মেট্রো নিউজ : সরকার সমর্থিত ডাক্তারদের সংগঠন স্বাধিনতা চিকিৎসক পরিষদের এক যুগ পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামি ১৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের স্থবিরতা ঝেড়ে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে স্বাচিপের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। অনেকেই পদ পেতে শুরু করেছেন লবিং গ্রুপিং।
এদিকে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির আকার বৃদ্ধি করা হয়েছে। সম্প্রতি স্বাচিপের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে প্রায় দুই যুগ পর সংবিধান সংশোধন ও পরিবর্তন করা হয়। এতে কমিটির আকার ১০১ থেকে ১৫১ সদস্যতে বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। বর্ধিত কমিটিতে দুইজন করে সহ-সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একজন যুগ্ম-মহাসচিবের পদ বৃদ্ধির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এছাড়া কমিটিতে নতুন তিনটি সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক পদ (আইন ও পরিবেশ, চিকিৎসা শিক্ষা ও অ্যাপ্যায়ন) সৃষ্টির সিদ্ধান্ত হয়। গত ৩১ আগস্ট দুপুর ১টায় অনুষ্ঠিত এক সভায় আগামী ৬ নভেম্বর স্বাচিপের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন সময় দিতে না পারায় সম্মেলনের তারিখ ১৩ নভেম্বর করা হয়। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, এক যুগেরও বেশি সময় পরে হতে যাচ্ছে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সম্মেলন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক এমপিসহ রয়েছেন বিভিন্ন পর্যায়ের হেভিওয়েট প্রার্থী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বর্তমান কমিটির একজন প্রভাশালী নেতা বলেন, সম্মেলন ঘোষণার পর সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে যারা ইতিমধ্যে প্রচার কাজ শুরু করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএমএ ও স্বাচিপের বর্তমান মহাসচিব প্রফেসর ডা. ইকবাল আর্সলান, হলিফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. মনিরুজ্জামান ভূইয়া, বিশিষ্ট নিউরোসার্জন ও বিসিপিএস এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. কনক কান্তি বড়–য়া, প্রফেসর ডা. কাজী শহিদুল আলম।
এছাড়া মহাসচিব পদে যাদের নাম আলোচনায় রয়েছে তাদের মধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থী হচ্ছেন এসেনসিয়াল ড্রাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বর্তমান স্বাচিপের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর ডা. এহসানুল কবির জগলুল। এই পদে অন্যরা হলেন, বিএসএমএমইউ’র সাবেক প্রক্টর প্রফেসর ডা. জাকারিয়া স্বপন, বিএমএ’র যুগ্ম মহাসচিব ডা. আব্দুল আজিজ, প্রমুখ।
সম্মেলন সম্পর্কে বিএসএমএমইউ স্বাচিপ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো বলেন, প্রায় ১৩ বছর পর স্বাচিপের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী আনন্দিত। স্বাচিপ সূত্র জানায়, সম্মেলন উপলক্ষে ইতিমধ্যে প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়–য়াকে আহ্বায়ক এবং প্রফেসর মনিরুজ্জামান ভূইয়াকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদ গঠন কারা হয়েছে। সম্মেলন প্রস্তুতি ও সম্পন্নের দায়িত্ব তাদের ওপর প্রদান করা হয়। এছাড়া ডা. সিএম দেলায়ার রানাকে আহ্বায়ক এবং ডা. মোসাদ্দেক হোসেনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি যোগ্য মনে করেন তাহলেই কেবল বিএসএমএমইউ’র সাবেক ভিসি প্রফেসর ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এ সংগঠনের দায়িত্ব নিতে রাজি আছেন বলে জানা গেছে। সংগঠণের মহাসচিব পদ কে ঘিরে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।
বিশেষ করে বর্তমান সিনিয়র সাংগঠণিক সম্পাদক ডা. এহসানুল কবির মহাসচিব হতে পারেন বলে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। নিরবে নিভৃতি সংগঠণের কল্যানে দীর্ঘদিন কাজ করে ইতিমধ্যে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন। স্বাচিপের সদস্যরা মহাসচিব হিসেবে তাকেই আশা করছেন।
এদিকে মহাসচিব প্রার্থী প্রফেসর ডা. এহসানুল কবির জগলুল বলেন, আমি বিএমএ’র দুই বার কোষাধাক্ষ্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলাম। বর্তমানে স্বাচিবের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। ছাত্র জীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আঁকড়ে ধরে রাজনীতি করে আসছি। শুধু চিকিৎসক উন্নয়ন নয়, স্বাস্থ্যখাতে সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য সাংগঠনিকভাবে কাজ করতে চাই। স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে কিভাবে মানুষের দৌড় গড়ায় নিয়ে যাওয়া যাই সেই চেষ্টায় করবো।
তিনি আরো বলেন, এদেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের জন্য চিকিৎসকের যে প্রধান ভূমিকা রয়েছে তা কতর্ব্য পরায়নতার মাধ্যমে পেশাগত দায়িত্বপালনে ভূমিকা রাখার জন্য আরো উৎসাহিত হবো। এছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাস্থ্য খাতের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন ও স্বাচিপের কর্মতপরতাকে আরো গতীশিল করার লক্ষে নিরলস কাজ করে যাবো ইনশাল্লাহ্।