বুড়িগঙ্গায় ভেসে উঠল আরেক লাশ, মৃত বেড়ে ৩৪

বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে আরেকটি লঞ্চডুবির ঘটনায় আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে ডুবে থাকা লঞ্চটির পাশে লাশটি ভেসে ওঠে। এ নিয়ে ৩৪ জনের লাশ উদ্ধার হলো।

ভেসে ওঠা লাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নৌ-পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আজাদ হোসেন। তিনি বলেন, এই ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৪০ বছর হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি নিখোঁজের তথ্য থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলবে।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পর সারা দিনের উদ্ধার অভিযানে ৩২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার লঞ্চটি টেনে তোলার সময়ে আরেকজনের লাশ পাওয়া যায়। দুপুর আড়াইটায় উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি টানে বিআইডব্লিউটিএ।

সোমবার সকাল নয়টার দিকে এমএল মর্নিং বার্ড নামের লঞ্চটি মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি এলাকা থেকে সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়। সদরঘাটের কাছেই ফরাশগঞ্জ ঘাট এলাকায় নদীতে লঞ্চটি ডুবে যায়। বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক জানান, ময়ূর-২ নামের একটি লঞ্চ সদরঘাট লালপট্টি থেকে চাঁদপুরের দিকে যাচ্ছিল। লঞ্চটি মর্নিং বার্ডকে ধাক্কা দেয়। এতে মর্নিং বার্ড নামের লঞ্চটি ডুবে যায়। ধাক্কা দেওয়া লঞ্চ ময়ূর-২ জব্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক, মাস্টার, সুকানিসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল রাতে নৌপুলিশ সদরঘাট থানার উপপরিদর্শক মো. শামসুল বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন। এই মামলায় কয়েকজন গ্রেপ্তার আছেন।

সোমবার দুপুর পর্যন্ত উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে ৩০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এছাড়া স্থানীয়রা আরও দুজনকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে লঞ্চডুবির প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে একজনকে জীবিত উদ্ধারের কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস।

রাতভর তল্লাশির পর এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় আবার তল্লাশি শুরু হয়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদের পাশাপাশি নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ এবং বিআইডব্লিউটিএর কর্মীরাও এই অভিযানে অংশ নেন।

দুপুরে নদীতে ডুবে থাকা লঞ্চটির ভেতরে মর্নিং বার্ডের ইঞ্জিন গ্রিজার আশিক হোসেনের লাশ পান ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা।

সোমবার পাওয়া ৩২ জনের লাশ পরিচয় শনাক্তের পর সোমবারই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নদীর ৬০-৭০ ফুট গভীরে উল্টে থাকা লঞ্চটিকে টেনে তুলতে ১১টি এয়ার লিফটিং ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। এর একেকটি ব্যাগ ৮টন ওজন তুলতে পারে। বিআইডব্লিউটিএর ছোট উদ্ধারকারী জাহাজ দুরন্তও এ কাজে যুক্ত ছিল।

Print Friendly

Related Posts