বিডি মেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি কানাডিয়ান সরকার ২০১৬ সালে তিন লাখের বেশি অভিবাসী নেওয়ার কথা জানিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদনপত্র গ্রহণ শুরু করছে কানাডা সরকার। আবেদন করা যাবে বাংলাদেশ থেকেও। মোট ছয়টি ক্যাটাগরিতে আবেদন করা যাবে। পিএনপি, এক্সপ্রেস এন্ট্রি, এন্টারপ্রেনিওর ইত্যাদি।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় ধানমন্ডিতে অবস্থিত গেটওয়ে ইমিগ্রেশনের কানাডায় এক্সপ্রেস এন্ট্রির কাউন্সিলর গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে। এক্সপ্রেস এন্ট্রিতে আবেদন করার বিস্তারিত তথ্য রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন তিনি। কিবরিয়া জানান, এক্সপ্রেস এন্ট্রির জন্য আবেদনের ন্যুনতম যোগ্যতা স্নাতক ও কমপক্ষে এক বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ৩৫। যাদের চাকরির অভিজ্ঞতা বেশি ও বিবাহিত তারা কিছু ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। বিশেষ করে পয়েন্টের দিক দিয়ে তারা এগিয়ে থাকবেন।
আবেদন করার ক্ষেত্রে আইএএলটিএস(জিটি) জেনারেল টেস্ট ও ফ্রেন্স ভাষায় দক্ষতা থাকলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। এক্সপ্রেস এন্ট্রিতে আবেদন করার জন্য সর্বমোট ৬৭ পয়েন্ট থাকতে হবে। মূল আবেদন জমা দেওয়ার সময় প্রত্যেক আবেদনকারীর ভাষাগত যোগ্যতা যাচাই করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে আবেদন করতে আইইএলটিএসের প্রয়োজন নেই। তবে পরবর্তীতে প্রত্যেক আবেদনকারীর আইইএলটিএস পরীক্ষায় ভালো স্কোর থাকতে হয়। আইইএলটিএস-এ ন্যুনতম ব্যান্ডস্কোর থাকতে হবে ৬.০। কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যেতে পারে।
কিবরিয়া বলেন, আমরা কানাডায় অভিবাসনে আগ্রহীদের আবেদন করার যোগ্যতা ফ্রি এসেসমেন্ট করে থাকি। চারটি ধাপে আবেদনকারীদের ফাইল প্রসেস করে থাকি। প্রথম ধাপে আবেদন করার জন্য আইইএলটিএস প্রয়োজন নেই। আমরা প্রথমে আবেদনকারীর জন্য অনলাইনে প্রোফাইল তৈরি করি। যেখানে শিক্ষাগত ও অন্যান্য তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে। সে তথ্যগুলো এসেসমেন্ট করে টরোন্টোতে অবস্থিত ডব্লিওইএস(WES)। এসএসসি থেকে শুরু করে সব একাডেমিক কাগজপত্র সেখানে পাঠাতে হয়। সব কাগজপত্র মূল্যায়নের পর ইমেইলের মাধ্যমে কানাডা থেকে যোগাযোগ করা হয় আবেদনকারীর সঙ্গে। জব প্রোফাইল ও অন্যান্য বিষয়ের ওপর নির্ভর করে আইইএলটিএস কত প্রয়োজন। সেটা অবশ্য আবেদনকারীকে মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। প্রথম ধাপে এ কাজগুলোর মাধ্যমে আমরা ইমিগ্রেশন ফাইল ওপেন করি। আমরা আবেদনকারীদেরকে ফ্রি আইইএলটিএস ক্লাস করার সুযোগ দিই।
দ্বিতীয় ধাপের কাজগুলো সতর্কতার সাথে করতে হয়। এ সময়ের মধ্যে এক্সপ্রেস এন্ট্রি ফরম পূরণ করতে হয়। এক্সপ্রেস এন্ট্রি প্রোফাইল তৈরি করে সেখানে আবেদনকারীর যাবতীয় তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে আবেদনপত্রে উল্লেখিত পেশার সঙ্গে নিজের পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার তথ্য পূরণ করতে হয়। এ ধাপটি করা হয় অনলাইনে জব ব্যাংক প্রোফাইল তৈরি করার জন্য। বিষয়টি হচ্ছে বাংলাদেশে যেমন বিভিন্ন চাকরির ওয়েবসাইট রয়েছে তেমনি কানাডায় বিভিন্ন অনলাইন জব পোর্টালের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করা যায়। অনলাইনে নিজের পছন্দনীয় চাকরি খুঁজে পেতে অনলাইনে জব প্রোফাইল তৈরি করা হয়। তবে বাংলাদেশ থেকে এসব জবপোর্টালে আবেদন করে খুব বেশি ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায় না বলে জানালেন কিবরিয়া। আবেদন প্রক্রিয়ায় তথ্যগুলো আমরা সঠিকভাবে পূরণ করতে সহায়তা করি।
এ ধাপগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন অথরিটি ‘ইনভাইটেশন টু এপ্লাই’(ITA) পাঠায়। আইটিএ পাওয়ার পর প্রতিটি কাগজপত্র পাঠাতে হয় কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন সেন্টারের গাইডলাইন অনুসরণ করে। সফলভাবে এ ধাপটি অতিক্রম করতে পারলে আপনি একধাপ এগিয়ে যাবেন। এ সময় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হয়। এছাড়াও আইনগত বিভিন্ন বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ সেবা দিয়ে থাকি। এরপর বাকি থাকে মেডিকেল চেকআপ। এছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে থাকি।
মূল বিষয় হচ্ছে, কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন সেন্টার কখন কী করতে হবে তা ইমেইলের মাধ্যমে আবেদনকারীকে জানিয়ে দেয়। আমরা ফাইল প্রসেসিংয়ে সহযোগিতা করে থাকি যাতে নির্ভুলভাবে ফাইল প্রসেস করা যায়। পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ৮ মাস থেকে ১৬ মাসের প্রয়োজন হতে পারে।
আরো তথ্য পেতে ভিজিট করুন কানাডিয়ান সরকারি ওয়েবসাইটে : http://www.cic.gc.ca/english/