
পরিপূর্ণভাবে জাকাত দেওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন মাদ্রাসার উৎস ছিল ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের দান, জাকাত। করোনা পরিস্থিতির কারণে তারা অনেকে যেতে পারেননি। বিত্তবানদের তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দান, জাকাত দেওয়া আহবান জানান মহিউদ্দিন কাশেম।
তিনি বলেন, পত্রিকার পাতা খুললেই বোঝা যায়, অপরাধ কিভাবে বেড়ে যাচ্ছে। খুন, ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। আমরা এ রমজানের ওছিলায় সব পাপ কাজ থেকে, অপরাধ থেকে বিরত থাকবো। আল্লাহর পথে ধাবিত হবো। নিশ্চয়ই আল্লাহ শিগগিরই আমাদের এ রোগ থেকে মুক্তির তওফিক দান করবেন।
তিনি বলেন, ঝড়ে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের সাহায্য করতে হবে। আমরা বিপদগ্রস্ত, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াবো।
জুমার নামাজ শেষে মোনাজাতে দেশবাসী, বিশ্ববাসীর জন্য করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করেন মহিউদ্দিন কাশেম।