পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তার নিয়োগবিষয়ক আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শপথ পড়াবেন। এর মধ্য দিয়েই দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হতে যাচ্ছেন তিনি।
চলতি বছরের শেষ দিন অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বর অবসরে যাচ্ছেন দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। আগামী ৩১ ডিসেম্বর তার বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হলেও ওইদিন শুক্রবার হওয়ায় একদিন আগেই অবসরে যাচ্ছেন তিনি।
আবদুর গফুর মোল্লা ও নূরজাহান বেগম দম্পতির সন্তান হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ১৯৭২ সালে খোকসা জানিপুর পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। আইএসসি পাস করেন ১৯৭৪ সালে সাতক্ষীরার সরকারি পিসি কলেজ থেকে। এরপর বিএ পাস করেন সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে। আর এমএ পাস করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে। পরবর্তীতে ধানমন্ডি ‘ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাস করেন।
এরপর ১৯৮১ সালে ঢাকা জজ কোর্টে আইন পেশায় যোগ দেন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ১৯৮৩ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৮ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। ২০০৯ সালে হাইকোর্ট ডিভিশনের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৩ সালের ২৮ মার্চ আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। তার বড় ভাই বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী আপিল বিভাগের বিচারপতি থেকে অবসরে গিয়েছেন।
বর্তমানে আপিল বিভাগে পাঁচ বিচারকের মধ্যে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অবসরে গেলে বাকি থাকবেন বিচারপতি ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ননী ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সুপ্রিম কোর্ট সূত্র অনুযায়ী, বিচারপতি মুহাম্মদ ঈমান আলী ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর, বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ২০২৩ সালের ৩০ জুন এবং বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ২০২৬ সালের ১০ জানুয়ারি অবসরে যাবেন।
এদিকে, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রপতি কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচারকার্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তিতে গতিশীলতা আনার জন্য বিদায়ী প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন বাসসকে বলেন, ‘এটি ছিল রাষ্ট্রপতির সাথে বিদায়ী প্রধান বিচারপতির একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ।’
দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে বিচারপ্রার্থী জনগণের মহান আশ্রয়স্থল হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি হামিদ দেশের বিচার বিভাগের সার্বিক উন্নয়নে তার উদ্যোগের ও ভূয়সী প্রশংসা করেন।
প্রধান বিচারপতি তার দায়িত্ব পালনে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য রাষ্ট্রপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।