রাজধানীতে বাস চাপায় দুইজনের মর্মান্তিক মৃত্যু

খন্দকার জাফর আহমদ: রাজধানীতে পৃথক দুটি বাস দূর্ঘটনায় দুজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মগবাজার মোড়ে আজমেরী গ্লোরীর দুই বাসের পাল্টাপাল্টিতে চিপায় পড়ে মোঃ রাকিব (১৪) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পৌনে ৬টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাকিবকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী হারুন সাংবাদিকদের জানান, মগবাজার মোড় আজমেরী পরিবহনের একটি বাস ও অন্য একটি বাসের মাঝখানে পড়ে গুরুতর আহত হয় কিশোর রাকিব। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পৌনে ৬টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

গুলিস্তানে চলন্ত গ্রিন বাংলা বাস থেকে ফেলে দিয়ে ইরফান আহমেদ (৪৮) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বাসচালকের সহকারীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেছে নিহত ইরফান আহমেদের পরিবার। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে গুলিস্তানের জয়কালী মন্দিরের কাছে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করা হয়। পুরান ঢাকার নবাবপুরের একটি ইলেকট্রিকের দোকানে কাজ করতেন ইরফান। তিনি পরিবার নিয়ে ডেমরার শারুলিয়ার বড়ভাঙ্গা এলাকায় থাকতেন। ইরফানের বাবার নাম আলমগীর হোসেন। ইরফান এক কন্যাসন্তানের জনক।

পরিবার জানায়, ইরফান বৃহস্পতিবার সকালে ডেমরার শারুলিয়া এলাকা থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রীবাহী একটি বাসে ওঠেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্য, গ্রিন বাংলা নামের বাসটি গুলিস্তানের জয়কালী মন্দিরের কাছে পৌঁছালে ইরফানকে বাস থেকে সড়কে পড়ে যেতে দেখা যায়। পথচারীরা তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে কাছের সালাউদ্দিন হাসপাতালে নেন। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নেওয়া হয়। সেখানে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে ইরফানের স্ত্রী ইসমত আরা ও ভাই রায়হান আহমেদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। এ সময় রায়হান অভিযোগ করেন, তার ভাইয়ের সঙ্গে বাসচালকের সহকারীর কথা-কাটাকাটি হয় বলে তারা জানতে পারেছেন। এর জের ধরে চালকের সহকারী তার ভাইকে বাসের দরজা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করেন। পুলিশ বলছে, ইরফানের মাথার আঘাতের চিহ্ন আছে। তবে শরীরের অন্য কোথাও জখম বা আঘাতের চিহ্ন নেই। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে বাসের চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছেন।

ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরাফাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে তারা শুনেছেন, বাসচালকের সহকারীর সঙ্গে ইরফানের কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। তার মাথার পেছন দিকে আঘাতের চিহ্ন আছে। তদন্ত করার পর পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলা যাবে।

উক্ত দুটি দুর্ঘটনার ব্যাপারে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোঃ বাচ্চু মিয়া বলেন, ওয়ারি থেকে গুরুতর আহত ইরফানকে ঢামেক জরুরি বিভাগে আনার পর সে মারা যান। ইরফান ও হকার শিশু রাকিবের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts