বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) এর যৌথ উদ্যোগে আগামী ১১-১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার (সিদ্ধেশ্বরী) স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং ভার্চুয়াল উভয় পদ্ধতিতে “জ্বালানী, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়ন” বিষয়ক বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এই সম্মেলনের সহ-আয়োজক এবং সহযোগী আয়োজক হিসেবে দেশের প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনসমূহ ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছে। সম্মেলনে দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকবৃন্দ তাদের মূল্যবান প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।
উক্ত সম্মেলনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, আয়োজন, ব্যবস্থাপনা, আলোচ্য বিষয়, উপস্থাপনা প্রভৃতি বিষয়ে দেশবাসী ও গণমাধ্যমকে অবহিত করার লক্ষ্যে বাপা ও বেন এর পক্ষ থেকে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টায়, জাতীয় প্রেস ক্লাব-এর তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে (সাবেক ভিআইপি লাউঞ্জে) সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব এবং সম্মেলনের বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাপা’র সহ-সভাপতি ও বেনের প্রতিষ্ঠাতা ড. নজরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির টেকনিক্যাল উপ-কমিটির সদস্য সচিব এম এস সিদ্দিকী, মিডিয়া ও পাবলিসিটি বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বেন অষ্ট্রেলিয়া চেপ্টারের সমন্বয়ক কামরুল আহসান খান, বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক আলনগীর কবির এবং বাপা নির্বাহী সদস্য ইবনুল সাঈদ রানা।
ড. নজরুল ইসলাম বলেন, জ্বালানী দেশের অর্থনীতির একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। দেশের উন্নয়নের জন্য এই খাতের বিকাশ অপরিহার্য। কিন্তু কী ধরণের জ্বালানী কতটুকু আহরিত ও ব্যবহৃত হবে তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তনের আলোকে এই গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী উষ্ণতাবৃদ্ধিকারক গ্যাস (GHG) উদগীরণের একটি বড় উৎস হলো জ্বালানীর ব্যবহার। বিভিন্ন ধরণের জ্বালানী এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের ভূমিকা পালন করে। এককথায় যথেষ্ট সুচিন্তিতভাবে দেশের জ্বালানী কৌশল নির্ধারিত হওয়া প্রয়োজন, নতুবা তা স্থায়িত্বশীল উন্নয়নকে বিঘ্নিত করতে পারে।
বাংলাদেশে বিগত সময়কালে জ্বালানীখাতের দ্রুত বিকাশ ঘটেছে। দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে ধরণের তীব্র বিদ্যুৎ সংকট বাংলাদেশে আগে ছিল এখন তা নেই। বিদ্যুতের আওতাভুক্ত দেশের জনসংখ্যার অনুপাত অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এক হিসেবে বলা যেতে পারে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং বিদ্যুতায়নের ক্ষেত্রে সংকটপর্ব অতিক্রম করে একটি নতুন পর্বে উপনীত হয়েছে। তবে এই নতুন পর্বে দেখা দিয়েছে নতুন ধরণের সমস্যা এবং প্রশ্নের। এসব প্রশ্নের একটি সামগ্রীক আলোচনাই বাপা-বেন এবং দেশের বিভিন্ন পরিবেশ-স্বপক্ষ সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানের সহযোগে আয়োজিত এবারের বার্ষিক সম্মেলনের লক্ষ্য। করোনা মহামারীর কারণে এই সম্মেলন আগামি ১১-১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ তারিখে হাইব্রিড মুডে: (অন-লাইন ও অফ-লাইন) অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মেলনে নিম্মোক্ত ১২টি বিষয়ের উপর প্রবন্ধ আহ্বান করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর উপরে ৫০টির বেশী প্রবন্ধ সম্মেলনে উপস্থাপিত হবে বলে জানান তিনি।
১) জ্বালানী-মিশ্রণ
২) জ্বালানী সরবরাহের সাথে চাহিদার সমন্বয়
৩) জ্বালানীর বিকাশ এবং সরবরাহের ক্ষেত্রে দেশীয় বনাম বিদেশী সূত্র এবং সংস্থার ভূমিকা
৪) জ্বালানীর বিকাশ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারী বনাম বেসরকারী খাতের ভূমিকা
৫) বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের আকার
৬) বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থান
৭) জ্বালানী সরবরাহের পন্থা
৮) জ্বালানী উন্নয়ন ধারার আর্থিক স্থায়িত্বশীলতা
৯) জ্বালানী উন্নয়ন ধারার পরিবেশগত স্থায়িত্বশীলতা
১০) জ্বালানী উন্নয়ন ধারার ঝুঁকিমাত্রা
১১) সনাতনী জ্বালানীর ভবিষ্যৎ
১২) জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ, পানি-খাদ্য-জলবায়ূ এবং স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের অন্যান্য ইস্যু
কামরুল আহসান খান বলেন, দেশের পরিবেশ রক্ষায় সবার এগিয়ে আশা প্রয়োজন। তাই তিনি বাপা-বেন এর সম্মেলনের সবাইকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দেশের জ্বালানী খাতকে প্রাধান্য দিতে গিয়েই মূলত এ ১১টি বিষয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। ভুল ও দুর্বল নীতির কারনেই দেশের পরিবেশ ধংস হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। তাই তিনি এই ভুল ও দুর্বল নীতি দূর করে বিকল্প উপায় অবলম্বন করে দেশের পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এম এস সিদ্দিকী বলেন, দেশের সামগ্রীক পরিবেশ রক্ষায় করনীয় বিষয়ে আমাদের এ সম্মেলন আয়োজন। তিনি দেশের পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে ঐক্য থাকার আহ্বান জানান।